ইনজেকশনের বদলে ভ্যাকসিন প্যাচ
২০ জুলাই ২০১০এ টিকার পট্টিতে শতশত সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুঁই থাকে যা ত্বকের ভিতর মিশে যায়৷ ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে প্রচলিত প্রতিষেধকের চেয়ে এতে ফলাফল পাওয়া গেছে আরও ভালো৷ নেচার মেডিসিন পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে মার্কিন গবেষকরা জানিয়েছেন, এই প্যাচ একদিনের মধ্যে মানুষের শরীরে টিকার কাজ করতে সক্ষম৷
ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয় ও জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গকেষকরা যে প্যাচ নিয়ে কাজ করেছেন তাতে ১০০ টি অতিসূক্ষ্ম সুঁই ব্যবহার করা হয়েছে, যা দৈর্ঘ্যে মাত্র ০.৬৫ মিলিমিটার৷
এগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে খুব সহজেই ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়৷ এই সুঁইগুলোতে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন ভরে গবেষকরা প্রযুক্তিটা পরীক্ষা করেন৷ একদল ইঁদুরকে প্রচলিত ইনজেকশানের মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা দেওয়া হয়৷ আর অন্য দলটিকে প্যাচের মাধ্যমে৷ তৃতীয় দলটিতে এমন প্যাচ দেওয়া হয় যেখানে কোনো ভ্যাকসিন ছিলনা৷ ৩ মাস পর দেখা গেছে, ইঁদুরের যে দলটিকে টিকার পট্টি দেওয়া হয়েছে, সাধারণ টিকা দেওয়া ইঁদুরের চেয়ে সেগুলোর রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বেশি৷
পরবর্তী আরও পরীক্ষায় যদি চূড়ান্ত প্রমাণ প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে টিকা দেওয়ার জন্য আর প্রশিক্ষণ পাওয়া লোকজনের কাছে ছুটতে হবেনা৷ মানুষ নিজেই এই টিকা নিতে পারবে৷ সারা পৃথিবীতে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়া রোগব্যাধি প্রতিরোধের টিকা দেয়ার কাজ এর ফলে আরও সহজ হতে পারে, বলছেন গবেষকরা৷
শুধুমাত্র ফ্লু ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণাটি চালিত হলেও আশা করা হচ্ছে যে অন্যান্য প্রতিষেধকের ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি কাজে আসতে পারে এবং এর খরচ ইনজেকশানের চেয়ে বেশি হবেনা৷
গবেষক দলের প্রধান জর্জিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির সন সালিভান বলেছেন, ‘আমরা এমন টিকা আবিষ্কার করার চেষ্টা করছি যা মানুষ ডাকযোগে বা ফার্মেসিতেই পেতে পারেন ও ঘরে বসে নিজেই তা দিতে পারেন৷ কারণ প্যাচের সূক্ষ্ম সুঁইগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা কোনো ক্ষতি না করে ত্বকের ভিতরে মিশে যায়৷
ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক রিচার্ড কমপানস বলেন, ‘ভ্যাকসিন বেশি ভেতরে ঢোকানো যাবেনা, কারণ ত্বকের একটু নিচেই রোগ প্রতিরোধের কোষ থাকে৷' আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই মানুষের ওপর এ নিয়ে গবেষণা চালানো হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক