টিগ্রেতে চলছে তীব্র লড়াই। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না অধিকাররক্ষা সংস্থাগুলিকে। অসহায় অবস্থা লাখ লাখ শিশুর।
বিজ্ঞাপন
ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে ইথিওপিয়ার টিগ্রের পরিস্থিতি। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রায় দুই দশমিক তিন মিলিয়ন শিশু সেখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সামান্য খাবার এবং ওষুধ পর্যন্ত তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না।
টিগ্রে যুদ্ধে পালাচ্ছে মানুষ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয়ের ফলে ইথিওপিয়া থেকে ৪৪ হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে সুদানে পালিয়েছে৷ ঘরছাড়া ২০ লাখ মানুষ৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
খাবার সংকট
দেশের ভেতরে যুদ্ধ চলছে৷ ফলে খাবার সংকটের কারণে এসব মানুষ ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে সুদানে৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
বিচ্ছিন্ন টিগ্রে
এক মাস ধরে টিগ্রেতে কোন যানবাহন চলছে না৷ টেলি যোগাযোগ, ইন্টারনেট একেবারে বন্ধ৷ রোববার ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয় টিগ্রের হুমেরা শহরে ৭০টি কবরের সন্ধান পেয়েছে, যেগুলোর কোনটিতে একজন, আবার কোনটিতে একাধিক মৃতদেহ রয়েছে৷ প্রতিবেদনে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, টিপিএলএফ এর যোদ্ধারা এদের হত্যা করেছে৷ কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় লড়াইয়ে আহত-নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না৷
ছবি: Baz Ratner/REUTERS
খাবার পাহারা
সুদানের কাসালা রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে ত্রাণের খাবারের বস্তাগুলো পাহারা দিচ্ছে সেনারা৷ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডাব্লিউএফপি এসব শিবিরে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদীর তীরে হাজারো মানুষ
ইথিওপিয়া থেকে পালিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নদী পার হয়ে আসছে সুদানে৷
ছবি: El Tayeb Siddig/REUTERS
গৃহহীন ২০ লাখ
ট্রিগ্রেতে লড়াইয়ের কারণে গৃহহীন হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ৷ সুদানের আল কাদারিফ রাজ্যের একটি শরণার্থী শিবিরে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেক মানুষ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সম্বলহীন যাত্রা
এই শরণার্থী সুদানে যেতে সাঁতরে সেটিট নদী পার হচ্ছে৷ উঁচু করে রাখা হাতে গায়ের জামাটা ছাড়া আর কিছু নেই৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফের শাসন
উত্তর ইথিওপিয়ার ইরিত্রিয়া ও সুদান ঘেঁষা এলাকায় এতদিন টিপিএলএফের শাসন চলতো৷ এই এলাকায় সুদান ও ইরিত্রিয়ার প্রভাব ছিলো বেশি৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
টিপিএলএফকে কোণঠাসা
শান্তিতে নোবেল জয়ী ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ আর সেজন্যই টিপিএলএফকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা করেন তিনি৷ টিগ্রেতে ৬০ লাখ মানুষের বাস৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
এক মাস ধরে যুদ্ধ
টিগ্রেতে ইথিওপিয়া ও টিগ্রে পিপলস রেভলিউশনারি ফোর্স টিপিএলএফ এর লড়াইয় চলছে এক মাস ধরে৷ নভেম্বরের ৪ তারিখে শুরু হয় এই লড়াই৷ টিগ্রের লড়াইয়ে তাদের জয় হয়েছে বলে শনিবার দাবি করেছে সরকার৷ জানিয়েছে, রাজধানী মেকেলে এখন সেনার দখলে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
9 ছবি1 | 9
নভেম্বরের গোড়া থেকে টিগ্রেতে তীব্র লড়াই চলছে ইথিওপিয়া সরকারের সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ)। দীর্ঘদিন টিপিএলএফ কার্যত স্বতন্ত্র সরকার চালিয়েছে টিগ্রেতে। নভেম্বরে ইথিওপিয়ার নোবেলজয়ী প্রধানমন্ত্রী টিগ্রে দখলের জন্য সেনা পাঠান। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে তীব্র যুদ্ধ। আন্তর্জাতিক অধিকাররক্ষা সংস্থাগুলির বক্তব্য, ইথিওপিয়া সরকার যুদ্ধের কোনো নিয়ম মানছে না। সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার কোনো সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। এখনো পর্যন্ত কোনো সংস্থাকে টিগ্রেতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার কোনো সুযোগই দেওয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, টিগ্রের ইন্টারনেট, ফোন লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। ভিতরে কী ঘটছে, তার কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। জাতিসংঘের ধারণা, যুদ্ধে হাজারখানেক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইথিওপিয়া সরকার জানিয়েছে যুদ্ধ শেষ। কিন্তু টিপিএলএফের দাবি এখনো তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে টিগ্রের প্রায় ২৩ লাখ শিশু অসহায় অবস্থায় রয়েছে বলে ইউনিসেফ জানিয়েছে। তাদের কাছে খাবার, ওষুধ কিছুই পৌঁছচ্ছে না। টিপিএলএফ এবং ইথিওপিয়া সরকার সেই খাবার নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। ইউনিসেফ জানিয়েছে, আরো কিছুদিন এমন চললে শিশুদের মৃত্যুও হতে পারে।
কয়েক লাখ মানুষ টিগ্রে ছেড়ে সুদানে পালিয়েছেন। এখনো বহু মানুষ টিগ্রেতে থেকে গিয়েছেন। টিগ্রেতে শরণার্থী শিবিরও আছে। যুদ্ধের পর শরণার্থীদের কী অবস্থা, তা নিয়েও যথেষ্ট চিন্তিত জাতিসংঘ।