দক্ষিণ অ্যামেরিকার ইকুয়েডরে বড় বড় খামারে কলার চাষ চলছে৷ জাহাজে করে এই কলা যাবে ইউরোপে, জার্মানিতে৷ ওদিকে মাত্রাধিক কীটনাশক ব্যবহারের দাম দিচ্ছেন খামারকর্মীরা৷ সমাধান হলো অরগ্যানিক খামার৷
বিজ্ঞাপন
কলাবাগান, মানে কলা চাষের খামার৷ দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশ ইকুয়েডর-এর দক্ষিণে মাচালায় কলাচাষিদের বিভীষিকা হল সিগাটোকা নামের এক ধরনের ছত্রাক – বাংলায় আমরা যাকে ছাতা ধরা বলি৷ কলাগাছে ছাতা ধরা আটকানোর জন্য সপ্তাহে দু'-তিনবার করে বিমান থেকে ফাংগিসাইড বা ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হয়৷
ডারউইন পালাসিওস চারটি কলাবাগানের মালিক – দু'প্রজন্ম ধরে পালাসিওস পরিবার কলাচাষের খামার চালাচ্ছে৷ তাঁর অভিজ্ঞতায়, ‘‘সিগাটোকা নেগ্রা কোনো সাধারণ অসুখ নয়, যা সারানো যায়৷ রোগটার সাথে যোঝার পন্থা শিখতে হয়৷ এ এমন একটা ছত্রাক, যা তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা অনুযায়ী চিরকালই থাকবে৷ নিয়মিত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা দেখার চেষ্টা করি, রোগটা যাতে না ছড়ায় আর ফসলের ক্ষতি না করে; কলাগাছের পাতাগুলো যেন সুস্থ থাকে, যাতে ফলগুলোও সুস্থ থাকে৷''
সিগাটোকা একবার দেখা দিলে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব৷ ইকুয়েডরের আবহাওয়া একটু অন্যরকম হওয়ার দরুন এখানে সিগাটোকা এ-পর্যন্ত বিশেষ ক্ষতি করতে পারেনি৷ ইকুয়েডরের আবহাওয়া মধ্য অ্যামেরিকার অন্যান্য দেশের মতো অতোটা আর্দ্র ও বৃষ্টিপ্রধান নয় – সে সব দেশে ইকুয়েডরের চেয়ে তিনগুণ বেশি ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়৷
জার্মানিতে ইকুয়েডরের অরগ্যানিক কলা
05:32
ক্লোন করা কলাগাছ
কলাগাছের বংশবৃদ্ধি প্রজনন ছাড়াই ঘটে: মূল গাছটার পাশে ছোট ছোট স্ত্রী গাছ গজায়, যারা ন'মাসের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করে৷ পালাসিওস জানালেন, ‘‘সেরা গাছগুলো বেছে নেওয়া যায়৷ আমরা আবার সেগুলোকে ল্যাবরেটরিতে ক্লোন করতে দিই, যাতে তাদের জিন-গত বৈশিষ্ট্য এক হয়৷ তা থেকে আমরা নিশ্চিত হই যে, আমরা সবসময় সেরা ফসল পাব, সবচেয়ে বেশি ওজনের সেরা কলা গজাবে; যাতে আমরা কলার খামারে হেক্টর প্রতি সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করতে পারি৷''
প্রজনন ব্যতীত বংশবৃদ্ধির বিপদ হল এই যে, জিন-গত উপাদানের দিক দিয়ে গাছগুলো নিজেদের বদলাতে পারে না – অন্তত নিজে থেকে নয়৷ কাজেই প্রাকৃতিক শত্রুর হাত থেকে নিজেদের বাঁচানোর ক্ষমতা এই সব গাছের নেই৷ ওদিকে সারা বিশ্বে আজ প্রায় এক ধরনের কলাই অবশিষ্ট আছে: ক্যাভেন্ডিশ জাতের কলা, অথচ ঠিক এই কলারই আবার সিগাটোকা ছত্রাক প্রতিরোধের ক্ষমতা নেই৷
কীটনাশক, নাকি অরগ্যানিক?
