ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার ৩১৫ বিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন৷ ইউরোপের শীর্ষ নেতারা সেটা অনুমোদন করতে পারেন৷ বৃহস্পতিবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে৷
বিজ্ঞাপন
ইউরোপকে প্রবৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়া, নতুন নতুন চাকরি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে৷ আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে৷ চলবে তিন বছর পর্যন্ত৷
পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে মুদ্রাস্ফীতির হারও বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে৷ বর্তমানে এই হার অনেক কম হওয়ায় আশংকায় রয়েছেন ইউরোজোনের কর্মকর্তারা৷
অবরোধে অবরুদ্ধ অর্থনীতি, স্থবির জনজীবন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মনে করে, উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কোনোভাবেই ৫ থেকে সাড়ে ৫ ভাগের বেশি হবে না – বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য যা হবে একটি বড় ধাক্কা৷
ছবি: DW/M.Mamun
অনিশ্চিত অপেক্ষা
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে গেছেন এই মহিলা যাত্রী৷ অবরোধের কারণে ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয় ঘটায় কখন যে ট্রেন আসবে তার কোনো ঠিক নেই৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
বিপর্যস্ত অর্থনীতি
অবরোধের কারণে সড়ক ও নৌপথের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে রেল যোগাযোগ৷ ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনীতিবিদদের অনেকে মনে করছেন বাংলাদেশের অর্থনীতি দীর্ঘকালীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে৷ তাই সহিংসতা বন্ধের দাবিতে ঢাকায় সম্প্রতি সাদা পতাকা মিছিল করেছেন সর্বস্তরের ব্যবসায়ী৷
ছবি: DW/M.Mamun
নীরব বাস টার্মিনাল
মহাখালী বাস টার্মিনালে থেমে আছে দূরপাল্লার বাস৷ বিরোধী জোটের চতুর্থ দফায় দেশব্যাপী টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে বাসগুলো টার্মিনাল ছেড়ে যেতে পারেনি৷ এতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি তো হয়েছেই, ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতির হিসেব নেই৷
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
চারদিন ধরে কাজ নেই
আশি বছর বয়সি শুকুর আলীর উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন এই ঠেলাগাড়ি৷ গত চারদিন ধরে গাবতলীতে কোনো পণ্য না আসায় অলস বসে আছেন তিনি৷ এই কদিনে একটি পয়সাও হাতে না আসায় কিভাবে চলবে, তাই ভাবছেন এই বৃদ্ধ৷ আর ভাবছেন, নিজের প্রিয় দেশ আজ কোন পথে?
ছবি: DW/M.Mamun
ভোগান্তির শেষ কবে?
ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালে নিয়মিত জুতার পসরা সাজিয়ে বসেন শুভ৷ অন্য সময় টার্মিনালে বহু মানুষের আনাগোনা থাকায় ব্যবসা মন্দ চলে না৷ তবে অবরোধের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বন্ধ তার বিক্রিও৷ শুভ রাজনীতি বোঝে না, ওর মনে শুধু প্রশ্ন, ওদের মতো খেটে খাওয়া মানুষের এই ভোগান্তির শেষ কবে?
ছবি: DW/Mustafiz Mamun
মহিলা শ্রমিকদের কি হবে?
অবরোধের কারণে পরিবহণ সংকট ও সহিংসতার ভয়ে এই পোশাক শ্রমিকরা কাজে যাচ্ছেন পায়ে হেঁটে৷ না গেলে চাকরির ভয় , তাছাড়া সংসার চলবে কি করে,আছে সেই চিন্তাও? ছবিটি ঢাকার কল্যাণপুরের৷ টানা অবরোধের কারণে পোশাক খাতে গড়ে প্রতিদিন ২৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা৷
ছবি: DW/M.Mamun
অলস সময়
অবরোধের কারণে ট্রাক শ্রমিকদের বেশিরভাগ সময় কাটে বসে থেকে৷ ঢাকার গাবতলীতে কাজের অপেক্ষায় আছেন এই শ্রমিকরা৷ দেশের রাজনীতিকরা কি চায় সেটা তারা জানতে চান না৷ তবে তাদের চাহিদা খুব বেশি নয় – শুধু পেট ভরে খাওয়া, সন্তানকে স্কুলে পাঠানো আর নিশ্চিন্তে ঘুমানো৷
ছবি: DW/M.Mamun
আবারো শূন্য হাতে?
