ইউরোপের দুই শীর্ষ পদে এই প্রথম নারী?
৩ জুলাই ২০১৯প্রায় ৩ দিন ধরে দরকষাকষির পর অবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫ শীর্ষ পদের জন্য প্রার্থীতালিকা সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছলেন সদস্য দেশগুলির শীর্ষ নেতারা৷ তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থেকে যাচ্ছে৷ মনোনীত প্রার্থীরা শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পাবেন কিনা, সে বিষয়ও সংশয় দূর হচ্ছে না৷ অর্থাৎ একদিকে ইইউ দেশগুলির জাতীয় সরকার, অন্যদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে গোটা প্রক্রিয়া আবার জটিল হয়ে পড়বে৷ বুধবারই পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে এই সংঘাতের আঁচ পাওয়া যেতে পারে৷
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শুরুতেই প্রধান রাজনৈতিক শিবিরগুলি তাদের শীর্ষ প্রার্থীদের নাম স্থির করেছিল৷ কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল জানার পর দেখা গেল, কোনো প্রার্থীই শীর্ষ পদগুলির জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন পাচ্ছেন না৷ গত রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অনেক আলাপ আলোচনার পর একেবারে নতুন কিছু নাম উঠে এসেছে৷ ফলে ইউরোপে গণতন্ত্রের ক্ষতি হলো বলে সমালোচনার ঝড় উঠছে৷ ইইউ শীর্ষ নেতারা সম্মিলিতভাবে কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য জার্মানির বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন-কে মনোনীত করেছেন৷ শুধু জার্মানি ভোটদানে বিরত ছিল৷ কারণ জার্মানির মহাজোট সরকারের শরিক এসপিডি দল এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে৷ উল্লেখ্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ফন ডেয়ার লাইয়েন একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্য জার্মানিতে প্রবল চাপের মুখে রয়েছেন৷ এক সংসদীয় কমিটি তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে৷
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান পদে ফ্রান্সের ক্রিস্টিন লাগার্দ-এর নাম মনোনীত করা হয়েছে৷ লাগার্দ বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ-এর প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন৷ ইউরোপের দুই শীর্ষ পদের জন্য দুই নারীর নাম উঠে আসায় নীতিগতভাবে একাধিক মহল সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে৷ এর আগে এই দুই পদে কোনো নারীকে দেখা যায়নি৷
প্রার্থী তালিকায় আরও দুই ব্যক্তির নাম স্থির করেছেন ইইউ নেতারা৷ বেলজিয়ামের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শার্ল মিশেল ইইউ সরকারগুলির পরিষদের প্রেসিডেন্ট পদের মনোনয়ন পেয়েছেন৷ স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেপ বরেল ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান হতে পারেন৷
শুধু ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রধানের পদ নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে৷ বুধবার সংসদ সদস্যরা আড়াই বছরের জন্য এই পদে ইটালির ডাভিড সাসোলি অথবা জার্মানির স্কা কেলার-কে নির্বাচিত করতে পারেন৷
ইইউ-র সদস্য দেশের সরকারগুলির পরিষদের বিদায়ী প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক এই প্রার্থী তালিকাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শীর্ষ নেতারা নারী ও পুরুষ প্রার্থীদের মধ্যে আদর্শ ভারসাম্য বজায় রাখতে পেরেছেন৷ বড় ও ছোট দেশগুলির মধ্যেও ক্ষমতা বণ্টনের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে৷
ইউরোপের শীর্ষ পদে মনোনয়ন নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে জটিল বিভাজন গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে৷ ইইউ কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার বলেন, রাজনৈতিক শিবিরগুলির শীর্ষ প্রার্থী স্থির করার বর্তমান প্রণালী কার্যত ভেঙে পড়েছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে গোটা প্রক্রিয়ার সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)