‘বেওয়াচ' ধারাবাহিকের কল্যাণে সমুদ্র সৈকতে লাইফগার্ডের পেশা সম্পর্কে নানা ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল৷ কিন্তু বাস্তবে সেই কাজ যে কতটা কঠিন, ইটালির এক সৈকতের লাইফগার্ডরা তা তুলে ধরছেন৷
বিজ্ঞাপন
দানিয়েল জার্জায়া লাইফগার্ড হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন৷ রিমিনির সমুদ্র সৈকতে তিনি কাজ করেন৷ ২০ বছর বয়সি এই তরুণের জন্য এটাই প্রথম মরসুম৷ তিনি নিজের কাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন৷ গত কয়েক মাসে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে প্রশিক্ষণ নিয়ে পেশাগত লাইসেন্স পেয়েছেন৷
এমন পেশাকে ঘিরে রোমাঞ্চ সত্ত্বেও ইটালি যথেষ্ট সংখ্যক লাইফগার্ড নিয়োগ করতে হিমসিম খাচ্ছে৷ চলতি বছর প্রশিক্ষণের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১০০ ঘণ্টা করার ফলেই মূলত এমন অবস্থা দেখা যাচ্ছে৷
ইটালির লাইফ সেভিং ফেডারেশন চলতি বছরের গ্রীষ্মে লাইফগার্ডের ঘাটতি সম্পর্কে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল৷ কমপক্ষে দশ শতাংশ ঘাটতির পূ্র্বাভাসও দিয়েছিল৷ দানিয়েলের মতে, সেটা খুবই উদ্বেগের বিষয়৷ তিনি মনে করেন, ‘‘আমাদের কাজের উপর জীবন-মরণ নির্ভর করে৷ সমুদ্রের ধারে কাজ করতে হলে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়, ঝুঁকিও নিতে হয়৷ দূরত্ব আন্দাজ করতে হয়, সব বয়সের মানুষের উপর নজর রাখতে হয়৷ খুবই কঠিন কাজ৷ অনেক তরুণ-তরুণীর মনে হয়তো ভয় দেখা দিচ্ছে৷ কারণ ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানো সহজ কাজ নয়৷ প্রত্যেকটি পদক্ষেপ সঠিক হতে হবে৷''
তৃতীয় প্রজন্মের লাইফগার্ড হিসেবে আলব্যার্তো বাজিনিও সে বিষয়ে অবগত৷ তিনি প্রায় ২৯ বছর ধরে রিমিনি সৈকতে কাজ করছেন৷ তাঁর মতে, লাইফগার্ডদের উপর চাপ বাড়ছে৷ ফলে পরের প্রজন্ম আর সেই কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে না৷ আলব্যার্তো বলেন, ‘‘রেসকিউয়ার হিসেবে আপনি যে সহায়তা দেন, আইনত সেটা আপনার দায়িত্ব৷ সমুদ্রের ধারে সেটা দ্রুত জীবন-মরণের বিষয় হয়ে উঠতে পারে৷ তরুণ লাইফগার্ডরা পরীক্ষা পাশ করার পর তাই সৈকতের বদলে সুইমিং পুলে কাজ করতে পছন্দ করেন৷''
আলব্যার্তো নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের সহকর্মীদের যেভাবে সম্ভব সাহায্য করেন৷ তাঁর মতে, ‘‘লাইফগার্ড হওয়া একটা মিশন৷ মানুষ সব সময় ভাবে, এরা তো শুধু সমুদ্রের ধারে শুয়ে রোদ পোয়ায়, অনেক সুন্দরী নারী দেখে৷ কিন্তু সেটা মোটেই সত্য নয়৷ এই পেশা বেছে নিলে অনেক দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়৷ কাঁধের উপর বিশাল বোঝা আসে৷''
গত বছরের গ্রীষ্মে রিমিনির লাইফগার্ডরা ৭৫ জন মানুষকে সমুদ্রে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন৷ বিচ অপারেটর মাউরো ভানি বলেন, ‘‘নতুন লোক পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে৷ ছাত্ররা আগে গ্রীষ্মকালে সৈকতে কিছু কাজ করে নিজেদের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাড় করতো৷ কিন্তু আজকাল জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত তাদের পরীক্ষা থাকে, সেপ্টেম্বরের শুরুতেও থাকে৷ তাই তাদের পড়াশোনা করতে হয়, কাজ করতে পারে না৷''
দানিয়েল ফুল টাইম কাজ করেন৷ সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি খুশি বলেই মনে হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা এই কাজ করে, তারা জানে জমি ও পানিতে কী করতে হয়৷ আমি শুধু এই পেশা বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারি৷''
গুস্তাভ হোফার/এসবি
যে ১০টি কারণে আপনারও ইটালিতে যাওয়া উচিত
ইউরোপীয় অতীত; স্থাপত্য ও চিত্রকলা; ভেনিস, ফ্লোরেন্স, রোমের মতো শহর, অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য, সমুদ্রসৈকত – কি নেই এই আশ্চর্য দেশটিতে!