অবরোধের কারণে নৌকা চালকদের ব্যস্ততা নেই বললেই চলে৷ ঢাকার সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের এই নৌকা চালকদের মনে প্রশ্ন – কোনো যাত্রী আসবেন কি, নাকি শুধুই অপেক্ষা, অর্থাৎ আবারো খালি হাতে বাড়ি ফেরা?
ছবি: DW/M.Mamun
কাজ বন্ধ বলে তো আর খাওয়া বন্ধ নয়!
ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকার কারওয়ান বাজারে পণ্য কম আসায় কাজ নেই শ্রমিকদের৷ কাজ বন্ধ বলে তো আর খাওয়া দাওয়া বন্ধ থাকতে পারে না! দু’বেলা যে খাওয়া চাই৷ খেতে বসে কেউ কেউ ভাবছেন ঘরে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যরা কি কিছু খেতে পেল? কারণ গত কয়েকদিন ধরে যে কোনো রোজগার নেই৷
ছবি: DW/M.Mamun
সাধারণ মানুষেরই কষ্ট
কারওয়ান বাজারে ভ্যান শ্রমিকদেরও কাজ নেই৷ শুয়ে বসে কতক্ষণ? আর খিদে পেলে? অবরোধের কারণে যারা দিন আনে দিন খায়, তাদের অবস্থা নিয়ে কি কেউ ভাবছেন?
ছবি: DW/M.Mamun
আড়ত শ্রমিকদেরও কাজ নেই
অবরোধের কারণে কারওয়ান বাজারের এই আড়ত শ্রমিকরা তাস খেলে সময় কাটাচ্ছেন৷ কিন্তু এভাবে ক’দিন চলে? সংসারের কথা মনে হলে তাস খেলে সময় কাটানোর সামান্য আনন্দটুকুও যে আর থাকে না!
ছবি: DW/M.Mamun
11 ছবি1 | 11
এদিকে, সপ্তাহের শুরুতে ইউরোপের পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো ছিল না৷ কারণ তেলের মূল্য৷ গত কয়েকদিন ধরে তেলের দাম শুধু কমছেই৷ এর প্রভাব পড়ছে জ্বালানি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্যে৷ এ কারণে ইউরোজোন এলাকায় ডিফ্লেশনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ একজন বাজার বিশ্লেষক বলছেন যে, তেলের মূল্য কমাটা ইউরোজোনের জন্য এমনিতে খুশির খবর, কিন্তু বর্তমানে সেটা ভালো কোনো খবর নয়৷ কারণ এটা ডিফ্লেশনের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে৷ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাও মনে করেন, তেলের মূল্য কমার কারণে ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতির হার আরও কমে যেতে পারে, অর্থাৎ ‘ডিফ্লেশন' হতে পারে৷
বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন নীতি প্রণয়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ নতুন বছরের শুরু থেকেই সেটা কার্যকর হবে৷ গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য আগের চেয়ে নীতিমালাটা কঠোর করা হয়েছে৷ ফলে ছোট ছোট বিমা কোম্পানিগুলোর পক্ষে হয়ত ব্যবসা করা সম্ভব নাও হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা বড় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিশে যেতে পারে৷ সম্প্রতি একটি ‘স্ট্রেস টেস্ট' পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, নতুন নিয়ম যদি এখন থেকেই কার্যকর হয়, তাহলে ইউরোপে থাকা প্রায় ৫ হাজার বিমা কোম্পানির মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ কোম্পানি সেই পরীক্ষায় ফেল করবে৷