1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো মুদ্রা

১ এপ্রিল ২০১২

ইউরো মুদ্রা এলাকায় ভবিষ্যতে আর্থিক সংকট এড়াতে যে তহবিল রয়েছে, তার অঙ্ক এবার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো৷ সবার আশা, এবার পুঁজিবাজার শান্ত হবে৷

europa; krise; flagge; eu; europäische; union; boden; stein; steine; sterne; blau; straße © hsa.images - Fotolia.com
ছবি: Fotolia/hsa.images

স্থায়ী তহবিলের প্রেক্ষাপট

আয়ারল্যান্ড, গ্রিস, পর্তুগাল সহ দেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে ইউরোজোন ভবিষ্যতে এমন সংকটের সম্ভাবনা আগাম প্রতিরোধ করতে চায়৷ এমনটা করতে হলে যে একটি জরুরি তহবিলের প্রয়োজন, সেবিষয়ে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না৷ গ্রিসের মতো দেশের জন্য অস্থায়ী তহবিলের পর স্থায়ী এক তহবিল গঠন করতে রাজি হয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা৷ উদ্দেশ্য, আবার সংকট দেখা দিলে যাতে এই কাঠামোর মধ্যেই তা সামলানো যায়৷

কিন্তু কত পরিমাণ অর্থ জমা থাকলে সেই তহবিল যথেষ্ট মজবুত হবে, তা নিয়ে বেশ মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছিল৷ বিশেষ করে জার্মানি বেঁকে বসেছিল৷ কারণ বার্লিনের আশঙ্কা, বিপদের জন্য এমন প্রস্তুতি নিলে কোনো দেশ সেই বিপদ এড়ানোর তেমন চেষ্টা করবে না৷ তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নিজেদের ঘর সামলাবে না৷ অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, স্থায়ী জরুরি তহবিল যথেষ্ট মজবুত না হলে কোনো লাভ নেই৷ কারণ সংকট দেখা দিলে তা সামলাতে প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়া যাবে না, পুঁজিবাজারেরও আস্থা থাকবে না৷ প্রথমে ইসএম'এর জন্য ৫০,০০০ কোটি ইউরো ধার্য করা হয়েছিল৷ চারিদিক থেকে চাপের মুখে শুক্রবার ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা কোপেনহেগেন'এ এই অঙ্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন৷ ফলে তহবিলে এবার ৮০,০০০ কোটি ইউরোরও বেশি অঙ্ক জমা পড়বে৷ তার মধ্যে অবশ্য কাগজে-কলমে গ্রিসের জন্য আলাদা সাহায্যের অর্থও রয়েছে৷ অর্থাৎ অস্থায়ী ইএফএসএফ তহবিলে যে ১৯,২০০ কোটি ইউরো রয়েছে, তাও এই স্থায়ী তহবিলে জমা পড়ছে৷

নতুন পরিস্থিতিতে জার্মানির অবস্থান

কোপেনহেগেন সম্মেলনের আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যে জার্মানি তার প্রতিরোধ অনেকটা তুলে নিচ্ছে৷ এবিষয়ে সংশয় কাটাতে বৃহস্পতিবার জার্মানির অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে বেশ কৌতুকের সঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনার জন্য মিলিত হচ্ছি৷ এবিষয়ে নানা জনের নানা মত রয়েছে৷ একে দ্বন্দ্বও বলা যেতে পারে৷ সব সময়ই আমরা কিন্তু সাধারণ সমাধানসূত্র খুঁজে পাই৷ পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে এবং সার্বিক সমাধানসূত্র খোঁজার স্বার্থেই আমরা এটা করে থাকি৷''

কোপেনহাগেনে ইইউ মন্ত্রীদের সম্মেলনস্থলছবি: DW

এই সিদ্ধান্তের কথা জেনে শুক্রবার পুঁজিবাজার সত্যি বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল৷ মনে রাখতে হবে, ইউরোপীয় নেতাদের ঐক্যের প্রশ্নে পুঁজিবাজারের অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো নয়৷ তবে কোপেনহেগেনে ইউরোজোন অর্থমন্ত্রীরা মোটামুটি স্পষ্ট রূপরেখা তুলে ধরতে পারায় এই আস্থা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সম্মেলনের আয়োজক দেশ ডেনমার্কের অর্থমন্ত্রী মার্গারেটে ফেস্টহাগার বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, পুঁজিবাজারকে কখনো পুরোপুরি সন্তুষ্ট করা সম্ভব৷ আমরা শুধু বলতে পারি, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য৷ বলতে পারি, আমাদের ‘ফায়ারওয়াল' এত বড় ও শক্তিশালী৷ এর বেশি কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়৷''

ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা

তবে ৮০,০০০ কোটি ইউরো শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত শান্তি আনতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ কারণ অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি মঙ্গলবার বলেছে, ইসএম তহবিলে আপাতত এক ট্রিলিয়ন বা এক লক্ষ কোটি ইউরো থাকা উচিত৷ তবে এক ধাক্কায় নয়, আগামী দুই বছরের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণ করা যেতে পারে৷ তারপর আর্থিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে, যে এত বড় মাপের তহবিলের আদৌ প্রয়োজন হবে কি না৷ ফ্রান্সও এই পথে চলার পক্ষে৷ সেদেশের অর্থমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া বারোয়াঁ তহবিলের অঙ্ক আরও বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন বটে, কিন্তু তার ফল পান নি৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ'ও এমনটাই চেয়েছিল৷

তহবিলের অঙ্ক বাড়ানোর প্রশ্নে যে দরকষাকষি চলেছে, তার পেছনে কাজ করছে আরও বড় একটি প্রশ্ন৷ তা হলো, এই অর্থ আসবে কোথা থেকে? জার্মানিই ইউরো এলাকার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি৷ ৫০,০০০ কোটি ইউরোর তহবিলে জার্মানিকেই দিতে হতো প্রায় ২১,১০০ কোটি ইউরো৷ এবার সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়াবে ২৫,০০০ কোটিতে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