করোনার ডেল্টা সংস্করণ ছড়াচ্ছে,, তাই জার্মান সমর্থকদের ইংল্যান্ডে গিয়ে ম্যাচ না দেখার পরামর্শ দিল ডাব্লিউএমএ।
বিজ্ঞাপন
আগামী মঙ্গলবার লন্ডনে ইংল্যান্ড বনাম জার্মানির ইউরো কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কিন্তু স্টেডিয়ামে কি জার্মান সমর্থকরা থাকবেন? না কি শুধু ইংল্যান্ডের হয়েই গলা ফাটাবেন সেদেশের সমর্থকরা। এই সম্ভাবনা যথেষ্ট। কারণ, ওয়ার্ল্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (ডাব্লিউএমএ) জার্মানির ফুটবল ফ্যানদের অনুরোধ করেছে, তারা যেন লন্ডন না যান। কারণ, লন্ডনে এখন করোনার ডেল্টা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। এই ভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে এবং খুব দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে।
ডাব্লিউএমএ-র চেয়ারম্যান বাভারিয়ার একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, ‘‘যারা টিকা নেননি, তারা গেলে সেটা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। তাদের করোনা হওয়ার ঝুঁকি খুবই বেশি থাকবে। আর যারা টিকা নিয়েছেন, তাদেরও ঝুঁকি থাকবে, তবে তুলনায় কম৷’’
গত বুধবার গ্রুপ এফ এর শেষ ম্যাচে হাঙ্গেরির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে জার্মানি৷ ফলে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত হয় জার্মানির৷ এখন শেষ ষোলোতে গ্রুপ ডিতে সেরা হওয়া ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপজয়ীরা৷ এই ধরনের বড় ম্যাচ দেখার একটা বাড়তি তাগিদ সমর্থকদের থাকে৷ স্বাভাবিক সময় হলে তো ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের একটা অংশ জর্মান ফ্যানদের দখলে থাকত৷
কিন্তু করোনাকালে যাতায়াতের উপর অনেক বিধিনিষেধ আছে। যে জার্মান সমর্থকরা ম্যাচ দেখতে যাবেন, তাদের জার্মানি ফিরে ১৪ দিনের কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। কারণ, লন্ডন তথা ইংল্যান্ডে এখন করোনার ডেল্টা প্রজাতি ছড়াচ্ছে।
ইউরো কাপ: করোনা, মাস্ক ও সামাজিক দূরত্বের প্রশ্ন
শুরু হয়েছে ইউরো কাপ। জমজমাট ফুটবলের আসর। কিন্তু করোনাকালের এই ইউরো কাপ নিয়ে উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন।
ছবি: Wolfgang Rattay/REUTERS
মাস্ক কোথায়?
ইউরো কাপ হচ্ছে ইউরোপের অনেকগুলি শহরে। স্টেডিয়ামে দর্শকরা থাকছেন। কোথাও ২0 শতাংশ, কোথাও ৩২ শতাংশ, কোথাও ৫০ শতাংশ। বুদাপেস্টে ভর্তি স্টেডিয়ামে ম্যাচ হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, দর্শকদের মুখে মাস্ক নেই।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই
মাস্ক তো নেই-ই, সামাজিক দূরত্বও রাখছেন না দর্শকরা। ফুটবলে মশগুল দর্শকরা একসঙ্গে বসছেন, গোল দিলে বা টিভি ক্যামেরা ঘুরলে একসঙ্গে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। করোনাকালে যা বিপজ্জনক হতে বাধ্য।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
দেখে মনে হচ্ছে করোনা নেই
ইউরো কাপের অধিকাংশ খেলায় দর্শকদের দেখে মনে হচ্ছে, করোনা বিদায় নিয়েছে। ফলে সুরক্ষার জন্য যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছিল, তার কোনো দরকার নেই।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
নিয়ম হলো
অথচ দর্শকদের মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব রেখে বসার কথা। হাত মেলানো, কোলাকুলি করা, হাই ফাইভ, খুব কাছে আসায় নিষেধ রয়েছে। অ্যামস্টারডামে তো নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে হবে। বুখারেস্টে ভ্যাকসিন নিলে পরীক্ষা রিপোর্ট লাগবে না। তবে কোপেনহেগেনে রিপোর্ট লাগবে। মিউনিখেও রিপোর্ট জরুরি।
ছবি: Jonathan Nackstrand/REUTERS
ইউরোপে করোনা
ইউরোপে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখন করোনার প্রকোপ কম। প্রচুর মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এ সব ঠিক। কিন্তু করোনা চলে যায়নি। বৃহস্পতিবারের রিপোর্ট, জার্মানিতে এক হাজার ৩৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭ জন, ইংল্যান্ডে গত মে মাসের তুলনায় করোনার প্রকোপ ৫০ শতাংশ বেড়েছে। সেখানে করোনার ভারতীয় প্রজাতির ভাইরাস ছড়াচ্ছে। অস্ট্রিয়ায় ১ জুলাই থেকে রেস্তোরাঁ,খুলবে।
ছবি: Jonathan Nackstrand/REUTERS
স্পেনের ক্যাপ্টেন
সপ্তাহ দুয়েক আগে স্পেনের ক্যাপ্টেন সের্জিও বাসকেস করোনায় আক্রান্ত হন। তাকে বাড়ি ফিরে নিভৃতবাসে থাকতে হয়। বায়ো বাবলে থাকা বাকি সব ফুটবলারের পরীক্ষা হয়। তবে তারা কেউ আক্রান্ত হননি।
ছবি: Jose Breton/NurPhoto/picture alliance
উয়েফার সিদ্ধান্ত
করোনার কথা মাথায় রেখে উয়েফা এবার প্রতিটি টিমে ফুটবলারদের সংখ্যা বাড়িয়েছে। টিমগুলি অতিরিক্ত পাঁচ ফুটবলারকে নিয়ে আসতে পারবে। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত তার বদলি নিয়ে আসা যাবে। অথচ, দর্শকদের জন্য নিয়ম কড়াভাবে রূপায়ণ করা হচ্ছে না।
ছবি: Koen Van Weel/REUTERS
7 ছবি1 | 7
জার্মান চ্যান্সেলার ম্যার্কেল বুধবার বলেছেন, তিনি চান, ইউরোপের সর্বত্র যেন এই নীতিই নেয়া হয়।
ইংল্যান্ডের গত তিনটি ম্যাচে ২৫ হাজার দর্শক স্টেডিয়ামে গেছিলেন। জার্মানির বিরুদ্ধে ম্যাচে ৪৫ হাজার দর্শক থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, স্টেডিয়ামের ৫০ ভাগ পূর্ণ হবে। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে ৬০ হাজার দর্শক ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ডাব্লিউএমএ-র চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘‘বরিস জনসন কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না। আমি শুধু জার্মান ফ্যানদের না যাওয়ার পরামর্শ দেব৷’’