ইউরোপে বাড়ছে বায়ু দূষণ
১৭ অক্টোবর ২০১৩মঙ্গলবার ইউরোপের পরিবেশ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, গত কয়েক দশকে ইউরোপে কার্বন নিঃসরণের হার কমেছে, কিন্তু বেড়েছে ডিজেল চালিত গাড়ির সংখ্যা৷ সেইসাথে বাড়িতে গ্যাসের বিকল্প হিসেবে কাঠকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতাও বেড়ে গেছে৷ ফলত কঠিন হয়ে পড়েছে দূষণ রোধ করা৷
এ কারণে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাতাসে ‘পার্টিকুলেট ম্যাটার' বা পিএম নামে পরিচিত এক ধরণের অণুবীক্ষণিক কণা কমানোর প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷
ফ্রান্স, ইটালি, পোল্যান্ডসহ ইউরোপের ২২টি দেশ ২০১১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া পিএম সীমারেখা অতিক্রম করে৷ ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি বা ইইএ-র দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া ‘গাইডলাইন' মানেনি কেউ৷
গত দশকে জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে ইউরোপিয়ান বিধিনিষেধের কারণে সালফার ডিঅক্সাইডের নিঃসরণ ৫০ ভাগ কমে গিয়েছিল৷ এই সালফার ডিঅক্সাইডের কারণে অ্যাসিড বৃষ্টি হয়৷
কিন্তু এরপরও বাতাসে ক্ষতিকারক পদার্থ এবং ওজনের পরিমাণ খুব সামান্যই কমেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তাদের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণের প্রতি নজর না দিলে তা আরো ক্ষতিকর হবে৷ তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে চাপ দিচ্ছে সংস্থাটি৷
ইইএ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, শহরাঞ্চলে পিএম দূষণের কারণে মানুষের ফুসফুস থেকে দূষিত বায়ু সরাসরি রক্তে প্রবেশ করছে, যা ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে৷
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু বাতাসে পিএম-এর পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখতে সমর্থ হয়েছে৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার চেয়েও সেখানে বাতাসে পিএম-এর পরিমাণ কম৷
বাতাসে পিএম-এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগর সংলগ্ন দেশ ইটালি, ফ্রান্স ও স্পেনের শস্য উৎপাদনে ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জমির ফসল৷ ওজন দূষণের কারণে ২০০০ সালে ইউরোপে ২ কোটি ৭০ লাখ টন ফসল নষ্ট হয়েছে৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ইউরোপের রাস্তায় ডিজেল চালিত যান বেড়ে যাওয়ার ফলে বাতাসে নাইট্রোজেন ডিঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে৷
গবেষকরা বলছেন, ডিজেল চালিত গাড়ি থেকে নিঃসৃত নাইট্রোজেন ডিঅক্সাইড মৌমাছিকে ফুলের গন্ধ চেনাতে বাধা দিচ্ছে, যা মৌ চাষে বিড়াট প্রভাব ফেলবে৷ এমনকি অন্যান্য খাদ্য উৎপাদনও এ কারণে ব্যাহত হতে পারে৷
এপিবি/ডিজি (রয়টার্স)