জার্মানির তিনটি প্রতিবেশি দেশ অস্ট্রিয়া এবং চেক প্রজাতন্ত্রের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্কও৷
বিজ্ঞাপন
প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ১৫ এপ্রিল থেকে ডেনমার্কে কিন্ডারগার্টেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন৷ এতে যেসব মা-বাবা ‘হোম অফিস' করছেন তারা নিশ্চিন্তে বাসায় অফিসের কাজ করতে পারবেন৷ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মিডল ও হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা আবার ক্লাস শুরু করতে পারেবে৷
কোপেনহেগেন সরকার প্রধান বলেছেন, এই পদক্ষেপটি হচ্ছে শুরুর দিকের প্রাথমিক সতর্কতা এবং আগামী কয়েক মাস নানা বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য ডেনিসদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে৷
তবে ডেনমার্কের রেস্তোঁরা, বার, চুল কাটার সেলুন এবং শপিং সেন্টার আপাতত বন্ধ থাকবে৷ দশ জনের বেশি মানুষের সমাবেশও আপাতত নিষিদ্ধ৷ জার্মানি যাওয়ার সীমান্ত বন্ধ থাকবে কমপক্ষে ১০ মে পর্যন্ত৷
করোনা: এসব গুজবে কান দেবেন না
পুরো বিশ্বে নভেল করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে গুজবের শেষ নেই৷ বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনই কয়েকটি গুজবের জবাব দিয়েছে৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
১. ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে করোনা ছড়ায়?
রেডিও তরঙ্গ বা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোন ভাইরাস ছড়ায় না৷ এমন অনেক দেশেই করোনা’র সংক্রমণ হয়েছে, যাদের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
২. রোদের তাপ কি করোনা প্রতিরোধ করে?
তাপমাত্রা যত বেশিই হোক না কেনো, যেকোন তাপমাত্রায় আপনি সংক্রমিত হতে পারেন৷ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা আছে এমন অনেক দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. van den Bergh
৩. একবার সংক্রমণ, সারাজীবনের সংক্রমণ?
করোনা আক্রান্ত যেকোন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন৷ আপনার লক্ষণ চিনতে হবে এবং সেই বুঝে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে৷ আপনার যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে ডাক্তারকে ফোন দিন৷
ছবি: AFP/B.R. Smith
৪. ১০ সেকেন্ডের নাই ভরসা
অনেকে মনে করেন কোনো ধরনের কষ্ট বা কাশি ছাড়া ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস আটকে রাখতে পারলে তার করোনা নেই৷ এই ধারণা ভুল৷ করোনা ভাইরাসের খুব সাধারণ একটি লক্ষণ হল শুকনো কাশি, ক্লান্তি এবং জ্বর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে ভয়াবহ ধরনের নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়৷ আপনার উচিত এসব লক্ষণ থাকলে আগে পরীক্ষা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Campodonico
৫. মদে মুক্তি?
বেশি বেশি মদ বা অ্যালকোহল খেলে করোনা প্রতিরোধ হয় না বরং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J.-P. Muller
৬. তীব্র শীতে করোনা মরে?
এটা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই যে তীব্র শীত বা বরফে করোনা ভাইরাস টিকে থাকতে পারে না৷ কারণ বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেনো আপনার শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
ছবি: picture-alliance/AA/A. Ozdil
৭. হ্যান্ড ড্রায়ার করোনা মারে?
না৷ হাত শুকানোর যে মেশিন, করোনা ভাইরাসের উপর তার কোন প্রভাব নেই৷ আপনার যা করণীয় তা হল: বার বার সবান পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া৷ এরপর টিসু, তোয়ালা বা গরম ড্রায়ার দিয়ে হাত শুকাতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/NIAID-RML
৮. নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন কি করোনায় কার্যকর?
না৷ নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন যেমন: নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি ভ্যাকসিন করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়৷ এই ভাইরাস একেবারে নতুন এবং ভিন্ন ধরনের, যার জন্য চাই আলাদা ভ্যাকসিন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করছেন৷
ছবি: Reuters/B. Guan
৯. নাকের ড্রপ কি সংক্রমণ থেকে বাঁচায়?
না৷ এমন কোন তথ্য-প্রমাণ এখনো মেলেনি যে নিয়মিত স্যালাইন পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়৷
ছবি: Imago Images/Panthermedia/A. Guillem
১০. করোনা প্রতিরোধে বিশেষ কোন ওষুধ?
করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ নেই৷ কেবল লক্ষণ অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
10 ছবি1 | 10
সোমবার সকালে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কুর্ৎস রাজধানী ভিয়েনায় ঘোষণা করেন ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর শর্ত মেনে ছোট ছোট দোকান এবং গার্ডেন সেন্টারগুলি আবার খুলতে পারবে৷ পয়লা মে থেকে শপিং সেন্টার এবং পার্লারগুলো খোলা রাখার অনুমতি পেলেও হোটেল, রেস্তোরাঁ খুলবে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে৷ স্কুল বন্ধ থাকবে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এবং কোনো ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ আগামী জুন মাস পর্যন্ত৷
এদিকে প্রাগের মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে চেক প্রজাতন্ত্রও নিষিদ্ধ ঘোষিত করোনা ব্যবস্থা কিছুটা শিথিল করবে৷ টেনিস এবং গল্ফ খেলা আবার অনুমতি দেওয়া হবে৷ এছাড়াও বিভিন্ন হবি স্টোর এবং সাইকেল মেরামতের দোকান খোলা রাখা যাবে৷
চেক সরকার তার নাগরিকদেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ১৪ ই এপ্রিল থেকে ব্যবসায়িক ভ্রমন, চিকিত্সা এবং পারিবারিক দেখাসাক্ষাতের মতো জরুরি ভ্রমণে তারা আবার দেশের বাইরে যেতে পারবে৷ শিল্পমন্ত্রী কারেল হাভলিচেক একথা বলেন৷ তিনি আরো বলেন, এসব ভ্রমণ থেকে ফিরে আসার পরে তাদের ১৪ দিন কোয়ারান্টিন বাধ্যতামূলক ৷