ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সংস্থা বলছে, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর তৈরি হয়েছে৷ এই পরিস্থিতি সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জার্মানি৷
বিজ্ঞাপন
ইইউ-র কাউন্টার প্রোপাগান্ডা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাগুলো বলছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গঠিত হওয়ার পর টাস্কফোর্স এখন পর্যন্ত আড়াই হাজারেরও বেশি ভুয়া খবর নিয়ে কাজ করেছে৷ ১৮টি ভাষায় প্রকাশিত এসব খবরের শিকার হয়েছে ফ্রান্স আর নেদারল্যান্ডসও৷ জার্মানির পাশাপাশি এই দুটি দেশেও চলতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
সূত্র জানায়, ইউরোপে ম্যার্কেলকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি ভুয়া খবর তৈরি হয়েছে৷ বিশেষ করে তাঁর শরণার্থী নীতিকে ঘিরে এসব খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
নানা মুডে আঙ্গেলা ম্যার্কেল
সারা বিশ্বের মিডিয়া জুড়ে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ছবি৷ তাঁর সরকারি মুখাবয়ব প্রায়শই গম্ভীর, কথা বলেন সুচিন্তিতভাবে৷ ছবি তোলেন দু’হাতের আঙুলগুলো জুড়ে, তাঁর সুপরিচিত ভঙ্গি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সুবিখ্যাত ম্যার্কেল মুদ্রা
ব্রীড়া থেকেই হোক, বা ঝানু রাজনীতিকের পরিশীলিত ভঙ্গিই হোক, ম্যার্কেল যে হাতের আঙুলগুলো জোড়া দিয়ে কী বলতে চাইছেন, তা তিনি নিজেই জানেন...
ছবি: picture-alliance/dpa/Michael Kappeler
ইউরোপীয় রাজনীতিক
সার্বভৌম, উৎসাহী অথচ নিরুদ্বেগ অভিব্যক্তি নিয়ে ইউরোপীয় রাজনীতির মঞ্চে চলাফেরা করেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ ছবিতে তিনি ব্রাতিস্লাভায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক শীর্ষবৈঠকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Hoslet
চ্যান্সেলরের সঙ্গে সেলফি
উদ্বাস্তু সংকট ম্যার্কেলের রাজনৈতিক জীবনে একটা বড় প্রসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তবুও গতবছর বার্লিনের মারৎসান এলাকার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে সিরিয়া থেকে আগত এক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার সুযোগ দেন ম্যার্কেল৷
ছবি: Getty Images/S. Gallup
সরকারপ্রধান
চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেলকে দেখা যায় তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমা ও ভূমিকায়৷ সঙ্গে ভাইস চ্যান্সেলর সিগমার গাব্রিয়েল৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
নারীসুলভ
হঠাৎ কিছুটা অন্তরঙ্গতা ও একটি হাসি৷ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদকেও পার্ফেক্ট জেন্টলম্যান বলা চলে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Mori
জোট সরকার
ম্যার্কেলের দুই জোট সহযোগী, এসপিডি প্রধান সিগমার গাব্রিয়েল ও সিএসইউ প্রধান হর্স্ট জেহোফারকে দেখলে বোঝা যায়, ‘অ্যাঞ্জি’ মাথা ঠান্ডা না রাখলে বিপদ ঘটতে কতক্ষণ?
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. von Jutrczenka
বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তি
পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রির অধিকারিনী ম্যার্কেলের ইন্টারনেট বা ডিজিটাল মিডিয়াগুলোর জন্যে খুব একটা সময় থাকে না৷ তবে টুইট করতে ভালোবাসেন৷ ২০১৫ সালে জাতিসংঘের একটি ফোরামে ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক সাকারবার্গের সঙ্গে আগ্রহ নিয়েই আলোচনা করছেন!
