ইটালিতে শুক্রবার নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে৷ পুপলিস্ট এই সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেয়া ব্যয় কমানোর পরামর্শের বিরোধী৷ বরং তারা দেশটির দরিদ্রতম ব্যক্তিদের মাসিক বেতন দিতে চায়৷
বিজ্ঞাপন
গত মার্চ মাসে ইটালিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এরপর কয়েকদফা আলোচনা শেষে জাতীয়তাবাদী দল ‘দ্য লিগ' ও প্রচলিত শাসনব্যবস্থাবিরোধী দল ‘ফাইভ স্টার মুভমেন্ট'-এর মধ্যে জোট সরকার গঠিত হয়েছে৷ এতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আছেন অল্প পরিচিত আইনের অধ্যাপক জুসেপে কন্টে৷
‘দ্য লিগ'-এর প্রধান মাটেও সালভিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন, আর ‘ফাইভ স্টার মুভমেন্ট'-এর লুইজি ডে মেও হচ্ছেন অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী৷
ইটালির নিস্ক্রিয় অর্থনীতি সচল করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যয় সংকোচ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে চায় নতুন সরকার৷ পরিবর্তে তিনি তারা দেশের সবচেয়ে গরিব মানুষের জন্য মাসিক একটি আয়ের ব্যবস্থা করতে চায়৷ এছাড়া দুই স্তর বিশিষ্ট করব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করেছে৷ তবে দু'টি প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ব্রাসেলস৷ কারণ ইতিমধ্যে দেশটির ঋণের পরিমাণ ২.৩ ট্রিলিয়ন ইউরোতে দাঁড়িয়েছে৷
ইউরোপে বাংলাদেশিদের আশ্রয় পাওয়ার হার বাড়ছে
ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান বিষয়ক সংস্থা ‘ইউরোস্ট্যাট’-এর গত ১০ বছরের হিসেব বলছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের আবেদন সফল হওয়ার হার বাড়তির দিকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. de Sakutin
তিন ধরনের সুরক্ষা
শরণার্থী, হিউম্যানিটারিয়ান ও সাবসিডিয়ারি – এই তিন ক্যাটাগরিতে আশ্রয় দেয়া হয়ে থাকে৷ যাঁরা শরণার্থী স্ট্যাটাসের যোগ্য নন, কিন্তু দেশে ফিরে গেলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন, তাঁদের সাবসিডিয়ারি সুরক্ষা দেয়া হয়৷ আর অসুস্থতা ও অভিভাবকহীন শিশুদের মানবিক (হিউম্যানিটারিয়ান) বিবেচনায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/R. Schlesinger
২০১৭
বাংলাদেশি নাগরিকদের পক্ষ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গতবছর ১৬,০৯৫টি আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে৷ আর একই সময়ে বাংলাদেশিদের করা ২,৮৩৫টি আবেদন সফল হয়েছে৷ শতকরা হিসেবে সেটি ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ৷ জার্মানিতে আবেদন পড়েছে ২,৭২৫টি৷ সফল হয়েছে ৩১৫টি৷ এমনিভাবে অন্য কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান এরকম – যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,৬৩০; সফল ৬৫), ইটালি (আবেদন ৫,৭৭৫; সফল ১,৮৮৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৪,১১৫; সফল ৪৪০)৷
ছবি: imago/Cronos
২০১৬
বাংলাদেশিরা ১৪,০৮৫টি আবেদন করেছেন৷ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে ২,৩৬৫টি৷ অর্থাৎ সফলতার হার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ৬৬৫; সফল ১১০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,৪০৫; সফল ৮০), ইটালি (আবেদন ৬,২২৫; সফল ১,৬১০) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৪,১১০; সফল ৪৪০)৷
ছবি: picture alliance/dpa/D. Kalker
২০১৫
সেবছর সফলতার হার ছিল ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ৷ আবেদন পড়েছিল ১১,২৫০টি৷ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ১,৭৮৫টি৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ২৬৫; সফল ৩৫), যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,০১৫; সফল ১২০), ইটালি (আবেদন ৫,০১০; সফল ১,২২৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৫৬০; সফল ৩১৫)৷
ছবি: Imago/Frank Sorge
২০১৪
আবেদন ৭,৫৮০টি৷ সফল ৭৮৫৷ শতকরা হার ১০ দশমিক ৩৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ৪৬৫; সফল ৫০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৭০০; সফল ৭৫), ইটালি (আবেদন ৭৩৫; সফল ৩১৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৮৭০; সফল ২৬৫)৷
ছবি: Megan Williams
২০১৩
সফলতার হার ৭ দশমিক ১ শতাংশ৷ আবেদন ৮,৩৩৫৷ সফল ৫৯৫৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ২৫০; সফল ২০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৮৩০; সফল ৫৫), ইটালি (আবেদন ৫৯০; সফল ৩০০) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৬১৫; সফল ১৪৫)৷
ছবি: picture alliance/robertharding/A. Robinson
২০১২
সফলতার হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ১৯০; সফল ১০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৮০০; সফল ৫০), ইটালি (আবেদন ১,৪১০; সফল ১,০৪৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৭৫৫; সফল ৮৫)৷
ছবি: Imago/Rainer Weisflog
২০১১
সফলতার হার ২ দশমিক ৮ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ১১০; সফল ০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৪৮০; সফল ৪০), ইটালি (আবেদন ৮৬৫; সফল ৬৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৭৭০; সফল ৪৫)৷
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS.com/M. Cohen
২০১০
সফলতার হার ৪ দশমিক ৮ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ১০৫; সফল ০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৪৬০; সফল ৫৫), ইটালি (আবেদন ২১৫; সফল ৪০) এবং ফ্রান্স (আবেদন ২,৪১০; সফল ২৫)৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Uhlemann
২০০৯
সফলতার হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ৪০; সফল ০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৩৭৫; সফল ৪৫), ইটালি (আবেদন ৮৮৫; সফল ৮৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ১,৭৮০; সফল ৩৫)৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. de Sakutin
২০০৮
সফলতার হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ৷ কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান – জার্মানি (আবেদন ৪০; সফল ০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ৩৯৫; সফল ৯৫), ইটালি (আবেদন ৯৫০; সফল ৫০) এবং ফ্রান্স (আবেদন ১,৬৬০; সফল ৩৫)৷
ছবি: picture alliance/dpa/D. Kalker
৩২ দেশের হিসাব
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ সদস্যরাষ্ট্র এবং ‘ইউরোপিয়ান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট’ বা ইএফটিএ-এর অন্তর্ভুক্ত আইসল্যান্ড, লিখটেনস্টাইন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের পরিসংখ্যান অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউরোস্ট্যাট৷ আরও পরিসংখ্যান জানতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Megan Williams
12 ছবি1 | 12
ইটালির মন্থর অর্থনীতির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যয় সংকোচ নীতিকেই দায়ী মনে করে নতুন সরকার৷ তবে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার দুরবস্থার জন্য ইইউকে দোষারোপ না করে দুর্নীতি কমিয়ে আরও বেশি কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন৷
এদিকে, জার্মানি বলেছে, তারা ইটালির নতুন সরকারের সঙ্গে ‘খোলামন' নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী৷ ‘‘আমরা নতুন সরকারের সঙ্গে খোলামন নিয়ে যোগাযোগ করব এবং ভালো সহযোগিতা নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব,'' বলেন জার্মান সরকারের প্রধান মুখপাত্র স্টেফেন সাইবার্ট৷
নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনি ইতিমধ্যে অভিবাসনের ‘ব্যবসা' বন্ধ করতে, মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে ও অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করার আহ্বান জানিয়েছেন৷