দেশ এবং সংস্কৃতিভেদে অনেক মুসলমান নারী হিজাব পরিধান করেন৷ মূলত মাথা, চুল এবং গলা এবং ঘাড়ের খোলা অংশ ঢাকা হয় এই পোশাক দিয়ে৷ বিভিন্ন ডিজাইনের এবং রঙের হিজাব পাওয়া যায় যেগুলো পরলে চেহারা পুরোটাই দেখা যায়৷

নিকাব পরলে নারীর পুরো শরীর ঢেকে যায়, শুধু চোখ দু’টো খোলা থাকে৷ সাধারণত পুরোপুরি রক্ষণশীল মুসলমান নারীরা নিকাব পরেন৷ নিকাব মূলত কালো রঙের হলেও অন্যান্য রঙের নিকাবও ইদানীং দেখা যায়৷

দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় দোপাট্টা বা ওড়না৷ নিকাব বা বোরকার মতো না হলেও এই পোশাকেও নারীর শরীর অনেকটা ঢাকা থাকে৷ তবে চুলের কিছুটা, চেহারা এবং গলা দেখা যায়৷ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য ধর্মের মেয়েরাও দোপাট্টা পরেন৷

মূলত দুই টুকরো কাপড় দিয়ে আল-আমিরা তৈরি করা হয়৷ একটি টুকরো দিয়ে চুল পুরোপুরি ঢেকে দেয়া হয় আর অন্য টুকরোটা হিজাবের মতো জড়িয়ে দেয়া হয়৷ কম বয়সি মুসলিম নারীদের মধ্যে এই আল-আমিরা বেশ জনপ্রিয়৷

শায়লা হচ্ছে লম্বা, চারকোনা এক ধরনের স্কার্ফ, যা গল্ফ অঞ্চলের মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয়৷ এটি সাধারণত কালো রঙের হয় এবং কাঁধের কাছে পিন দিয়ে আটকাতে হয় এটিকে৷ তবে হিজাবের মতো সবকিছু ঢেকে রাখে না শায়লা৷

অনেকটা হিজাবের মতো হলেই এসার্প তৈরি হয় সিল্ক দিয়ে এবং বেশ উজ্জ্বল রঙের হয়৷ মূলত তুরস্কের মুসলিম নারীরা এটা পরিধান করেন৷ এটি বিভিন্ন রং এবং ডিজাইনে পাওয়া যায়৷

ইন্দোনেশিয়ার আধুনিক মেয়েরা আজকাল যে হিজাব ব্যবহার করছে, তার নাম কেরুডুং৷ আর প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়ায় নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় টুডুং৷ এই দু’টি অনেকটা চাদরের মতো হলেও, একটি অংশে সুন্দর প্যার্টার্ন থাকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকে বিভিন্ন রঙের শেডও৷ হিজাবের মতো টুডুং বা কেরুডুং-ও চুল, গলা এবং কাঁধ পুরোপুরি ঢেকে ফেলে৷

ইরানের মেয়েদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় চাদর৷ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাধারণত সে দেশের নারীরা চাদর পরে নেন৷

মুসলিম নারীরা সারা চেহারা এবং সারা শরীর পুরোপুরি ঢেকে ফেলে বোরকা পরিধান করেন৷ ক্ষেত্রবিশেষে বোরকার চোখের অংশে জাল দেয়া থাকে, যাতে তারা দেখতে পারেন৷ কালো ছাড়াও বিভিন্ন রংঙের বোরকা হয়৷

সারা শরীর ঢেকে রেখেও নারীর স্তন এবং পশ্চাতদেশের আকার ফুটিয়ে তোলা যায় এই পোশাকে৷ এ জন্যই একে জিলবুবস বলা হয়৷ ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পোশাকের ব্যবহার দেখা যায়৷ তবে এই পোশাক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ দ্রষ্টব্য: মুসলিম নারীদের পোশাক সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷

হানা শ্রাইম৷ বয়স ১৭৷ দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় সে মা-বাবাকে নিয়মিত হিজাব পরতে চায় বলে জানায়৷ প্রথমে এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা, কারণ অপরিচিতজনরা হিজাব পরা মেয়েকে কোন দৃষ্টিতে দেখবে সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না তাঁরা৷

নিয়মিত নামাজ পরে হানা৷ পাশাপাশি স্কুলের গার্লস গাইডের সঙ্গে জড়িত ছিল সে৷ হানা ক্লাস ক্যাপ্টেনও ছিল৷ ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের অধিকার নিয়ে কাজ করতে চায় সে৷

পাঁচ বছরের লানা আলগামিল হানাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে৷ মাগরিবের নামাজের আগে হানার কাছে লানা জানতে চায়, সে-ও (লানা) হিজার পরে দেখতে পারে কিনা৷ যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জার্মানটাউনে থাকে হানার পরিবার৷ ওয়াশিংটন ডিসি থেকে দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার৷

জার্মানটাউনের নর্থওয়েস্ট হাইস্কুলে পড়ত হানা৷ ছবিতে তাকে মেরিল্যান্ডের ‘মুসলিম অ্যামেরিকান সোসাইটি’-র একটি স্টাডি সেশনে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে৷

স্কুলজীবনের ফাইনাল ইয়ারের শেষ উদযাপন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ‘প্রম’-এর আয়োজন করা হয়৷ হানা ও তাঁর বান্ধবি হানা রিড সেই প্রম-এ অংশ নেয়ার প্রস্তুতি হিসেবে মেকআপ নিচ্ছে৷

প্রম-এ অংশ নিতে একটি তুর্কি ওয়েবসাইট থেকে নতুন পোশাক অর্ডার করেছিল হানা৷ সেই পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে নতুন একটি হিজাবও কিনেছে সে৷

প্রম শুরুর আগে বাবা-মাদের জন্য ছবি তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে হানা ও তার বন্ধুরা৷

‘প্রমেনাডে ড্যান্স’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ প্রম৷ অর্থাৎ নাচই এই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ৷ সেটাই করছে হানা৷ পাশে জাহ্নবি মুরালিধরন৷

প্রম-এ সাধারণত একজন সঙ্গীকে নিয়ে হাজির হয় শিক্ষার্থীরা৷ হানাকে তাই প্রম-এ যেতে দেয়ার অনুমতি দেয়াটা তার বাবা-মার জন্য একটি বড় সিদ্ধান্ত ছিল৷ অবশ্য হানা তার বান্ধবীর সঙ্গে প্রম-এ যাবে, এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অনুমতি দিতে আর দেরি করেনি তার অভিভাবক৷

ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রম আয়োজনের পরিকল্পনায় অন্যদের সঙ্গে হানাও ছিল৷ অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় খুশি সে৷ বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ কিছু স্মৃতি জমা হওয়ায় খুশি বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ৷