রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে লিখতে গিয়েও মনে পড়ে যাচ্ছে আগের আসরে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে জার্মানির চতুর্থ বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি৷ আরো বেশি করে হানা দিচ্ছে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হারের লজ্জা, অপমান এবং কান্না৷
বিজ্ঞাপন
এক এক করে বল ঢুকছে ব্রাজিলের জালে, গোলকিপার জুলিও সিজার বল কুড়িয়ে আনতে আনতে ক্লান্ত৷ বলের বাঁক বুঝতে ভুল করে পড়ে গেলেন, হলো সাত নম্বর গোল৷ সিজার পড়েই রইলেন মাটিতে৷ ডেভিড লুইসের দু'চোখে তখন শ্রাবণধারা৷ গ্যালারির হলুদ সর্ষে ক্ষেত অকস্মাৎ ঝড়ে লন্ডভণ্ড৷ জার্মানির জয়োৎসবের পাশে ব্রাজিলের এই কান্নার ছবি কোনোদিনই মুছে যাওয়ার নয়৷
আর ঠিক এই ছবিটা যখন চোখে ভাসে, আমি চলে যাই প্রায় দুই যুগ পেছনে, যেখানে আমার সামনে বসে থাকেন বাংলাদেশের সাবেক জার্মান ফুটবল কোচ অটো ফিস্টার, যিনি বলেছিলেন, জার্মান ফুটবলের আলাদা একটা ধারা আছে ঠিকই, কিন্তু জার্মানরা ব্রাজিল ফুটবলেরই সৌন্দর্য পিয়াসী৷ ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ-জার্মানি সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তিতে বাংলাদেশে কাজ করতে এসেছেন অটো ফিস্টার৷ ‘হাইপ্রোফাইল’ কোচ৷ তাঁকে বলা হয় ঘানার আধুনিক ফুটবলের জনক৷ আমার সংবাদিক-সত্তা ভবিষ্যতে অনেক লেখালেখির খোরাকের জন্য ফিস্টারের ঘনিষ্ঠতা দাবি করেছিল৷ সে জন্যই বলেছিলাম, ‘‘আমি জার্মান ফুটবলের খুব ভক্ত৷ যে যা-ই বলুক, হার না মানা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কীভাবে জিততে হয়, এটি শেখার জন্য জার্মানির চেয়ে আদর্শ দল আর হয় না৷’’ আমার চোখে ফিস্টারের চোখ৷ মুখে মৃদু হাসি৷ ওপরচালাকিটা ধরে ফেলেছেন৷ যা উচ্চারণ করলেন তাতে ব্রাজিল ফুটবলের জন্য তাঁর শ্রদ্ধার ফুলগুলো চিরসজীব, ‘‘পাপা, আমি ভালোবাসি ব্রাজিলের ফুটবল৷ শুধু আমিই নই, বেশির ভাগ জার্মানই৷ কোনো একদিন আমরা ব্রাজিলের মতো খেলতে পারবো, সেই স্বপ্ন আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়৷’’
জার্মানির বিশ্বকাপ দলে যারা আছেন
কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই জার্মানির দলটি সাজিয়েছেন৷ রাশিয়াতে লড়াইয়ের জন্য যে দল তিনি প্রস্তুত করেছেন, সেখানে পুরনোদের সঙ্গে রয়েছে কিছু নতুন মুখ৷ চলুন দেখে নেয়া যাক প্রাথমিক দলটি৷
ছবি: picture-alliance/ZB
মানুয়েল নয়ার
বিশ্বকাপ শুরুর আগে কি জার্মানির সেরা গোলরক্ষক পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন? ইনজুরির কারণে নয়ার লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকলেও জার্মান কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ তাঁর অধিনায়ককে ঠিকই দলে রেখেছেন৷
<br/>
<br/>
আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৪, গোল: ০, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/ZB
মার্ক আন্দ্রে ট্যার স্টেগেন
নয়ারের অনুপস্থিতিতে এফসি বার্সেলোনার প্রধান গোলরক্ষক ট্যার স্টেগেন জার্মান জাতীয় দলের গোলরক্ষকের ভূমিকা পালন করেন৷ জার্মানির বিশ্বকাপ দলেও তিনি আছেন দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৯ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: Reuters/G. Dukor
কেভিন ট্রাপ
যেহেতু এখনো মানুয়েল নয়ারের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া নিশ্চিত নয়, তাই চতুর্থ গোলরক্ষক হিসেবে কেভিন ট্রাপকে দলে রেখেছেন জার্মান কোচ৷ প্যারিস সঁ জার্মেইর এই গোলরক্ষকের আন্তর্জাতিক বড় ম্যাচে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা তেমন একটা নেই৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৩ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/SvenSimon/J. Kuppert
