1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপে দক্ষিণপন্থিদের বাজার

উল্ফ ওয়াইল্ড/এসি২৯ এপ্রিল ২০১৬

ইউরোপে দক্ষিণপন্থি রাজনৈতিক দলগুলি বেশ কিছুদিন ধরে সক্রিয়৷ একাধিক দেশে তারা সরকারে অন্তর্ভুক্ত, কয়েকটি দেশে তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পর্যন্ত আছে৷ জার্মানি ছাড়া ছবিটা দাঁড়ায় এইরকম৷

হেলমুট কোল
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach

হাঙ্গেরির ফিদেস

ভিক্টর ওর্বান-এর নেতৃত্বে এই জাতীয়তাবাদি-রক্ষণশীল দলটি নব্বই-এর দশকের শেষ থেকে হাঙ্গেরির রাজনীতিতে তাদের ছাপ রেখে চলেছে৷ ২০১০ সালের নির্বাচনে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, যার বলে ওর্বান রাষ্ট্রকে নতুন চেহারা দিচ্ছেন৷ উদ্বাস্তুদের তথাকথিত বলকান রুটে প্রথম কাঁটাতারের বেড়া লাগান এই ওর্বান৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সমালোচনা করলেও, দেশবাসী ও ভোটারদের কাছে ৫২ বছর বয়সি নেতার জনপ্রিয়তা বেড়েছে বৈ কমেনি৷

পোল্যান্ডে পিস

প্রাভো ই প্রাভিয়েদলিভো বা পিআইস বা পিস পার্টি ওরফে আইন ও ন্যায় দল প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে৷ প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী লেচ কাচিনস্কি ও তাঁর যমজ ভাই ইয়ারোসুয়াভ কাচিনস্কি৷ সেযাবৎ পিস দল ক্রমেই আরো বেশি রক্ষণশীল, আরো বেশি দক্ষিণপন্থি হয়ে উঠেছে৷ ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের নির্বাচনে পিস দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়৷ পিস পার্টির ইইউ সম্পর্কে দ্বিধা আছে৷ তাদের কাছে উদ্বাস্তুদের চেয়ে পোল্যান্ডের মঙ্গলই বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷

ফ্রান্সের ফ্রঁ নাসিনাল (এফএন)

জঁ-মারি ল্য পেন ১৯৭২ সালে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ তাঁর কন্যা মারিন ল্য পেন-এর নেতৃত্বে ফ্রঁ নাসিনাল বা জাতীয় ফ্রন্ট আজ ফরাসি রাজনীতিতে একটি রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে৷ ২০১৪ সালের ইউরোপীয় নির্বাচনে এফএন দল ২৬ শতাংশ ভোট সংগ্রহ করে; ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে সেটাই বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ শতাংশে, যা কিনা রিপাবলিকান ও সমাজতন্ত্রীদের চেয়ে বেশি৷

মারিন ল্য পেন-এর নেতৃত্বে ফ্রঁ নাসিনাল ফরাসি রাজনীতিতে বড় শক্তি হয়ে উঠেছেছবি: Reuters/Y. Herman

ফ্রঁ নাসিনাল বহুদিন ধরেই – তাদের ভাষায় – ফ্রান্সের ইসলামীকরণের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে আসছে; যে সব অভিবাসী আইন ভঙ্গ করছে,তাদের জন্য আরো কড়া শাস্তি চায় এফএন৷ এফএন দল ফ্রান্সকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রভাবমুক্ত করতে চায় ও দেশের শিল্পকারখানা ও কৃষিকে সুরক্ষিত করতে চায়৷

নেদারল্যান্ডসের পার্টাই ফোর ডে ফ্রাইহাইট (পিভিভি)

ফ্রিডম পার্টি বা স্বাধীনতা দল দশ বছরের বেশি সময় ধরে ওলন্দাজ সংসদে উপস্থিত; আসনসংখ্যার বিচারে পঞ্চম৷ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গের্ট উইল্ডার্স৷ সর্বাধুনিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, পিভিভি প্রায় ৩০ শতাংশ ভোট পেতে পারে, যা কিনা তারা ২০১২ সালে যা পেয়েছিল, তার প্রায় তিনগুণ৷ ৫২ বছর বয়সি উইল্ডার্সকে ইউরোপের দক্ষিণপন্থি আন্দোলনের মুখাবয়ব বলে গণ্য করা হয়ে থাকে৷ পিভিভি-র প্রোগ্রাম হলো নেদারল্যান্ডস যাতে ইইউ ছাড়ে, তার জন্য প্রচারণা; দ্বিতীয়ত, ইসলাম-বিরোধী মনোভাব৷ উইল্ডার্স পবিত্র কোরানকে একটি ‘‘ফ্যাসিবাদি পুস্তক'' বলে অভিহিত করেছেন৷ ২০১৫ সালের প্যারিস সন্ত্রাসের পর উইল্ডার্স দাবি করেন, যারা ওলন্দাজ নয়, তাদের সকলকে নেদারল্যান্ডস থেকে বহিষ্কার করতে হবে৷