ইকুয়েডরে কলার খামারগুলোর উপর যে ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ছড়ানো হয়, কলা যারা কেনেন অথবা খান, তাদের জন্য তা থেকে কোনো বিপদ নেই – বিপদ হল কলার খামারের কর্মীদের৷ আশার কথা: অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইকুয়েডরে অরগ্যানিক চাষ প্রসূত কলা ক্রমেই আরো বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ও দেশে কলার উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ আজ আসছে অরগ্যানিক চাষ থেকে৷
ফ্রেশ খাবার চেনার উপায়
খাদ্যে ভেজাল আমাদের জন্য এক বড় সমস্যা৷ পাশাপাশি কোন ফল, সবজি বা মাংস ফ্রেশ আর কোনটি পুরনো কিন্তু দেখতে ভালো তা বোঝাও কঠিন৷ এখানে দেখে নিন, সহজ কিছু পদ্ধতি৷
ছবি: Fotolia/Subbotina Anna
কলা
ফ্রেশ কলা কিছু দাগসহ উজ্জ্বল হলুদ রংয়ের হবে৷ যদি সেটা বেশি নরম কিংবা বাদামি রংয়ের হয়ে যায়, তাহলে না কেনাই ভালো৷ তবে হলুদের উপর কিছুটা সবুজের আভা থাকলে ভয়ের কিছু নেই৷ এরকম কলা দুয়েকদিনের মধ্যেই খাবার উপযোগী হয়ে যাবে৷
ছবি: Colourbox
বাঙ্গি
ফ্রেশ বাঙ্গির থাকবে সুঘ্রান এবং এটি দেখতে মজবুত হবে৷ তবে সেটির গায়ে যদি দাগ থাকে তাহলে সেটা না কেনাই ভালো৷
ছবি: Colourbox/Swan
কমলা
কমলা হবে উজ্জ্বল রঙের এবং ঘ্রাণ হবে মিষ্টি৷ যদি এই দু’টির অভাব দেখেন তাহলে না কেনাই ভালো৷
ছবি: Getty Images
পেঁয়াজ
পেঁয়াজের গঠন সুন্দর হলে এবং লেয়ারে দাগ কিংবা চিড় না থাকলে সেটা ভালো৷ তবে প্রথম লেয়ারের ভেতরের দিকটা যদি বিবর্ণ মনে হয়, তাহলে সে পেঁয়াজ না কেনাই ভালো৷
ছবি: Colourbox
মুরগি
মুরগির মাংস কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন সেটা থেকে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ আসছে কিনা৷ দুর্গন্ধ আছে এবং যে বক্সে রাখা হয়েছে তার নীচের দিকে তরলের আধিক্য থাকলে সেই মুরগির মাংস না কেনাই ভালো৷
ছবি: Colourbox
‘রেড মিট’
‘রেড মিট’ বা লাল মাংস বলতে আমরা সাধারণত গরু বা খাসির মাংসকেই বুঝি৷ এই মাংস যদি দেখতে কিছুটা বাদামি হয়ে যায় এবং পিচ্ছিল হয় তাহলে না কেনাই ভালো৷
ছবি: Fotolia/Phranc
মাছ
মাছ কেনার ক্ষেত্রে খেয়ার রাখবেন সেটির আঁশ উজ্জ্বল আছে কিনা৷ পাশাপাশি মাছের চোখ কতটা পরিষ্কার আছে সেটা দেখেও বোঝা যায় সেটি কতটা ফ্রেশ৷ দ্রষ্টব্য: ‘সিনোজ’ এবং ‘ফাইন ডাইনিং লাভারস’ ওয়েবসাইট দু’টি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/ZB
7 ছবি1 | 7
‘এল পিনকো'-র মতো অরগ্যানিক খামারগুলিতে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে৷ কৃষি প্রযুক্তিবিদ গনসালো মার্ক্স পেনিয়ারেতা আগে তিন বছর ধরে কীটনাশকের পাইকারি ব্যবসায় কাজ করেছেন৷ তারপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ পেনিয়ারেতা শোনালেন সে কাহিনি৷
‘‘কীটনাশক ইত্যাদি কৃষিকাজের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে, এমন একটা সংস্থায় আমি কাজ করতাম৷ আমার কাজের জায়গায় বিমান থেকে কীটনাশক ছড়ানো হতো৷ তা থেকে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি৷ কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে খামারকর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ একটা বয়সে পৌঁছানোর পর তাদের হাতের নখ পড়ে যায়, তাদের ক্যানসার হয়, মাথার চুল পড়ে যায়, দৃষ্টিশক্তি কমে যায়৷ অসহ্য লাগে৷''
কীটনাশকের ফলে স্বাস্থ্যজনিত ক্ষতির কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া শক্ত, কিন্তু এ অঞ্চলে সকলেই কাউকে না কাউকে চেনেন, যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে৷ অপরদিকে অরগ্যানিক খামারগুলিতে শুধুমাত্র অরগ্যানিক সার ও ব্যাকটেরিয়া বা অ্যালজির সার, কিংবা সিগাটোকা ছত্রাকের মতো শ্যাওলা দূর করার জন্য এক ধরনের বিশেষ তেল ব্যবহার করা হয়৷ পেনিয়ারেতা বললেন, ‘‘প্রথাগত খামারে রাতের অন্ধকারে হাঁটতে গেলেও কোনো অসুবিধে নেই, কেননা জমি একেবারে খালি, কোনো কিছু পড়ে নেই৷ কিন্তু অরগ্যানিক খামারে হেঁটে বেড়ালে আগাছা, কেঁচো, পিঁপড়ে ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যাবে – নানা ধরনের পোকামাকড়৷''
কলা সবাই চেনেন কিন্তু গুণাগুণ জানেন কি?