জেরোম বোয়াটেং
গত মার্চে ইনজুরির কবলে পড়ায় বোয়াটেংয়ের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু জার্মান দলের রক্ষণভাগের এই বিশ্বস্ত খেলোয়াড় আশাবাদী ছিলেন এবং দলের রাশিয়া যাত্রায় শরিক হতে পেরেছেন৷
<br/> <br/>আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭০ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture alliance /Sven Simon
মাটস হুমেলস
জার্মানির রক্ষণভাগের আরেক শক্তি মাটস হুমেলস এফসি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন৷ ল্যোভের কাছে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন হুমেলস৷ <br/> <br/>আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৬৩ গোল: ৫ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ১ বার
ছবি: picture alliance/sampics/S. Matzke
আন্টোনিও রুডিগার
রক্ষণভাগের দুই খেলোয়াড়ের ব্যাকআপ হিসেবে দলে রয়েছেন এফসি চেলসি’র আন্টোনিও রুডিগার৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৩ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
নিকলাস শ্যুলে
বায়ার্নের তরুণ এই খেলোয়াড় প্রাথমিক দলে জায়গা পেলেও রাশিয়ার বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৯ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/AA/A. Nasyrov
ইওস্যুয়া কিমিশ
রক্ষণভাগের এই খেলোয়াড় মধ্যমাঠেও বেশ পারদর্শী৷ তবে তাঁর চূড়ান্ত অবস্থান কী হবে তা ঠিক করবেন ল্যোভ৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৭ গোল: ৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/T. Eisenhuth
ইওনাস হেক্টর
লেফট-ব্যাকের এই খেলোয়াড়ের এফসি কোলনের সঙ্গে মৌসুমটা খুব একটা ভালো কাটেনি৷ ইনজুরির কারণেও ভুগেছেন তিনি৷ তা সত্ত্বেও দলের অন্যতম ভরসা তিনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৩৬ গোল: ৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/Gladys Chai von der Laage
মার্ভিন প্লাটেনহার্ড্ট
ল্যোভের কাছে হেক্টরের বিকল্প হচ্ছে প্লাটেনহার্ড্ট৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৬ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/sampics/S. Matzke
মাটিয়াস গিন্টার
২০১৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন সদস্য মাটিয়াস গিন্টার৷ তবে সেবার একবারও মাঠে নামা হয়নি তাঁর৷ রক্ষণভাগের এই খেলোয়াড় এবার দলে সুযোগ পাওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন অনেকে৷ বোরুসিয়া ম্যুনশেনগ্লাটবাখের হয়ে তাঁর মৌসুমটা ভালো কাটেনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৭ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ১ বার
ল্যোভের অন্যতম পছন্দের এই খেলোয়াড় মধ্যমাঠে জার্মানির অন্যতম আস্থা৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৩ গোল: ৭ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture alliance/dpa/M. Becker
টোনি ক্রুস
খেদিরার মতো টনি ক্রুসও মধ্যমাঠের এক চমৎকার খেলোয়াড়৷ বিশেষ করে সতীর্থদের পাস দেয়ায় বিশেষ খ্যাতি রয়েছে তাঁর৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৮২ গোল: ১২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/GES/T. Eisenhuth
সেবাস্তিয়ান ব়্যুডি
বায়ার্নের এই খেলোয়াড় বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারদর্শী৷ তাই দলে তাঁর গুরুত্ব অনেক, যদিও বায়ার্নের হয়ে মৌসুমটা খুব একটা ভালো কাটেনি তাঁর৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৪ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture alliance/dpa/GES/M. I. Güngör
ইল্কে গ্যুনডোগান