ছবি: picture-alliance/dpa
যাজক তনয়া
২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ প্রটেস্টান্ট যাজকের কন্যা ম্যার্কেলের পক্ষে একটি বিশেষ মুহূর্ত৷
ছবি: Reuters/A. Pizzoli
শ্যাম্পেন পান করার মতো উপলক্ষ্য চাই
যেমন জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে এলিসি চুক্তির ৫০ বছর পূর্তি৷
ছবি: AP
ক্ষমতার নেশা চেনেন ম্যার্কেল
২০১১ সালে ডয়চে ব্যাংকের প্রধান ইয়োসেফ আকারমান-এর সঙ্গে বৈঠকে সম্ভবত চলতি আর্থিক সংকট নিয়েই কথা হয়েছিল৷
ছবি: AP
ছুটিছাটায়
চ্যান্সেলরও মানুষ, তাঁরও ছুটি লাগে৷ তবে ছুটিতেও পাপারাৎসিদের হাত থেকে মুক্তি নেই আঙ্গেলা ম্যার্কেলের৷ ছবিতে তাঁর স্বামী ইওয়াখিম সাওয়ারকে দেখা যাচ্ছে (বাঁয়ে)৷
ছবি: dapd
সে অনেকদিন আগের কথা
তরুণ সিডিইউ রাজনীতিক আঙ্গেলা ম্যার্কেল দলীয় সতীর্থ আনেট শাভান ও প্রবীণ সিডিইউ রাজনীতিক এর্ভিন টয়ফেল-এর সঙ্গে দক্ষিণ জার্মানিতে সাইকেল টুরে৷ তখনও তাঁর মুখে অভিজ্ঞতা ও ক্ষমতার ছাপ পড়েনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
12 ছবি1 | 12
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলা রাশিয়ার ‘ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেন' ঠেকাতে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে কাউন্টার প্রোপাগান্ডা বিষয়ক টাস্কফোর্স গঠন করেছিল ইইউ৷ অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে ইচ্ছে করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনলাইনে নিয়মিতভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করার বিষয়টি হচ্ছে ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেন৷
নির্বাচন ‘হ্যাকিং'
রাশিয়া গত বছরের মার্কিন নির্বাচন ‘হ্যাক' করেছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে৷ অনলাইনে ভুয়া খবর প্রকাশ করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে রাশিয়া ‘হ্যাকিং'-এর আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর৷
যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ‘ভুয়া খবর' দিয়ে জার্মান নির্বাচনকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ জার্মানির বিচারমন্ত্রী হাইকো মাস গতবছরই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন৷ ‘‘দুর্ভাগ্যবশত এটি (ভুয়া খবর প্রকাশ) ইন্টারনেটের একটি কালো অধ্যায়৷ বিষয়টি নিয়ে আমাদের খুব ভালভাবে ভাবতে হবে'', গত বছর বলেছিলেন তিনি৷ এরপর অনলাইনে ভুয়া খবর মোকাবিলা করতে জার্মানি একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে বলে গতমাসে জানা যায়৷
জেডএইচ/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)
এ বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারীর ব্যক্তিগত জীবন
তিনি সুপার মার্কেটে বাজার করেন, নাপিতের দোকানে অন্যদের পাশে বসে অপেক্ষা করেন, এমনকি সরকারি ভবন নয়, নিজের বাড়িতে থাকাই তাঁর পছন্দ৷ তিনি আর কেউ নন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
ছবি: Reuters/H. Hanschke
ম্যার্কেলের নাপিত উডো ভালৎস
২০১৫ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ উডো ভালৎস (ছবিতে মাঝখানে) গত দশ বছর ধরে ম্যার্কেলের চুল কাটেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘চ্যান্সেলার হওয়ার আগেও তিনি যেমন সেলুনে অন্যদের সাথে বসতেন, এখনও তাই করেন৷ তাঁকে কোনো বিশেষ ছাড় দেওয়া হয় না৷ অর্থাৎ তিনিও অন্যদের মতো ৬৫ ইউরো দেন৷ একদম আগের মতো আছেন তিনি৷’’
ছবি: picture-alliance/schroewig
নিজেদের বাড়িতেই থাকেন
বার্লিনের ‘মিউজিয়াম আইল্যান্ড’-এর একটি জাদুঘরের কাছে নিজস্ব, কিন্তু পুরানো একটা ফ্ল্যাটে থাকেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও তাঁর স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার৷ শুধু নিরাপত্তার জন্য দু’জন পুলিশ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে৷ এছাড়া কিন্তু সব কিছু আগের মতো আছে৷ এই যেমন, ছুটি পেলে আজও কাছের উকারমার্ক নামের ছোট্ট শহরে চলে যান দু’জনে৷ সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন!
