1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শরণার্থীদের বাধা

ক্যার্স্টেন ক্নিপ / এসবি২১ অক্টোবর ২০১৩

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় অশান্ত পরিস্থিতির কারণে সিরিয়ার মতো সংকটপূর্ণ এলাকার শরণার্থীরা বিপজ্জনক পথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করে চলেছে৷ ঝুঁকিপূর্ণ এই প্রচেষ্টার পরিণতি অনেক সময় ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে৷

ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS

সমুদ্রের ঢেউয়ের ধাক্কায় নৌকার শেষরক্ষা আর হলো না৷ ধীরে ধীরে ডুবেই গেল৷ অনেকেরই মৃত্যু হলো, যাদের মধ্যে সিরিয়ার এক নার্সও ছিলেন৷ স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি ইউরোপে সুদিনের স্বপ্ন দেখেছিলেন৷ লাশ পাওয়া গিয়েছিল৷ শোকগ্রস্ত স্বামী স্ত্রীর মৃতদেহ থেকে যকৃৎ ও কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নিলেন৷ ইটালির তিন রোগী অঙ্গ গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করে ছিলেন, তাঁরাই পেলেন নতুন জীবন৷

সিরিয়ার যে সব শরণার্থী নৌকায় করে ইউরোপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলো, তাদের পরিণতি নিবন্ধিত করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী দপ্তর ইউএনএইচসিআর৷ তার মধ্যেই এই মর্মস্পর্শী ঘটনাটির উল্লেখ রয়েছে৷ গত ৩ মাসে শরণার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেছে৷ বেশিরভাগ মানুষ স্থলপথেই সিরিয়া ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও কিছু মানুষ সমুদ্রপথেই দেশ ছেড়েছে৷ ইউএনএইচসিআর-এর মুখপাত্র বাবর বালোচ বলেন, অনেক দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ রাখায় এই প্রবণতা আরও বেড়েছে৷ সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলিতে প্রায় ২০ লক্ষ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে৷ ফলে নতুন করে আরও মানুষকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষমতা ও সদিচ্ছা নেই তাদের৷

ছবি: picture-alliance/dpa

এই অবস্থায় বে-আইনি উপায়ে সমুদ্রপথে পালানোর চেষ্টা করছেন সিরিয়ার অনেক মানুষ৷ প্রতিবেশী দেশগুলির পাশাপাশি ইউরোপও তাদের গন্তব্য হয়ে উঠছে৷ কিছু মানুষ অবশ্য স্থলপথে তুরস্ক হয়ে ইইউ সদস্য দেশ বুলগেরিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছে৷ তবে তুরস্কে প্রবেশ না করতে পারলে নৌকাই ভরসা৷ ইউএনএইচসিআর-এর সূত্র অনুযায়ী শুধু আগস্টের শুরু থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকা থেকে ৩০টি নৌকা সফলভাবে ইটালির দক্ষিণে পৌঁছেছে৷ বেশিরভাগ নৌকাই মিশর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল৷ কিছু নৌকা পাড়ি দিয়েছে লিবিয়া থেকে৷ এভাবে প্রায় ৩,৩০০ সিরীয় শরণার্থী ইউরোপে পৌঁছেছে৷ তাদের মধ্যে ২৩০ শিশুও ছিল, যাদের সঙ্গে বাবা-মা ছিল না৷

ইউরোপে পৌঁছানোর আগেই সিরীয় শরণার্থীদের দুর্দশা কম হয় না৷ মিশরে তাদের অবস্থার ক্রমশ আরও অবনতি ঘটছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর৷ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মহম্মদ মুরসি-র পতনের সময় পর্যন্ত সিরীয় শরণার্থীদের স্বাগত জানানো হয়েছে৷ কিন্তু তার পর থেকে কর্তৃপক্ষ কড়া মনোভাব দেখাতে শুরু করেছে৷ বিশেষ ভিসা, কড়া নিরাপত্তা পরীক্ষা ইত্যাদি চালু করা হয়েছে তাদের জন্য৷ অনেক শরণার্থীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে৷

মুয়ম্মর গদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ার পরিস্থিতিও অশান্ত রয়েছে৷ শরণার্থীদের সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা আগেও ছিল না, ক্ষমতাকেন্দ্রে পালাবদলের পরেও নেই৷ নেই কোনো শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ৷ বিদেশি-বিদ্বেষের মাত্রাও কম নয়৷

এমন অরাজকতার সুযোগ নিয়ে মানব-পাচারকারীরা শরণার্থীদের প্রতি চূড়ান্ত অবহেলা দেখিয়ে চলেছে৷ কোনোরকমে তাদের নৌকায় তুলে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে৷ সমুদ্রে পাড়ি দেবার জন্য নৌকা যথেষ্ট মজবুত কি না, তাও দেখা হচ্ছে না৷ পাচারকারীদের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দেবার পর শরণার্থীরাও অসহায় হয়ে পড়ে৷ বিপদ আছে জেনেও বাধ্য হয়ে তারা অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