আবার কি অঘটন ঘটেই গেল? অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল টিউনিশিয়ার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগিই করতে হবে! পুরোটা সময় শ্বাসরোধ করে বসেছিলেন ইংল্যান্ডের সমর্থকরা৷
বিজ্ঞাপন
শিরোপার দাবিদার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির যে নাকানিচুবানি অবস্থা হয়েছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে, তাতে ইংল্যান্ডের ভয়ই পাওয়ার কথা৷ আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ড্র করে মান বাঁচালেও, জার্মানি তো হেরেই বসলো মেক্সিকোর কাছে৷
শুরু থেকে অবশ্য মাঠ দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছিল ইংল্যান্ডই৷ প্রথম কয়েক মিনিটেই দারুণ কয়েকটি আক্রমণ থেকে গোল আসতে পারতো৷ তবে টিউনিশিয়ার গোলরক্ষক মুয়েজ হাসেন সাধারণ দক্ষতায় সামলে রাখেন গোলপোস্ট৷
তবে ১৫ মিনিটের মাথায়ই কাঁধে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার আগে একটা গোল হজম করতেই হয় মুয়েজকে৷ ১১ মিনিটে কর্নার থেকে আসা বলে জন স্টোনসের হেডও ফিরিয়েছিলেন দারুণভাবেই৷ কিন্তু ফিরতি শটে বল জালে জড়াতে কোনো কষ্টই হয়নি হ্যারি কেইনের৷
১৫ মিনিটে মুয়েজের পরিবর্তে গোলপোস্টে দাঁড়ান ফারুক বিন মোস্তাফা৷ ৩৫ মিনিটে ডিবক্সে কাইল ওয়াকারের ফাউলে পেনাল্টি পায় তিউনিশয়া৷ সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগাতে একটুও ভুল করেননি ফখরুদ্দিন বিন ইউসেফ৷
এরপর বাকি সময়টা ইংল্যান্ড দল ও সমর্থকদের কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো৷ তীব্র আক্রমণও বারবার রুখে দিয়েছে উজ্জ্বীবিত টিউনিশিয়া।
তবে শেষ পর্যন্ত যোগ করা সময়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচা৷ এবারও নায়ক হ্যারি কেইন৷ টিউনিশিয়ার রক্ষণভাগের ভুলে বল পেয়ে যান পায়ে৷ একা গোলরক্ষককে সামনে পেয়ে জালে জড়ান ইংল্যান্ডের স্বপ্ন৷
এদিকে, ফেবারিটের মতোই বিশ্বকাপ শুরু করেছে বেলজিয়াম৷ পানামার বিপক্ষে ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৩-০ গোলে৷
শুরুটা অবশ্য বেশ খারাপই ছিলো৷ প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য৷ তবে বিরতি থেকে ফিরেই ৪৭ মিনিটের মাথায় দ্রিস মের্তেন্স যেই না একটা গোল দিলেন, অমনি পুরো পালটে গেল বেলজিয়াম৷ একের পর এক আক্রমণে বিপর্যস্ত পানামাকে বাকি সময়ে হজম করতে হয় আরো দুই গোল৷
দিনের প্রথম ম্যাচ ১-০ গোলে জিতে নিয়েছে সুইডেন৷ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এ জয়ে ভাগ্যের সহায়তা অনেকটাই৷
শুরু থেকে দু’দলই বেশ গতিশীল ফুটবল খেলছিল৷ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠেছিল ম্যাচ৷ ব্যাপক উত্তেজনা থাকলেও প্রথমার্ধে লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি কোন দলই৷
দ্বিতীয়ার্ধেও একই গতি ধরে রাখে দুই দল৷ তবে ৬১ মিনিটে বল নিয়ে বিপজ্জনকভাবে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সুইডেনের ভিক্টর ক্লায়েসন৷ কিম-মিন উর ট্যাকলে মাটিতে পড়ে যান তিনি৷
সুইডেনের খেলোয়াড়েরা ক্রমাগত রেফারির কাছে আবেদন করলেও, চলতে থাকে খেলা৷ তবে এক পর্যায়ে খেলা থামিয়ে বিশ্বকাপে নতুন চালু করা ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিবা ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
রিপ্লে দেখে ফাউল হয়েছে সিদ্ধান্ত জানালে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন আন্দ্রেস গ্রাঙ্কভিস্ট৷ খেলার বাকি সময়ে বারবার আক্রমণে গেলেও গোল শোধ করতে পারেননি দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়রা৷
কোন কোন স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের খেলা