ছবি: picture-alliance/robertharding/N. Clark
ডলোমাইট্স, ইটালির আল্প্স
দক্ষিণ-পূর্ব ইটালির এই চুনাপাথর পর্বতমালা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যে কোনো পর্যটককে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখে৷ গোটা এলাকাটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট৷ এখানে গ্রীষ্মে হাইকিং, সাইক্লিং অথবা বেস জাম্পিং, শীতকালে স্কি করা যায়৷
ছবি: Fotolia/Krasnevsky
পাহাড়ের কোলে হ্রদ...
...আর হ্রদের গা ঘেঁষে বাগান ঘেরা প্রাসাদ৷ ইংরেজ রোম্যান্টিক কবি শেলি কোমো হ্রদের ধারে এমনই একটি ‘ভিলা’ কিনেছিলেন৷ উত্তর ইটালির এই সব হ্রদ আর লাগোয়া জনপদে টুরিস্টদের না থেমে উপায় নেই৷
ছবি: Picture-alliance/P. Barritt
শপিং করতে হলে যেতে হবে মিলান
ইটালীয় ফ্যাশন দেখতে চান তো মিলানের দ্বিতীয় ভিত্তোরিও এমানুয়েল মল-এ চলে আসুন৷ এই শপিং মলটি খোলা হয় ১৮৭৭ সালে! ভ্যালেন্তিনো, ভেরসাচে, প্রাদা ও আরমানি-র মতো বড় বড় লেবেলের হেডকোয়ার্টার্স এই মিলান শহরে৷
ছবি: Getty Images/V. Z. Celotto
পৃথিবীর আশ্চর্যতম শহর ভেনিস
রাস্তার বদলে খাল, দু’ধারে গথিক প্রাসাদ, খালের জলে ভাসছে গন্ডোলা – আর কার্নিভালের মরশুম হলে প্রাচীন সব সাজগোজ আর ভেনিসের সুবিখ্যাত মুখোশের ভিড়৷ সারা দুনিয়ার মানুষ ভেনিসে আসার স্বপ্ন দেখে৷ প্রতিবছর সে স্বপ্ন সফল করেন লক্ষ লক্ষ পর্যটক৷
ছবি: picture alliance/Robert Harding World Imagery
মিকেলাঞ্জেলোর শহর ফ্লোরেন্স
পিয়াৎসালে মিকোলাঞ্জেলো চত্বর থেকে আর্নো নদীর ধারে অবস্থিত গোটা শহরটিকে দেখা যায়৷ রেনেসাঁসের জন্মই যে শহরে, তার মধ্যমণি হলো ব্রুনেলেস্কির গম্বুজ দেওয়া ডুওমো গির্জা৷ এই শহরেই রয়েছে মিকেলাঞ্জেলোর ১৭ ফুট উঁচু শ্বেতপাথরের ডেভিড মূর্তি৷
ছবি: Picture-alliance/D. Kalker
টাস্কানির আঙুরখেত
মধ্য ইটালির এই অঞ্চলে ‘কিয়ান্তি’-র মতো নানা নামকরা ওয়াইন তৈরি হয়৷ তবে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য টাস্কানির নিজস্ব, সেই সঙ্গে রয়েছে সিয়েনা বা পিসার মতো বিশ্ববিখ্যাত শহরের টান৷ পিসার হেলানো টাওয়ারের কথা মনে আছে তো?
ছবি: Picture-alliance/Arco Images/J. Moreno
‘সব পথ যেখানে গিয়ে শেষ হয়’
রোম আজও ইটালির রাজধানী৷ অপরদিকে পোপের বাসও এখানে, ভ্যাটিকানে (ছবিতে সেন্ট পিটার্স ক্যাথিড্রাল)৷ পর্যটকরা রোমে আসেন দু’ হাজার বছর আগের রোমক সভ্যতার নিদর্শন দেখতে: কলোসিয়াম, প্যান্থিওন, রোমান ফোরাম৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/N. Clark
পিৎসা মার্গেরিটার জন্ম যেখানে
নেপলসের পিৎসা নির্মাতা রাফায়েলো এস্পোসিতো ১৮৮৯ সালের ১১ই জুন তারিখে এই পিৎসার রেসিপিটি সৃষ্টি করেন ইটালির রানি, মার্ঘেরিতা অফ স্যাভয়-এর সম্মানে৷ আজ সেই পিৎসা দুনিয়ার সর্বত্র এবং বিশেষ করে কচিকাঁচাদের ফেবারিট৷
ছবি: picture alliance / Pacific Press
আমাল্ফি উপকূল
সাগরের ধার ঘেঁষে পাহাড়, মাঝেমধ্যে নেমে এসেছে একটি ঝর্না৷ কোন সুদূর অতীতে সেই পাহাড়ের গা আঁকড়ে গড়ে উঠেছে একটির পর একটি জেলেদের গ্রাম৷ আজ দেখলে মনে হবে যেন কোনো চিত্রকর সোজা পাহাড়ের গায়ে ছবি আঁকার চেষ্টা করেছিলেন৷
ছবি: Samaneh
সিসিলি বলতে শুধু মাফিয়া বোঝায় না
না বেশি ঠান্ডা, না বেশি গরম, সিসিলি সারা বছর ধরে পর্যটকদের টানে৷ পালের্মো, তাওরমিনা বা সিরাকিউজের মতো শহরে যদি মন না মানে, তাহলে আছে মাউন্ট এটনা, ইউরোপের ‘জাগ্রত’ আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে অন্যতম!