কলা শুধু ফিট থাকতে সাহায্য করে না, কলা মানুষকে সুন্দর করে এবং আনন্দিত থাকতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে৷এতে রয়েছে মিনারেল, আয়রন, ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ ৷ এসবের মিশ্রণ ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে
কলা খান, আনন্দে থাকুন
কলার অনেক গুণ রয়েছে৷ কলা শুধু ফিট থাকতে সাহায্য করে না, কলা মানুষকে সুন্দর করে এবং আনন্দিত থাকতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে৷ চলুন কলার গুণাগুণ সম্পর্কে আরো জানা যাক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘কলা’ ঝটপট এনার্জি দেয়
‘কলা’ কেন ফিট রাখে? কলাতে রয়েছে শর্করা, মিনারেল, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম৷ কলা খুব তাড়াতাড়ি শরীরে এনার্জি এনে দেয়৷ পটাশিয়াম শরীরের এনজাইমকে সক্রিয় রাখে এবং মাংসপেশিকে কোমল ও মসৃন করে নার্ভকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে৷ তাই অনেকে দিনের শুরুতেই একটি কলা খেয়ে ভালোভাবে দিন শুরু করেন৷ বিশেষ করে ছাত্রদের বেশ কাজে দেয় কলা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কলা মেজাজ ভালো করে দেয়
কলা এমন একটি ফল যা সারা বছর এবং সব দেশেই পাওয়া যায়৷ আমরা যে খাবার খাই তার পুষ্টিগুণের কারণে শরীর ভালো লাগা এবং ভারসাম্য রক্ষার নির্দেশ পায় সরাসরি মস্তিস্ক থেকে৷ কলা এ কাজটি করে খুবই দ্রুত, যার ফলে কলা খাওয়ার পর মেজাজ ভালো হতে খুব বেশি সময় লাগে না৷ এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁদের ঘুম থেকে ওঠার পর কিছুই খেতে ইচ্ছে করেনা, তাঁদের জন্য কলা খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কলাতে রয়েছে অনেককিছু
মিনারেল, আয়রন, ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ই’ সহ বেশ কয়েকটি ভিটামিন৷ এই সব কিছুর মিশ্রণ ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে৷ কলায় রয়েছে প্রচুর প্রোটিন এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ৮টি অ্যামিনো অ্যাসিড৷
ছবি: DW
কলা খেয়ে সুন্দর থাকুন
কলা শুধু শরীরের ভেতরকেই ভালো রাখে না, বাইরের সৌন্দর্যকেও বাড়িয়ে তোলে৷ কলা ছোট-বড় সবার জন্যই উপাদেয়৷ হলুদ রং-এর কলা এনার্জি এনে দেয় এবং পাকস্থলিকে সক্রিয় রাখতেও সাহায্য করে৷
ছবি: Fotolia/Sergey Nivens
কলা কি মোটা করে?
কলায় ক্যালোরি আছে এবং এটা মোটা করে – সম্পূর্ণ ভুল ধারণা৷ বরং কলা খেয়ে ওজন কমানো সম্ভব৷ জার্মানিতে কলা বিভিন্নভাবে খাওয়া হয়৷ যেমন কলা দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের কেক, কলার চিপস, মিল্কশেক, আইসক্রিম, বিস্কুট ইত্যাদি৷
ছবি: Deutsches Bananenmuseum
কলার সালাদ
কলা এবং ডালের সালাদ, কেমন লাগে খেতে না জানলেও দেখতে কিন্তু লোভনীয়ই মনে হচ্ছে! তাই না?
ছবি: Fotolia/Eva Gruendemann
জার্মানিতে কলার মিউজিয়াম
শিল্পী ব্যার্নহার্ড স্টেলমাখার ১৯৯১ সালের ২২শে জুন জার্মানির শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে কলার এই মিউজিয়ামটি তৈরি করেন৷ অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যম জার্মানিতে কলা সম্পর্কিত একমাত্র মিউজিয়ামটি সাজানো হয়েছে৷
ছবি: Deutsches Bananenmuseum
বিভিন্ন দেশ থেকে জার্মানিতে কলা আছে
কলার আদি জন্ম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপে, যা আজকের ইন্দোনেশিয়া হিসেবে পরিচিত৷ শীত প্রধান দেশ বলে জার্মানিতে কলা জন্মায় না বিভিন্ন দেশ থেকে জার্মানিতে আনা হয়৷ বলা বহুল্য, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিগত বছরে জার্মানির কোনো কোনো বাগানেও কলা গাছ দেখতে পাওয়া গেছে৷
9 ছবি1 | 9
পালাসিওস পদ্ধতি
‘আসিয়েন্দা মিদাহা'-য় ডারউইন পালাসিওস তাঁর নিজস্ব পদ্ধতি চালু করেছেন৷ কলাবাগানের এক একটা প্লটের ফসলের ওপর নিয়মিতভাবে নজর রাখা হয়: কাজেই পালাসিওস আরো কার্যকরিভাবে সার, পানি ও কলাগাছের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেন৷ এর ফলে অর্থের সাশ্রয় হয়৷ কীভাবে, পালাসিওস তা বর্ণনা করলেন: ‘‘কোন প্লটে কতো ফসল হয়েছে, তার সব খবর আমরা এখানে বসে পাই৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল কলার ওজন৷ কলার কাঁদি থেকে আমরা কলার বয়স আর সেটা কোনো প্লট থেকে এসেছে, তা বলে দিতে পারি – এছাড়া সেখানে যদি কোনো গোলমাল থাকে, তাও আমরা দেখতে পাই আর সময়মতো ব্যবস্থা নিতে পারি৷''
দেশি ফল কেন খাবেন?
বিদেশি পণ্য বা ফল বেশি ভালো – এ রকম একটা ধারণা অনেকেরই৷ আসলে দেশি ফলের যে কত পুষ্টিগুণ রয়েছে, সেটা হয়ত সেভাবে তাদের জানা নেই৷ তাই জেনে নিন কিছু দেশি ফলের পুষ্টিগুণের কথা, যেগুলো জার্মানিতেও আমদানী করা হয়৷
ছবি: Fars
‘আম’ কে না ভালোবাসে?
আম পছন্দ করে না এমন বাঙালি আছে নাকি? আনন্দের কথা যে জার্মানিতেও আজকাল আম পাওয়া যায়৷ আমাদের দেশীয় আম জার্মানিতে আসে আমের ঋতুতে আর সারা বছর পাওয়া যায় অন্যান্য দেশের আম৷ আমে রয়েছে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন ‘ই’, ‘এ’, ‘সি’ এবং পেকটিন৷ আম যেমন পেট পরিষ্কার রাখে, তেমনি ত্বক সুন্দর করার মতো আরো নানা উপকারে আসে৷
ছবি: Fotolia/DragonImages
পেয়ারা
খানিকটা অবহেলিত ফল পেয়ারায় রয়েছে আঁশ, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রনসহ নানা কিছু৷ পেয়ারার রস খুবই শক্তিদায়ক এবং এটা হৃদস্পদন ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে৷ পেয়ারার ভিটামিন ‘এ’ যেমন দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, তেমনি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ‘সি’ মস্তিষ্ককে সচল রাখে৷ শুধু তাই নয়, পেয়ারা বিভিন্ন ধরণের ক্যানসারকে প্রতিরোধ করতেও ভূমিকা রাখে, দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্যকেও৷
ছবি: DW/M. Mamun
লিচু
লিচু শুধু দেখতেই সুন্দর আর লোভনীয় নয়, খেতে ভীষণ মজার এই ফল কিন্তু বেশ কয়েক বছর থেকে জার্মানিতে আমদানী করা হচ্ছে৷ এমনকি ডয়চে ভেলের ক্যান্টিনেও ইদানিং লিচু রাখা হয়৷ লিচুতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, আঁশ এবং প্রচুর ক্যালশিয়াম৷ লিচু হজমে সাহায্য করে থাকে৷ ক্যালশিয়াম থাকায় লিচু নারীদের জন্য বেশ উপকারী৷
ছবি: DW/M. Mamun
কলা