গত বিশ্বকাপ মিস করেছিলেন ব্যাক ইনজুরির কারণে৷ আর দু’বছর আগে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে পারেননি লিগামেন্টে সমস্যার কারণে৷ এবার অবশ্য পুরোপুরি ফিট তিনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৪ গোল: ৪ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES-Sportfoto
মেসুট ও্যজিল
আর্সেনালের এই খেলোয়াড়ের বলের উপর নিয়ন্ত্রণ খুবই ভালো৷ নিজের পজিশনে পোক্ত তিনি৷ কিন্তু বড় ম্যাচে তাঁকে ঠিক খুঁজে পাওয়া যায় না৷ তাসত্ত্বেও ল্যোভ আস্থা রাখছেন ও্যজিলের উপর৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৮৯ গোল: ২২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Maurer
টোমাস ম্যুলার
‘‘ম্যুলার সবসময়ই খেলেন,’’ বলেছেন বায়ার্ন কোচ ফান গাল৷ জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য৷ ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করা এই খেলোয়াড় এবারও চমক দেখাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৯০ গোল: ৩৮ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/S. Simon
মার্কো রয়েস
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ইনজুরির কারণে৷ তবে এবার বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার প্রত্যাশায় রয়েছেন জার্মানির আক্রমণভাগের তারকা মার্কো রয়েস৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৯ গোল: ৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/Rauchensteiner
ইউলিয়ান ড্রাক্সলার
পিএসজি’র এই খেলোয়াড় জার্মানির জাতীয় দলের মূল এগারোতে নিজেকে দেখতে মরিয়া৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৪২ গোল: ৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/M. I. Güngör
লিওন গোরেৎসকা
মধ্যমাঠের খেলোয়াড় লিওন গোরেৎসকা শালকের সঙ্গে চমৎকার এক মৌসুম কাটিয়েছেন৷ বিশ্বকাপের পর বায়ার্নে যোগ দেবেন তিনি৷ তবে এখন তাঁর সব মনযোগ রাশিয়া বিশ্বকাপের দিকে৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৪ গোল: ৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Probst
টিমো ভ্যার্নার
শক্তিশালী, দ্রুতগতির এবং নির্ভুল নিশানা - সবই যোগ করা যায় টিমো ভ্যার্নারের সঙ্গে৷ কনফেড কাপের এই সর্বোচ্চ গোলদাতা ল্যোভের আক্রমণভাবে খেলোয়াড়দের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছেন৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১২ গোল: ৭ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/M. Ibo
মারিও গোমেস
জার্মানির সবচেয়ে কার্যকর স্ট্রাইকার হিসেবে পরিচিত মারিও গোমেসের উপর যথেষ্ট আস্থা রাখেন ল্যোভ৷
<br/> <br/>
আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৩ গোল: ৩১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: Reuters/M. Rehle
ইউলিয়ান ব্রান্ট
বায়ার ০৪ লেভারকুজেনের সঙ্গে মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন৷ বাড়তি অনেক দায়িত্বও পালন করতে দেখা গেছে তাঁকে৷ তাই জাতীয় দলে ডাক পাওয়া তাঁর কাছে এক রকমের পুরস্কারের মতো ব্যাপার৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৪ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/SvenSimon/A. Waelischmiller
23 ছবি1 | 23
কোরিয়া- জাপান ২০০২ বিশ্বকাপে পাশাপাশি বসে কাজ করার সুবাদে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল জার্মান সাংবাদিক ভিলহেমের সঙ্গে৷ ব্রাজিল-জার্মানি ফাইনাল আর ভিলহেম কিনা পড়ে আছে ফিস্টার-দর্শন নিয়ে, ‘‘বন্ধু, জার্মানি ফুটবল খেলে অল্পবিস্তর সাফল্য পেয়েছে ঠিক আছে৷ তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন (তখন পর্যন্ত) হওয়াটা কম কথা নয়৷ তবে আসল কথা হলো, জার্মানি ব্রাজিলের মতো ফুটবলটা এখনো খেলে স্বপ্নে!’’