অস্ট্রিয়ার ফ্রাইহাইটলিশে পার্টাই ওয়েস্টাররাইখস (এফপিএ)

অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্বে এবার যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন, তিনি হলেন এই স্বাধীনতা দলের নর্বার্ট হোফার, বয়স ৪৫৷ রান-অফে তিনিই জিতবেন, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সাম্প্রতিক জরিপে অস্ট্রিয়ান ফ্রিডম পার্টি বার বার সামাজিক গণতন্ত্রী ও রক্ষণশীলদের পিছনে ফেলে দিয়েছে৷ এমনকি অস্ট্রিয়ার বহু নাগরিক মনে করেন, বর্তমান চ্যান্সেলর ও সামাজিক গণতন্ত্রী রাজনীতিক ভ্যার্নার ফাইনমান-এর চেয়ে স্বাধীনতা দলের প্রধান হাইনৎস-ক্রিস্টিয়ান স্ট্রাখে-ই বেশি ভালো চ্যান্সেলর হতেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউরোর সমালোচনা, সেই সঙ্গে ইসলাম-বিরোধী ও অভিবাসী-বিরোধী মনোভাব স্ট্রাখেকে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে৷

গির্ট ভিল্ডার্সছবি: picture-alliance/dpa/Vincent Isore/IP3

ডেনমার্কের ডান্সক ফোল্কেপার্টি (ডিএফ)

২০০১ সালেই ডেনিশ পিপলস পার্টি ছিল কোপেনহাগেন সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দল৷ তারা সংখ্যালঘিষ্ঠ দক্ষিণপন্থি-উদারপন্থি সরকারে যোগ না দিলেও, বাইরে থেকে সমর্থন করে এসেছে৷ ২০১৫ সালের জুন মাসের সংসদীয় নির্বাচনে ডিএফ দল পায় ২১ শতাংশের বেশি ভোট, ভেন্সট্রে সংখ্যালঘিষ্ঠ সরকারকে পিছনে ফেলে৷ ডিএফ দল ভোট জেতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি তুলে৷

যুক্তরাজ্যের ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি (ইউকিপ)

নাইজেল ফারাজ-এ স্বাধীনতা দল ২০১৫ সালের মে মাসের সংসদীয় নির্বাচনে ১৩ শতাংশ ভোট সংগ্রহ করে, যদিও ব্রিটেনের কনস্টিটিউয়েন্সি বা ভোটার এলাকা ভিত্তিক নির্বাচনি পদ্ধতির কারণে ইউকিপ পার্লামেন্টে একটির বেশি আসন পায়নি৷ অথচ ভোটের অনুপাতে তারা দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি৷ বর্তমানেও তাদের ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে নানা জরিপে৷

১৯৯৩ সালে দলপ্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ইউকিপের একটি মূল লক্ষ্য ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিত্যাগ৷ এছাড়া ইউকিপ অভিবাসনের ক্ষেত্রে আরো কড়া নিয়ন্ত্রণ চায়৷

ইটালির লেগা নর্ড (এলএন)

ইটালির নর্দার্ন লিগ আশির দশক থেকেই আছে৷ তারা একাধিকবার রোম সরকারের অংশীদার হয়েছে৷ একটি দুর্নীতি কেলেঙ্কারি ও দলগত কোঁদলের পর লেগা নর্ড যখন ২০১২ সালে আবার নির্বাচনে ফেরে, তখন তারা কোনোক্রমে ন্যূনতম চার শতাংশ ভোটের বেড়া পার হতে সমর্থ হয়৷ তাদের একটি লক্ষ্য হলো ইটালির সমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চলকে দরিদ্র দক্ষিণাঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করা৷

গ্রিসের ক্রিসি আভজি বা গোল্ডেন ডন

চরম দক্ষিণপন্থি সোনালি সকাল দল সাম্প্রতিক নির্বাচনে সাত শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে পৌঁছেছে৷ ২০০৯ সালের আর্থিক সংকটের আগে গোল্ডেন ডন-এর বিশেষ গুরুত্ব ছিল না৷ পরে সরকারের কড়া সাশ্রয় প্রকল্প আর ব্যাপক বেকারত্ব গোল্ডেন ডন-এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে৷ তার সঙ্গে যোগ হয়েছে উদ্বাস্তুদের বিপুল সংখ্যায় গ্রিসে আগমন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