ছবি: picture-alliance/dpa
নিজেই বাজার করেন
চ্যান্সেলার ম্যার্কেল সাধারণ সুপার মার্কেটেই বাজার করতে যান, বিশেষ করে যেগুলো একটু বেশি সময় খোলা থাকে৷ বাজার করা সম্পর্কে আঙ্গেলা ম্যার্কেল একবার এক দোকানিকে বলেছিলেন, ‘‘আমার এই অল্প অবসর সময়ে বাজার করার মতো সব কাজই করার চেষ্টা করি, যেমনটা আগে করতাম৷ অবশ্য যখন নিজে পারি না, তখন বাজারের লিস্ট তৈরি করে স্বামীর হাতে তুলে দেই৷’’
ছবি: picture-alliance/Markus C. Hurek
তিনিই ‘চ্যান্সেলার’
দোকানের একজন নারী কর্মী জানান, ‘‘চ্যান্সেলার ম্যার্কেল অন্যান্য ক্রেতার মতোই কিছু খুঁজে না পেলে কোথায় কী রাখা আছে, তা সাধারণ গৃহিনীদের মতোই জানতে চান৷ তাঁর নিরাপত্তার জন্য দেহরক্ষী সাথে না থাকলে কেউ হয়ত বুঝবেই না যে তিনিই আমাদের ‘অ্যাঞ্জি’৷’’ কর্মীটি আরো জানান, ‘‘শত ব্যস্ততার মধ্যেও কিন্তু চ্যান্সেলারের মুখে হাসিটুকু লেগে থাকে, যা ভীষণ ভালো লাগে৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/J. Eisele
চ্যান্সেলারের পছন্দ ফ্রেঞ্চ চিজ
জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ভীষণ পছন্দ ফ্রেঞ্চ চিজ বা পনির, যা তিনি নিজেই কিনতে ভালোবাসেন৷ আর সে’কথাই গর্ব করে জানান ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের একজন কর্মী৷
হাতে দামি ব্যাগ নেওয়ার চেয়ে ভালো খাওয়া-দাওয়া ম্যার্কেলের কাছে বেশি গুরত্বপূর্ণ৷ যখন তিনি রান্না করার সময় পান না, তখন স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ারকে নিয়ে বার্লিনের ‘কাসামবালিস’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান৷ দামি খাবারের চেয়ে অবশ্য ‘গ্রিক মিটবল’-এর মতো সাধারণ খাবারই বেশি পছন্দ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই নারীর৷
ছবি: picture alliance/Markus C. Hurek
বিলাসিতা পছন্দ নয়
অন্যান্য রাজনীতিকদের মতো বিলাসিতা আঙ্গেলা ম্যার্কেলের তেমন পছন্দ নয়৷ বরং সাধারণ জীবনযাপনই তাঁর বেশি ভালো লাগে৷ তাই তিনি যতটা সম্ভব সেভাবেই চলার চেষ্টা করেন স্বামীকে নিয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Fusco
চাই মুক্ত হাওয়া আর হাঁটা-চলা
আঙ্গেলা ম্যার্কেল সময় সুযোগ পেলে স্বামীকে সাথে নিয়ে হাঁটতে বের হন৷ শারীরিক এবং মানসিকভাবে ‘ফিট’ থাকতে মুক্ত বাতাসে হাঁটা-চলা যে ভীষণ জরুরি – সেটা তিনি যেন সকলে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন৷ এই না হলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী!
ছবি: picture-alliance/AP Photo/AP Photo/C. De Luca