বছরের আট মাস তীব্র শীত৷ তুষারে ঢাকা জনপদে সুন্দর ফুটবল কী করে হবে? ব্রাজিলের মতো বড় বড় সৈকতের বালুকাবেলা কোথায় পাবে জার্মান কিশোর-তরুণেরা? ফুটবল যে ব্রাজিলের মতো জার্মান সংস্কৃতির রক্তকণিকায় ঢোকেনি৷ ভিলহেমের ব্যাখ্যাটা মেনে নিয়েছিলাম, তবে দ্বিধাহীনভাবে নয়৷ ফুটবলের সৌন্দর্য বুঝি না তা নয়, কিন্তু জয়-পরাজয় যেখানে সাফল্যের মানদণ্ড, সেখানে জার্মানিকে কুর্নিশ করতেই হয়৷
তাহলে মিনেইরাওতে ২৯ মিনিটে ব্রাজিলকে পাঁচ গোল দিয়ে ফেলার পর জার্মানি আর বেশি গোলের জন্য ঝাঁপায়নি ওই শ্রদ্ধাবোধ থেকেই! যে ফুটবল এতদিন শ্রদ্ধার বেদিতে থেকে হৃদয়ের অর্ঘ্য পেয়ে এসেছে, সেই ফুটবলকে লাম-ম্যুলার-ক্রুস-ও্যজিলরা আর বেশি অসম্মান করতে চাননি! অন্তত গোটা দশেক গোল না হওয়ার এটি একটি ব্যাখ্যা হতে পারে৷
বিশ্বকাপ: শিল্পীর তুলিতে ইতিহাস
ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮-র চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে জার্মানি৷ বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, চূড়ান্ত দলে নেই লেরয় জানে৷ তবে বিশ্বকাপে এটাই প্রথম বিস্ময় নয়৷ কার্টুনিস্ট জার্মান আচ্যেল ক্যানভাসে তুলে ধরেছেন আরো কিছু বিস্ময়ের কথা৷
ছবি: Aczel / Edel Books
১৯৩০: কোনো এক সময়...
প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩০ সালে, উরুগুয়েতে৷ সেসময় মূলত উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার দলগুলো বিশ্বকাপে অংশ নেয়৷ ইউরোপ থেকে স্টিমশিপে চেপে সেই বিশ্বকাপে অংশ নিতে যায় চারটি দল৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে স্বাগতিক উরুগুয়ে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৫৪: বার্ন-এ চমক
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় সুইজারল্যান্ডে৷ সেবার প্রস্তুতি পর্বে হাঙ্গেরির কাছে ৮-৩ গোলে হারে জার্মানি৷ কিন্তু ফাইনালে ইতিহাস রচনা করে জার্মানরা৷ হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে দেশটি৷ কার্টুনে জার্মান দলের ফ্রিৎস ভাল্টার (বামে) এবং প্রশিক্ষক সেপ হ্যার্বারগারকে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের কাঁধের উপর দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৬৬: প্রথম এবং একমাত্র
যদিও ফুটবলের জন্মস্থান মনে করা হয় ইংল্যান্ডকে, তা সত্ত্বেও দেশটি বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র একবার - ১৯৬৬ সালে৷ সেবার নিজেদের মাটিতে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারায় ইংলিশরা৷ খেলার ১০১ মিনিটে, অর্থাৎ অতিরিক্ত সময়ে করা এক গোল, যেটি ‘ওয়েম্বলি গোল’ হিসেবে পরিচিত, নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়ে গেছে৷ কার্টুনে ববি মুরকে বিশ্বকাপ হাতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭০: পেলের জন্য ‘থ্রি চিয়ার্স’
সেবছর তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল৷ বিংশ শতাব্দির অন্যতম ফুটবল তারকা পেলের নেতৃত্বে ফাইনালে ৪-১ গোলে ইটালিকে হারায় ব্রাজিল৷ রঙিন টিভিতে প্রচার হওয়া প্রথম বিশ্বকাপ সেটি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭৪: বেকেনবাওয়ার বনাম ক্রুইফ