রাশিয়া এবারের বিশ্বকাপের জন্য নয়টি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ বা সংস্কার করেছে৷ মোট ১২টি ভেন্যুতে হবে বিশ্বকাপ৷ ভেন্যুগুলোর বিস্তারিত জেনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/dpa/AP/I. Sekretarev
লুঝনিকি স্টেডিয়াম, মস্কো
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে এখানেই৷ ১৯৫৬ সালে তৈরি এই এরিনায় অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮০-র অলিম্পিক৷ পরে অবশ্য এটিকে পূনর্নিমাণ করা হয়৷ এর ধারণক্ষমতা ৮১,০০০৷
ছবি: picture alliance/dpa/AP/I. Sekretarev
ওটক্রিটি অ্যারেনা, মস্কো
৪৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটিও মস্কোতে৷ এটি এখন রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব স্পার্টাক মস্কোর হোম গ্রাউন্ড৷ এখানে গ্রুপ পর্বের চারটি ও দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে৷
ছবি: Picture alliance/dpa/S. Suki/EPA
ক্রেস্তভস্কি স্টেডিয়াম, সেন্ট পিটার্সবুর্গ
সৌন্দর্যমন্ডিত সেন্ট পিটার্সবুর্গের এই স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ৬৮ হাজার৷ এটি এখন এফসি জেনিথের মাঠ৷ পুরোনো একটি স্টেডিয়াম ভেঙে সে জায়গায় এটি নির্মাণ করা হয়েছে৷
ছবি: Picture alliance/dpa/D. Lovetsky/AP
সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম, ইয়েকাটেরিনবুর্গ
এই স্টেডিয়ামটি আগে ছিল ৩৫ হাজার দর্শকের জন্য৷ একে বিশ্বকাপের ভেন্যু উপযোগী করে তুলতে আরো ১২ হাজার সিট যুক্ত করা হয়েছে৷ বিশ্বকাপের পর একে আরো সংস্কার করা হবে৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/V. Sergeev
রস্তভ এরেনা, রস্তভ-অন-ডন
রস্তভ-অন-ডনে এই ভেন্যুটি তৈরিই করা হয়েছে ২০১৮ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার৷ এই স্টেডিয়ামটি তৈরির সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েকটি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/Ирина Белова
কাজান এরেনা, কাজান
ভ্লাদিমির পুটিন নিজে এই স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন৷ ৪১,৫৮৫ দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটি রুবিন কাজান ক্লাবের হোমগ্রাউন্ড৷
ছবি: Picture alliance/dpa/N. Alexandrov/AP
ভলগোগ্রাদ এরেনা, ভলগোগ্রাদ
এই ভলগোগ্রাদেরই আগের নাম ছিল স্টালিনগ্রাদ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়ের সাক্ষী এই শহরে তৈরি এই স্টেডিয়ামটি ভলগা নদীর তীরে অবস্থিত৷ ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজারের কিছু বেশি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়াম, নিঝনি নভগোরদ
এটিও এই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে বানানো নতুন স্টেডিয়াম৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার৷
ছবি: picture-alliance/AP Images
কলিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম, কলিনিনগ্রাদ
রাশিয়ার সর্বপশ্চিমের স্টেডিয়াম এটি৷ ৩৫ হাজারের চেয়ে কিছু বেশি এর দর্শক ধারণক্ষমতা৷
ছবি: picture-alliance/TASS/V. Nevar
মর্ডোভিয়া এরেনা, সারানস্ক
৪৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটি স্থানীয় তৃতীয় বিভাগের ক্লাব মর্ডোভিয়া সারানস্কের হোমগ্রাউন্ড৷
ছবি: picture-alliance/TASS/S. Krasilnikov
কসমস এরেনা, সামারা
এই স্টেডিয়ামটি হওয়ার কথা ছিল ভলগা নদীর একটি দ্বীপে৷ কিন্তু সেই দ্বীপে যেতে কোনো সেতু না থাকায়, এটিকে সামারায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ এর ধারণক্ষমতা ৪৪ হাজার৷
ছবি: picture-alliance/TASS/Y. Aleyev
অলিম্পিক স্টেডিয়াম, সোচি
শীতের অলিম্পিকের জন্য তৈরি এই ভেন্যুটির ধারণক্ষমতা ৪১,২২০৷ এখানে প্রথম দুই রাউন্ডের ম্যাচ ছাড়াও একটি কোয়ার্টার ফাইনালও হবার কথা রয়েছে৷