সুইজারল্যান্ডকে হারাতে পারলো না জার্মানি। তবে ইনজুরি টাইমে গোলে ড্র করে গ্রুপ শীর্ষে পৌঁছে গেলো তারা।
বিজ্ঞাপন
খেলার শুরু থেকে জার্মানির দাপট ছিল। একের পর এক আক্রমণ উঠে আসছিল সুইজারল্যান্ডের বক্সে। তিন মিনিটেই অসাধারণ পাস দিয়েছিলেন মুসিয়ালা। কিন্তু সুইস ডিফেন্ডাররা সেই বলের দখল নিয়ে নেন। মুসিয়ালা ও উইর্ৎজ জায়গা বদল করে বিভ্রান্ত করছিলেন সুইজারল্যান্ডকে।
তা সত্ত্বেও প্রথমার্ধের গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। ফ্রিউলারের ক্রস থেকে গোল করেন এনডোয়ে। এরপরই তার একটি শট বাইরে যায়।
এরপর সুইজারল্যান্ড বেশ কয়েকবার আক্রমণে ওঠে। কোনোক্রমে তা সামাল দেন জার্মান ডিফেন্ডারেরা। জার্মানিও সমানে আক্রমণ করছিল। তবে সুইজারল্যান্ডের ডিফেন্স তখন দুর্ভেদ্য। জার্মানির আক্রমণ বক্সে গিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিল। অবশ্য একবার আন্দ্রিচের একটি দূরপাল্লার শট গোলরক্ষকের সামনে পড়ে গোলে ঢুকে যায়। কিন্তু ভিডিও দেখার পর রেফারি জানান, ওটা গোল নয়, তার আগেই ফাউল হয়েছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানি আক্রমণের ঝাঁঝ আরো বাড়ে। তবে ৭০ মিনিটে সুইজারল্যান্ড আবার জার্মানির গোলে বল ঢুকিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু অফসাইডের জন্য তা বাতিল হয়। পরপর কয়েকটি আক্রমণ করে সুইজারল্যান্ড।
৯০ মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার পর যখন ইনজুরি টাইমের খেলা চলছে, তার তিন মিনিটের মাথায় হেডে গোল করেন ফুলক্রুগ। বলা যেতে পারে, ইউরো ২৪-এর এখনো পর্যন্ত মোমেন্ট অফ দ্য টুর্নামেন্ট। জার্মানির সমর্থকরা এই গোলটা মনে রাখবেন। জার্মানির হেড কোচ নাগেলসম্যান বলেছেন, ;;আমার মনে হয়, এটা ঠিক ফলই হয়েছে। আমরা যোগ্য দল হিসাবেই গ্রুপের শীর্ষে আছি।''
গোটা ম্যাচে জার্মানি গোলে ১৮টা শট মেরেছে, সুইজারল্যান্ড মেরেছে চারটি। ৬০ শতাংশ সময় জার্মানির দখলে বল ছিল।
ইউয়েফা ইউরোপীয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ বা ইউরো ২০২৪ হচ্ছে জার্মানিতে। বাড়ছে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা।
ছবি: Daniel Kubirski/picture-alliance
আইএস নিয়ে চিন্তা
গত সপ্তাহে এক সন্দেহভাজন আইএস, সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সে ইউরো ২০২৪-এ কাজ করার জন্য আবেদন করেছিল। তবে আবেদন খারিজ হয়। তার জার্মানি, মরক্কো ও পোল্যান্ডের নাগরিকত্ব আছে। সে আইএসের শাখা সংগঠনকে এক হাজার সাতশ পাউন্ড দিয়েছে বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর ইউরো ২০২৪-এর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে।
ছবি: Michael Bihlmayer/CHROMORANGE/picture alliance
কী বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী?
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার বলেছেন, ''যে কোনো ধরনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় আমরা পুরোপুরি তৈরি। আমাদের বিশেষ দল আছে। তবে একশ শতাংশ নিরাপত্তা বলে কিছু হয় না। আমাদের কাছে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাথমিকতা পাচ্ছে। আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। আশা করি এই টুর্নামেন্ট শান্তিপূর্ণ হবে।''
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ চলবে ১৪ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। ২৭ লাখ দর্শক ইউরো কাপ দেখবেন। প্রচুর মানুষ জার্মানির বাইরে থেকে আসবেন। জার্মানির ১০টি শহরে ৫১টি ম্যাচ হবে। সেই সব ম্যাচ মোট ২৭ লাখ মানুষ দেখবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ছবি: Michel Euler/AP/picture alliance
অন্য দেশ থেকেও
অন্য দেশ থেকে ৫৮০ জন পুলিশ অফিসার আসছেন। যে সব শহরে ম্যাচ হবে, তারা সেখানে নিরাপত্তার কাজে জার্মানির পুলিশকে সাহায্য করবেন। উপরের ছবিটি জার্মানির পুলিশের।
ছবি: RONALD WITTEK/EPA
বিশেষ নজর
জার্মানির ট্রেন স্টেশনগুলিতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। ট্রেনও বাড়তি নজরদারি থাকবে। জার্মানির সীমান্তেও বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। ১৯ জুলাই পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে।
ছবি: Annegret Hilse/REUTERS
চিন্তা ফুটবল গুণ্ডাদের নিয়েও
ফ্রেজা জানিয়েছেন, শুধু আইএসের মতো সংগঠনই নিরাপত্তার জন্য বিপদের কারণ নয়, ফুডবল গুণ্ডাদের নিয়েও তারা চিন্তিত। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সব ধরনের বিপদের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে ও তা মোকাবিলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ছবি: Imago/B. Draws
তারকাদের দেখতে
ইউরো ২০২৪-এর আরেক আকর্ষণ হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লুকা মডরিজ। রোনাল্ডোর বয়স ৩৯ ও লুকার ৩৮ বছর। বর্তমান ফুটবলে গতি, স্ট্যামিনা ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের শারীরিক সক্ষমতা থাকা দরকার। এই বয়সেও সেটা দেখাতে পারছেন এই দুই ফুটবল তারকা। তারা প্রমাণ করে দিয়েছেন, বয়স তাদের কাছে হার মেনেছে। ইউরো ২০২৪-এর অন্যতম আকর্ষণ তারা। হয়ত এটাই তাদের শেষ ইউরো কাপ। তাদের খেলা দেখতেও প্রচুর মানুষ আসবেন।