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল৷ জার্মানির তখনকার সেরা খেলোয়াড় ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে তাঁর মতোই জনপ্রিয় নেদারল্যান্ডসের ইয়োহান ক্রুইফের লড়াই দেখতে উন্মুখ ছিলেন অনেকে৷ সেবার পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে খেলেছিল পূর্ব জার্মানি৷ ফাইনালে ২-১ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারায় জার্মানি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৮৬: ঈশ্বরের হাত
সেবার ফুটবল তারকা দিয়েগো মারাদোনার দিকে নজর ছিল সবার৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছে বটে, কিন্তু তাঁর করা একটি গোল নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে৷ ‘ঈশ্বরের হাত’ খ্যাত সেই গোলটি মারাদোনা হাত দিয়ে করেছিলেন বলেই দাবি অনেকের৷ তবে সেবার পাঁচ ইংলিশ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে মারাদোনার করা আরেক গোল ‘শতাব্দির সেরা গোল’-এর স্বীকৃতি পেয়েছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৯০: থুথু হামলা
ইটালিতে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে জার্মানি৷ সেবার এক ম্যাচে জার্মানির রুডি ভ্যলারের গায়ে থুথু দিয়েছিলেন ডাচ খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড৷ সেই ঘটনার পর দুই খেলোয়াড় ধস্তাধস্তি শুরু করলে দু’জনকেই মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০০৬: ক্ষিপ্ত জিদান
সেবারের বিশ্বকাপ নিয়ে এখনো আলোচনা হয় জিনেদিন জিদানের এক আচরণের কারণে৷ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পেনাল্টি শ্যুটআউটে ফ্রান্সকে হারায় ইটালি৷ তবে ফাইনালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল যখন ইটালির মার্কো মাতেরাৎসিকে মাথা দিয়ে ঢুস দিয়ে ফেলে দেন জিদান৷ সেই ঘটনায় জিদানের উজ্জ্বল ফুটবল কেরিয়ারের সমাপ্তি ঘটে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১০: টিকি-টাকার জয়
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিপক্ষকে কাবু করতে টিকি-টাকা স্টাইল ব্যবহার করে স্পেন৷ এই স্টাইলের মাধ্যমে নিজের দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে পাস দিয়ে প্রতিপক্ষকে বিরক্ত ও বিভ্রান্ত করেছে স্প্যানিশরা৷ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে তারা৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১৪: ড্রিবলিংয়ের রাজা
ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপের তারকা ছিলেন লিওনেল মেসি৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছিল বটে, তবে ফাইনালে হেরেছে জার্মানির কাছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৪: চার-তারকা দল
রিও ডি জেনেইরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালে হাজির ছিল ৭৫,০০০ দর্শক৷ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে আর্জেন্টিনাকে হারায় জার্মানি৷ সেটা ছিল দক্ষিণ অ্যামেরিকার মাটিতে ইউরোপের কোনো দলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৮: বিতর্কিত কাপ
চলতি বছর বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ রাশিয়া৷ দেশটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন দুর্নীতিতে জর্জরিত ফিফা’র এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত৷ ইতোমধ্যে ফ্যান-আইডির মাধ্যমে অগুনতি ফুটবল সমর্থকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে৷ এমনকি জার্মানির সরকারি কর্মকর্তাদের যারা খেলা দেখতে যাচ্ছেন, তাঁদের স্মার্টফোন থেকে যাতে রাশিয়া তথ্য চুরি করতে না পারে, সেজন্য সেসব ফোন দেশে রেখে যেতে বলেছে জার্মানি৷
