লন্ডন থেকে ইউরো কাপের ফাইনাল রোমে সরানোর দাবি ইটালির প্রধানমন্ত্রীর। করোনার কারণেই এই মন্তব্য।
বিজ্ঞাপন
জমে উঠেছে ইউরো কাপ। আগামী ১১ জুলাই ফাইনাল হওয়ার কথা লন্ডনে। কিন্তু বাদ সেধেছে ইটালি। দেশের প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির দাবি, লন্ডনে করোনার ডেল্টা সংস্করণ ধরা পড়েছে। ফলে সেখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে রোমে নিয়ে আসা হোক। ইউরো কাপ কর্তৃপক্ষ এখনো বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
১১ জুলাই লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরো কাপের ফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে করোনার সংক্রমণ আবার নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। আশঙ্কার বিষয় হলো সেখানে করোনার ডেল্টা সংস্করণের সন্ধান মিলেছে। যা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছড়ায়। করোনার ডেল্টা সংস্করণ প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ভারতে। লাখ লাখ মানুষ নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর হারও বেড়েছিল। ভাইরোলজিস্টদের দাবি, করোনার ডেল্টা ভেরিয়েন্ট অন্য সংস্করণগুলির চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর। সেই ডেল্টা সংস্করণই ধরা পড়েছে যুক্তরাজ্যে। ফলে সেখান থেকে ম্যাচ সরিয়ে রোমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী।
ইউরো কাপ: করোনা, মাস্ক ও সামাজিক দূরত্বের প্রশ্ন
শুরু হয়েছে ইউরো কাপ। জমজমাট ফুটবলের আসর। কিন্তু করোনাকালের এই ইউরো কাপ নিয়ে উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন।
ছবি: Wolfgang Rattay/REUTERS
মাস্ক কোথায়?
ইউরো কাপ হচ্ছে ইউরোপের অনেকগুলি শহরে। স্টেডিয়ামে দর্শকরা থাকছেন। কোথাও ২0 শতাংশ, কোথাও ৩২ শতাংশ, কোথাও ৫০ শতাংশ। বুদাপেস্টে ভর্তি স্টেডিয়ামে ম্যাচ হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, দর্শকদের মুখে মাস্ক নেই।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই
মাস্ক তো নেই-ই, সামাজিক দূরত্বও রাখছেন না দর্শকরা। ফুটবলে মশগুল দর্শকরা একসঙ্গে বসছেন, গোল দিলে বা টিভি ক্যামেরা ঘুরলে একসঙ্গে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। করোনাকালে যা বিপজ্জনক হতে বাধ্য।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
দেখে মনে হচ্ছে করোনা নেই
ইউরো কাপের অধিকাংশ খেলায় দর্শকদের দেখে মনে হচ্ছে, করোনা বিদায় নিয়েছে। ফলে সুরক্ষার জন্য যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছিল, তার কোনো দরকার নেই।
ছবি: Dean Mouhtaropoulos/REUTERS
নিয়ম হলো
অথচ দর্শকদের মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব রেখে বসার কথা। হাত মেলানো, কোলাকুলি করা, হাই ফাইভ, খুব কাছে আসায় নিষেধ রয়েছে। অ্যামস্টারডামে তো নেগেটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে হবে। বুখারেস্টে ভ্যাকসিন নিলে পরীক্ষা রিপোর্ট লাগবে না। তবে কোপেনহেগেনে রিপোর্ট লাগবে। মিউনিখেও রিপোর্ট জরুরি।
ছবি: Jonathan Nackstrand/REUTERS
ইউরোপে করোনা
ইউরোপে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখন করোনার প্রকোপ কম। প্রচুর মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এ সব ঠিক। কিন্তু করোনা চলে যায়নি। বৃহস্পতিবারের রিপোর্ট, জার্মানিতে এক হাজার ৩৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭ জন, ইংল্যান্ডে গত মে মাসের তুলনায় করোনার প্রকোপ ৫০ শতাংশ বেড়েছে। সেখানে করোনার ভারতীয় প্রজাতির ভাইরাস ছড়াচ্ছে। অস্ট্রিয়ায় ১ জুলাই থেকে রেস্তোরাঁ,খুলবে।
ছবি: Jonathan Nackstrand/REUTERS
স্পেনের ক্যাপ্টেন
সপ্তাহ দুয়েক আগে স্পেনের ক্যাপ্টেন সের্জিও বাসকেস করোনায় আক্রান্ত হন। তাকে বাড়ি ফিরে নিভৃতবাসে থাকতে হয়। বায়ো বাবলে থাকা বাকি সব ফুটবলারের পরীক্ষা হয়। তবে তারা কেউ আক্রান্ত হননি।
ছবি: Jose Breton/NurPhoto/picture alliance
উয়েফার সিদ্ধান্ত
করোনার কথা মাথায় রেখে উয়েফা এবার প্রতিটি টিমে ফুটবলারদের সংখ্যা বাড়িয়েছে। টিমগুলি অতিরিক্ত পাঁচ ফুটবলারকে নিয়ে আসতে পারবে। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত তার বদলি নিয়ে আসা যাবে। অথচ, দর্শকদের জন্য নিয়ম কড়াভাবে রূপায়ণ করা হচ্ছে না।
ছবি: Koen Van Weel/REUTERS
7 ছবি1 | 7
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বৈঠক করতে বার্লিন গিয়েছিলেন দ্রাঘি। সেখানে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন ম্যার্কেল এবং দ্রাঘি। সেখানেই সাংবাদিকদের দ্রাঘি বলেন, ''সংক্রমণ যেখানে বাড়ছে, সেখান ফাইনাল না হওয়া উচিত বলেই মনে করি। লন্ডন থেকে তা রোমে সরিয়ে আনা হোক।''
এর আগে ম্যার্কেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরো কাপ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, যে ভাবে স্টেডিয়ামে ভিড় করে খেলা দেখছেন দর্শকরা, তাতে সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো দেশকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা।
ম্যার্কেল এবং দ্রাঘির বৈঠকেরমূল বিষয় অবশ্য ইউরো কাপ ছিল না। মূলত শরণার্থী সমস্যা নিয়েই তাদের কথা হয়েছে। ২০১৬ সালের চুক্তি মাথায় রেখে সিরিয়ান শরণার্থী সংক্রান্ত বিষয়ে তুরস্ককে পাশে রাখার চুক্তি যাতে অব্যাহত থাকে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। একই সঙ্গে উত্তর আফ্রিকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপস্থিতি বাড়ানোর প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে তাদের।