সহজলভ্য ফল কলা সারা বছরই পাওয়া যায়, প্রায় সব দেশেই৷ কলাতে রয়েছে ক্যালশিয়াম, অ্যামিনো অ্যাসিড, আয়রন ও বিভিন্ন ভিটামিন৷ কলা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি দেয় বলে খেলোয়াড় বা ছাত্রদের কলা খেতে দেখা যায়৷ এছাড়া কলা মানসিক চাপ কমিয়ে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখে৷ কলার পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় নাস্তায় অন্য কিছু না খেয়ে শুধু একটা কলা খেলেই উপকার পাবেন, বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা৷
ছবি: Colourbox
পেঁপে
কমলা রঙের পাঁকা পেপে মুখে রুচি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে৷ আমদানী করা দেশি ফল পেঁপে আজকাল প্রায় সারা বছরই জার্মানিতে পাওয়া যায়৷ পেঁপের পুষ্টিগুণের কারণে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে৷ একটা ভালো পেঁপের দাম জার্মনিতে ৬-৭ ইউরো, অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ছয় থেকে সাতশ’ টাকার মতো৷
ছবি: Colourbox/Christian Fischer
খেজুর
খেজুর কিন্তু শুধু রোজার মাসে খাওয়ার জন্য নয়, এর পুষ্টিগুণের কারণে সারা বছরই খাওয়া উচিত খেজুর৷ খেজুর শরীরে ঝটপট শক্তি এনে দেয় এবং এ ফল হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী৷ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও পটাশিয়াম৷ নিয়মিত খেজুর খেলে নাকি উচ্চ রক্তচাপও কমে যায়৷
ছবি: Colourbox
বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল
জার্মানিতে দেশের নানারকম ফল পাওয়া গেলেও কাঁঠাল দেখা যায় না৷ একমাত্র ব্যাতিক্রম বাংলাদেশি বা ভারতীয় দোকান৷ সেখানে হঠাৎ করেই চোখে পড়ে এটি৷ ছোট্ট এক টুকরো কাঁঠালের দাম এখানে অন্তত ১০ ইউরো৷ এতে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেশিয়ম সহ বহুকিছু৷ কাঁঠাল চোখের জন্য তো ভালোই, এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায় কাঁঠাল৷
ছবি: picture alliance/Arco Images
গ্রীষ্মের ফল তরমুজ
তরমুজে রয়েছে প্রয়োজনীয় নানা ভিটামিন, পটাশিয়াম ও মিনারেল৷ তরমুজের রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও লাইকোপেন নামের উপাদান প্রস্টেট ক্যানসার, অন্ত্রের ক্যানসারসহ অন্যান্য নানা ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়৷ এছাড়া যৌন ক্ষমতাও বাড়ায় তরমুজ৷ জার্মানিতে গরমকালে প্রচুর তরমুজ পাওয়া যায়, তবে তার বেশিরভাগই আসে তুরস্ক থেকে৷
ছবি: Prakash Singh/AFP/Getty Images
হৃদরোগকে দূরে রাখে বেদানা
বেদানায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট৷ তাই প্রতিদিন ছোট এক গ্লাস বেদানার রস পান করলে হৃদরোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব৷ জার্মানিতে কিছু দিন আগে পর্যন্তও বেদানা দেখা যেত না৷ তবে আজকাল প্রায় প্রতিটি ফলের দোকানেই আমদানী করা বেদানা পাওয়া যায়, যদিও সেগুলোর বেশ ভালোই দাম৷
ছবি: Fars
9 ছবি1 | 9
এবার কলাগুলোকে কনটেনার জাহাজে করে মাচালা থেকে জার্মানির হামবুর্গে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে৷ কলা সবুজ থাকাকালীনই সেগুলোকে চালান দেওয়া হয়; পরে অকুস্থলে ইথিলেন সহযোগে সেগুলোকে পাকানো হয়৷
গবেষণা চলেছে৷ সিগাটোকা ছত্রাক পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে সক্ষম, এমন কলাগাছ নাকি তৈরি হতে চলেছে, যাতে কীটনাশক ব্যবহারের কোনো প্রয়োজনই না পড়ে – অবশ্য অন্য কোনো রকমের বিপদ দেখা দেবার আগে৷