ছবি: Aczel / Edel Books
ফুটবল ইতিহাস নিয়ে কমিক
বিশ্বকাপ ১৯৩০-২০১৮ শীর্ষক কমিক বইতে বিশ্বকাপের বিভিন্ন স্মরণীয় ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ কমিক বইটির প্রচ্ছদে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, মানুয়েল নয়্যার, লিওনেল মেসি এবং নেইমারসহ কয়েকজন তারকাকে শিল্পীর তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
যার হাতে তুলি
কমিক বইটির জন্য কার্টুন এঁকেছেন আর্জেন্টিনার শিল্পী জার্মান আচ্যেল৷ তিনি কেরিয়ার শুরু হয়েছিল বুয়েনেস আইরেসে৷ সেখানে এল গ্রাফিকো স্পোর্টস ম্যাগাজিনে কাজ করতেন৷ পরবর্তীতে ২৬ বছর বয়সি এই কার্টুনিস্ট জার্মানিতে চলে আসেন এবং বর্তমানে মিউনিখে বসবাস করছেন ও ব্রিটিশ সকার ম্যাগাজিন ফোরফোরটু’তে কাজ করছেন৷
ছবি: Aczel/Edel Books
14 ছবি1 | 14
সত্যি করে বললে জার্মান ফুটবলই এখন আলাদা শ্রদ্ধার বেদিতে বসেছে৷ সেই ফলকেন্দ্রিক বিরক্তিকর ফুটবল জার্মানদের পা থেকে বিদায় নিয়েছে৷ এখন তারাও সবুজ আয়তক্ষেত্রে পাসের ফুল ফোটায়৷ আক্রমণ ও পালটা আক্রমণকে শিল্পের সুষমায় ভরিয়ে দেওয়ার ব্রত নিয়ে এগোচ্ছে জার্মান দল৷ মিনেইরাওয়ের ওই সাত গোলে জার্মানি বিশ্বকাপে গোলের সংখ্যায় ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে শীর্ষে৷ সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক করেছে কোন দল? উত্তর: জার্মানি৷ ২০১৪ বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি পাস খেলেছে কোন দল? এ ক্ষেত্রেও উত্তর– জার্মানি৷
গ্যারি লিনেকার একদা বলেছিলেন, ‘‘ফুটবল খুব সহজ খেলা, ২২ জন খেলোয়াড় একটি বলের পেছনে ছোটে আর খেলা শেষে জয়ী হয় জার্মানি৷’’ সরাসরি না বলে সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার যে জার্মানির ফুটবলকে কদর্য-কুৎসিত ফল-নির্ভর বিরক্তিকর বলে কটাক্ষ করেছেন, সেটি সবাই বোঝে৷ কে জানে এখন লিনেকারের চোখেই মুগ্ধতা ছড়ায় কি না জার্মানির ফুটবল!
কীভাবে বদলে গেল জার্মানির ফুটবল? উত্তরটা দেওয়া উচিত ইওয়াখিম ল্যোভ-এর, কেননা, এক দশক ধরে জার্মানির ফুটবলে সত্যিকারের বিপ্লব এনেছেন তো তিনিই৷ একদা ‘মিসফিট’ এই ম্যানেজারই এখন জার্মান ফুটবলের সফলতম ম্যানেজার৷ তাঁর অধীনে এক গুচ্ছ তরুণ মাঝমাঠে পাসের ঠাসবুননে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে দিতে পারে৷ তারা জিততে পারে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নির্দয় পাল্টা আক্রমণ হেনে৷ মিনেইরাওয়ের ওই ইতিহাস বিধৃত সেমিফাইনালের কথা বাদ দিন, দ্বিতীয় সারির অনভিজ্ঞ তরুণ একটি দল নিয়েও যে জার্মানি জিততে পারে, সেটির প্রামাণ্য গত বছরের কনফেডারেশনস কাপ৷
জার্মান পেশাদার লিগ বুন্ডেসলিগা এখন টিভি সম্প্রচারকারীদের কাছে স্বপ্নের আয়োজন৷ স্টেডিয়ামগুলো দর্শকে টইটম্বুর৷ নৈপুণ্যভাস্বর খেলোয়াড় উঠে আসছে স্রোতের মতো৷ জার্মান ফুটবলের গভীরতা এখন এতটাই যে, এই বিশ্বকাপে ২৩ জনের অন্তত দু'টি দল দিতে পারতো জার্মানি৷
