1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরো ২০২৪ কি টেকসই হতে পারবে?

৭ জুলাই ২০২৪

ইউরোপীয় ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব এখনও নির্ধারণ না হলেও এবারের আসর একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে৷

মানুয়েল নয়ার
ইউরোর আয়োজকরা কি জার্মানির মানুয়েল নয়ারের মতো 'সাসটেনেবেলিটি' নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধছবি: Frank Augstein/AP/picture alliance

তবে এবারের টুর্নামেন্ট ইতিহাসের ‘সবচেয়ে টেকসই' হওয়ার দাবি পূরণ করতে পারছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে৷

ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা এবারের আসরকে টেকসই করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা পূরণ করা সহজ নয়৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বড়সড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা মানেই কার্বন ফুটপ্রিন্ট, ইউরো ২০২৪ তার ব্যতিক্রম কিছু নয়৷

জার্মানির বিলেফেল্ড ইউনিভার্সিটির স্পোর্ট ম্যানেজমেন্ট এবং স্পোর্ট স্যোশিওলোজির অধ্যাপক পামেলা ভিকার বলেন, ‘‘আমি মনে করি খেলাধুলা তখনই পরিবেশবান্ধব হবে যখন কোনো ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থাকবে না৷''

সমাজে ইতিবাচক প্রভাবের বিষয়টিসামনে রেখে এই অধ্যাপক বলছেন, খেলাধুলার আয়োজনগুলো ‘পরিবেশগত ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই' করার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত৷

কিন্তু এটা কতটা সহজ? জার্মানির পরিবেশবিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও্যকো-ইনস্টিটিউট বলছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি ইউরোপ ২০২৪-এর চূড়ান্ত বাঁশি যখন বাজবে, ততক্ষণে এই ফুটবল আসর পাঁচ লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করবে৷ এই পরিমাণ এক লাখ ২০ হাজার গাড়ি এক বছরে যে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করে, তার সমান৷

এই কার্বন ফুটফ্রিন্টের ৮০ শতাংশ পরিবহণ থেকেইআসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আর এর দুই-তৃতীয়াংশ কার্বনের জন্য দায়ী করা হচ্ছে বিমান পরিবহণকে, যার মাধ্যমে খেলোয়াড় এবং ফুটবলপ্রেমীরা জার্মানিতে এসেছেন৷ অবশ্য, অগুণতি ফুটবলপ্রেমীকে বিমানের পরিবর্তে ট্রেনে চড়তে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা ছিল আয়োজক দেশ জার্মানির৷

মূল্য ছাড়ে ট্রেনমুখী করার চেষ্টা

জার্মানি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এবারের আসরে তাদের জাতীয় দল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পারতপক্ষে বিমান ব্যবহার করবেন না৷ জার্মানির এই প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ডও৷ মহাদেশীয় ট্রেন ও অভ্যন্তরীণ ট্রেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মিলে ফুটবলপ্রেমীদেরও ট্রেনমুখী করার উদ্যোগ নিয়েছে জার্মানি৷ এজন্য ‘ইন্টাররেল পাস ইউরো ২০২৪' নামের একটি বিশেষ টিকিটও বাজারে ছেড়েছে ইউরেল কর্তৃপক্ষ৷

ইউরেলের সিনিয়র বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার সিলভিয়া ফেস্তা বলেন বলেন, ‘‘ইন্টাররেল পাস ইউরো ২০২৪ হলো একটি বিশেষ পাস, একটি এক্সক্লুসিভ প্রোডাক্ট যা দিয়ে ম্যাচের টিকিট সংগ্রহের পাশাপাশি ইউরোপের ৩২টি দেশে রেলে আসা যাওয়া করা যায়৷''

এছাড়া, একজন ফুটবলপ্রেমী যেভাবেই জার্মানিতে আসুক না কেন, তার হাতে খেলার টিকিট থাকলেই দেশটির আঞ্চলিক গণপরিবহণে দিনে ১২ ঘণ্টা বিনামূল্যে ভ্রমণ করতে পারছেন৷

কার্বন মার্কেট ওয়াচ নামের একটি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের কার্বন মার্কেট বিশেষজ্ঞ বেনিয়া ফেকস বলেন, ‘‘আমি মনে করি, এটি সত্যি সত্যি একটি ভালো উদ্যোগ৷''

বার্লিন, হামবুর্গ এবং লাইপজিশসহ কিছু শহরে স্টেডিয়ামের কাছাকাছি পাবলিক পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই৷ এতে করে এসব শহরের খেলাগুলোর প্রতি মানুষ কিছুটা নিরুৎসাহিত হয়েছেন৷

ইউরোর ম্যাচের টিকিটধারীরা ছাড়ে রেল টিকিট পেতে পারেনছবি: Patrick Pleul/dpa/picture alliance

অবকাঠামো এবং জ্বালানি

টেকসই ফুটবল অবকাঠামোর দিকেও জোর দিচ্ছে উয়েফা৷ এর মধ্য দিয়ে ফুটবল অঙ্গনে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং ফ্লাডলাইটের ব্যবহার কমাতে চান তারা৷ পয়:নিষ্কাশনে দূষিত হয়নি এমন গৃহস্থ পানিকে পুনর্ব্যবহার উপযোগী করার কথাও ভাবা হচ্ছে৷

স্পোর্ট ম্যানেজমেন্ট এবং স্পোর্ট স্যোশিওলোজির অধ্যাপক পামেলা ভিকার ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘এই প্রধান ক্রীড়া আসরগুলোকে আরো টেকসই করতে হলে বিদ্যমান অবকাঠামো ও মাঠগুলো ব্যবহার করতে হবে৷''

এবারের আসরকে জমকালো করতে অবকাঠামো খাতে অনেক ব্যয় করেছে জার্মানি, যা আরো বহুদিন ব্যবহার করা যাবে এবং সুফল মিলবে৷ ২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সাতটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করেছিল কাতার৷ কার্বন মার্কেট ওয়াচের গবেষণা বলছে, এ কারণে ১৬ লাখ টন কার্বন নির্গমণ হয়েছে, যা ইউরো কাপের চলতি আসরের তিন গুণ৷

টেকসই ফুটবলে অর্থায়ন

প্রতি টন কার্বন নির্গমনের ক্ষতিপূরণ ২৫ ইউরো ধরে একটি কার্বন তহবিল তৈরি করেছে উয়েফা৷ ধারণা করা হচ্ছে, এই আসর থেকে এই তহবিলের পরিমাণ ৭০ লাখ ইউরো হবে৷ সেই অর্থ দিয়ে জার্মানির ফুটবল খাতে আরো বেশি টেকসই ও পরিবেশাবান্ধব জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করা হবে৷

এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন হার্টমুট স্টাল৷ তিনি বলেন, ‘‘জার্মানির ক্লাবগুলোকে এই তহবিল দেওয়া হবে৷ কারণ সেখানে নানা ধরনের সংস্কার দরকার৷ ক্লাবগুলোতে জ্বালানি সমস্যা একটি বড় ইস্যু৷''

সমালোচকেরা অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা৷ এবারের আসর থেকে অন্তত দুইশ কোটি ইউরো আয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ সেই তুলনায় ৭০ লাখ ইউরো খুব বড় কোনো অর্থ নয়৷

বেনইয়ামিন রেস্টলে/টিএম

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