ইথিওপিয়ার বেনিশানগুল-গুমুজ এলাকা রীতিমতো অশান্ত হয়ে উঠেছে। একদিন আগেই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি করে শতাধিক নিরাপরাধ গ্রামবাসীকে হত্যা করেছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের দাবি, তারপর ওই এলাকায় সেনা অভিযান হয়েছে। ৪২ জন সন্ত্রাসী সেনা আক্রমণে মারা গেছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আরো সেনা পাঠানো হচ্ছে।
এই এলাকাটি সুদান সীমান্তের কাছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যাবি আহমেদ টুইট করে জানিয়েছেন, ''খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সরকার আগে এখানকার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা সফল হয়নি। এখন পরিস্থিতি সামলাতে বাহিনী পাঠানো হয়েছে।''
জাতিগত সংঘর্ষ
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ইথিওপিয়ায় জাতিগত সংঘর্ষ হয়েছে। সেই ভয়ঙ্কর ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যাবি আহমেদ ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই ইথিওপিয়ায় সহিংস ঘটনার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করেছেন। তার ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে কেন্দ্রীয় যে নিয়ন্ত্রণ ছিল তা অনেকটাই কমে গেছে। ফলে আঞ্চলিক স্তরের বিভেদ সংঘর্ষে পরিণত হচ্ছে।
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ, পালাচ্ছেন টিগ্রের বাসিন্দারা
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশটির টিগ্রে অঞ্চল ছেড়ে পালাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা৷ অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন সুদান-ইথিওপিয়া সীমান্তে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
উম-রাকোবা শিবিরে শরণার্থীদের ভিড়
ইথিওপিয়ার টিগ্রে অঞ্চলে চলমান লড়াই থেকে বাঁচতে দেশটির সঙ্গে সুদানের সীমান্তে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক শরণার্থী৷ গতকাল তোলা ছবিতে এক মাকে তার সন্তানদেরসহ দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সক্রিয় ইউএনএইচসিআর
ইথিওপীয় শরণার্থীদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর এক সদস্য৷ টিগ্রেতে গত তিন সপ্তাহ ধরে ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) লড়াই চলছে৷ টিপিএলএফ কার্যত ১৯৯১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ইথিওপিয়া শাসন করেছিল৷ তবে, ২০১৮ সালে আবি আহমেদ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
সেটিট নদী পার হয়ে শিবিরে
টিগ্রে থেকে পালিয়ে আসা ইথিওপীয়রা সেটিট নদী পার হওয়ার পর নৌকা থেকে নিজেদের মালামাল তুলে নিচ্ছেন৷ টিগ্রেতে সংঘাত শুরুর পর অন্তত চল্লিশ হাজার মানুষ এলাকা ছাড়া হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
নারী ও শিশুদের ভোগান্তি চরমে
দুই পক্ষের সংঘাতে নারী ও শিশুদের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে৷ জাতিসংঘ সেখানে আন্তর্জাতিক আইনে লঙ্ঘন ঘটছে বলে সতর্ক করেছে৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
বাসে করে শরণার্থীদের পরিবহন
টিগ্রে থেকে পালানো ইথিওপীয়দের একটি বাসে করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সংঘর্ষরত দুই পক্ষের মধ্যে শিগগিরই শান্তি ফেরার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
ছবি: Mohamed Nureldin Abdallah/REUTERS
শান্তিতে নোবেল, দেশে অশান্তি
ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ গতবছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন৷ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরি সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে শান্তি স্থাপনে সক্ষম হওয়ায় তাকে এই পুরস্কার দেয়া হয়৷ তবে, দেশটির বর্তমান অশান্তি পরিস্থিতি নিরসনে তিনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Michel Euler/REUTERS
6 ছবি1 | 6
বেনিশানগুল-গুমুজ এলাকায় এই সহিংসতার কারণ, জমির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠা। অ্যামনেস্টির দাবি, জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বন্ধ করতেই হবে ইথিওপিয়া সরকারকে।
ইথিওপিয়া হিউম্যান রাইটস কমিশন জানিয়েছে, এই আক্রমণ যখন হয়েছে, তখন সেখানে পুলিশ বা সরকারি কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ছিল না। তাদের মতে, ফেডারেল ও আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে সমন্বয় অনেক বাড়াতে হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই ধরনের ঘটনা সমানে বাড়ছে।