‘‘তারা আমাকে রক্ষণে এসে বল কাড়তে বলেন, বলেন মাঝমাঠের দখল রাখতে, এমনকি ফাইনাল থার্ডে গিয়ে নিজেই নিজেকে পাস দিয়ে গোল করতে বলেন’’— কথাটা মিশায়েল বালাকের৷ বলেছিলেন ২০০২ বিশ্বকাপের পর৷ একেবারেই একটা সাদামাটা দল নিয়ে শুধু মাঝমাঠে বালাকের কারিশমা আর গোলে অলিভার কানের বিশ্বস্ত ও সাহসী দুটি হাত সম্বল করে ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল জার্মানি৷ আদতে তখন ‘ডি মানশাফট’-এর অন্ধকার যুগ চলছে৷ সৃষ্টিশীল নবীন কোনো খেলোয়াড় নেই— বয়সি খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশ্বসেরা মঞ্চে কোনোক্রমে দিন কাটাচ্ছিল জার্মানি৷ এভাবে জার্মান ফুটবলসাম্রাজ্য চলতে পারতো না৷ তখনই আবির্ভাব ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমান আর ল্যোভ-এর৷ ক্লিন্সমান সুদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিকল্পনা আঁকেন আর সেটি জার্মানিতে বসে বাস্তবায়ন করেন ইয়াওখিম ল্যোভ৷ ঘরের মাঠের ২০০৬ বিশ্বকাপেই সাফল্যের ফুল ফুটতে চলেছিল, ফুটতে পারলো না সেমিফাইনালে বিশ্বকাপের ইতিহাসেরই অসাধারণ এক ম্যাচে ইটালির কাছে হেরে৷
একদিক দিয়ে খারাপ হয়নি৷ সোনা পুড়ে পুড়ে যেমন খাঁটি হয়, তেমনি করেই পরিণত হয়ে উঠেছে জার্মান ফুটবল৷ তাই বলা হচ্ছে, ইটালি ও ব্রাজিলের পর জার্মানিই সেই দল যারা এবার ধরে রাখতে পারে বিশ্বকাপ শিরোপা৷ ইটালি পর পর বিশ্বকাপ জিতেছিল আদি যুগে— ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালে৷ আর ব্রাজিল জিতেছিল ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালে৷ ফুটবল এখন পেশাদারির কঠিন-কঠোর বর্মে আবৃত৷ ফুটবল আর বিজ্ঞান এখন একাকার৷ এই সময়ে জার্মানির টানা দুবার বিশ্বকাপ জয়ের মহিমাই হবে অন্যরকম৷
রাশিয়া বিশ্বকাপ যত কাছে চলে আসছে, জার্মানিকে নিয়ে এই বিশ্বাসটা আমার মধ্যে কেন জানি না ডালপালা মেলছে৷ দেখতে পাচ্ছি, ডাগআউটে কালো ট্রাউজারের ওপর সাদা শার্টের একটি দীর্ঘ শরীর অবিচলিত বসে থেকে হঠাৎ হঠাৎ জয়োদ্ধত একটি মুষ্টি ছুড়ছেন বাতাসে৷ ইওয়াখিম ল্যোভ!
জার্মান দলের সঙ্গে ম্যার্কেল
বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়ার আগে ইটালিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মান ফুটবল দল৷ রাশিয়ার বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতা দলের খেলোয়াড়দের সাথে ভাগ করতে সেখানেই হাজির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
ছবি: Reuters/M. Gillar
‘রাশিয়া বিশেষজ্ঞ’ ম্যার্কেল
ইটালিতে টিম হোটেলে ডিনারের পর খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ম্যার্কেল৷ দলকে রাশিয়া এবং সেখানকার মানুষ সম্পর্কে ধারণা দেয়াই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য৷
ছবি: Reuters/M. Gillar
খেলা ও রাজনীতি
সরাসরি রাজনীতিতে জড়াতে নয়, বরং স্বাগতিক দেশ রাশিয়ায় এখন কী ঘটছে, সে বিষয়ে খেলোয়াড়দের অবহিত করেছেন ম্যার্কেল৷ খেলোয়াড়দের মাঠের বাইরের সব বিষয়েই সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন ফুটবল বোর্ডের প্রধান রাইনহার্ড গ্রিন্ডেল৷
আলোচনা বেশ প্রাণবন্ত ছিল বলে জানিয়েছেন দলের কর্মকর্তারা৷ চ্যান্সেলর যেমন রাশিয়া সম্পর্কে নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন, খেলোয়াড়রাও তাঁদের নানা বক্তব্য জানিয়েছেন ম্যার্কেলকে৷
ম্যার্কেলকে পেয়ে জাতীয় দলের খেলোয়ারদের আনন্দের যেমন কমতি নেই, ম্যার্কেলও কিন্তু কম আনন্দিত নন৷
খেলোয়াড়দের সাথে বৈঠকের পর হোটেলের বাইরে অপেক্ষমান ফুটলভক্তদের সাথেও সময় কাটান ম্যার্কেল৷ চ্যান্সেলরের ফুটবলপ্রীতি দেখে অভিভূত ভক্তরাও৷
ছবি: Getty Images/M. Gillar
প্রস্তুত জার্মানি
১৪ জুন শুরু হতে যাচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপ৷ তবে জার্মানি প্রথম মাঠে নামবে ১৭ তারিখ, প্রতিপক্ষ মেক্সিকো৷