ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ তিনি চিকিৎসাধীন আছেন, তার সংস্পর্শে এসেছেন এমন ৪৭ জনকে চিহ্নিত করে হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সম্পাদক এম শামসুর রহমান বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছেন, সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব জায়গাতে৷ বলা হয়েছে, আইইডিসিআরের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে এবং করণীয় সব কিছুই করা হচ্ছে৷
ওই প্রতিষ্ঠানটিতে আট বছর কাজ করেছি বলে নয়, স্বাভাবিক উৎকণ্ঠা এবং কৌতূহল থেকেও জানতে ইচ্ছা করছিল কে আক্রান্ত হলেন৷ একবার মনে হয়েছিল কারো কাছে জানতে চাই, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যখন জানানো হয়নি তাই আমিও আর চেষ্টা করিনি৷
কিন্তু মনে প্রশ্ন এলো, প্রতিষ্ঠানটি কেন তার পরিচয় জানালো না? সারা দুনিয়াই এখন কমবেশি করোনা আক্রান্ত৷ এদের মধ্যে রাজপুত্র চার্লস, চিত্রনায়ক টম হ্যাংকস, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, খেলোয়াড় দিবালাসহ অনেক মানুষকে আমরা চিনিও বটে৷ সিএনএন সাংবাদিক ক্রিস কুউমো করোনা ভাইরাসে পজিটিভ জেনে নিজের বাড়ি থেকে শো হোস্ট করছেন৷
আমাদের দেশে তাহলে এত গোপনীয়তা কেন? কেন এই সামাজিক লজ্জা?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কিছুক্ষণ চোখ রাখতেই বিষয়টা বুঝতে পারলাম৷ ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের অন্য সংবাদকর্মী যারা এখন আইসোলেশনে আছেন বা যারা কোনো আইসোলেশনেও নেই তাদের বেশিরভাগই নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ছেন৷ বাড়িওয়ালা, ভাড়াটে, ফ্ল্যাট ওনার, হাউজিং সোসাইটি কর্তৃপক্ষের অনেকেই তাদের চলে যেতে বলেছেন, কেউ কেউ বলেছেন তাদের ঘরের অন্য কেউ যাতে বেরিয়ে না আসেন!
আমরা দেখেছি চিকিৎসা সেবার সঙ্গে নিয়োজিত কর্মীরাও একইরকম সমস্যায় পড়ছেন, নির্মিতব্য হাসপাতাল ভাঙচুর করা হচ্ছে, অতি অকারণে গোরস্থানে ঝুলানো হচ্ছে নোটিশ৷ এসবই করা হচ্ছে কোনো যুক্তি বা বুদ্ধির তোয়াক্কা না করে৷ অনেকটা হই হই করে ১০ জনের গোলমালে সামিল হওয়ার মতো করে৷ অথচ চলছে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আড্ডা, ঘটা করে ত্রাণ বিতরণ, উপসানালয়ে দলবেঁধে হাজির হওয়া ইত্যাদি৷
কেউ যখন দুর্বল তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে আমরা যে অনাবিল আমোদ পাচ্ছি তা কী অশনি সংকেত দিচ্ছে তা আমাদের ভেবে দেখতে হবে৷ মনুষ্যত্বের যে বড়াই আমরা করি তার একটি বড় পরিচয় বিপদগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো, ক্ষণিকের স্ফুর্তিতে আমরা যেন তা ভুলে না যাই৷
যারা বাঁচিয়ে রাখছেন তাদের ধন্যবাদ
তারা না থাকলে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতো অনেক বেশি মানুষ৷ করোনার কারণে ঘরবন্দি জীবনও হয়ে যেতো অচল৷ সারা বিশ্ব ধন্যবাদ জানাচ্ছে তাদের৷ দেখুন ছবি ঘরে...
ছবি: Reuters/H. McKay
ভবনজুড়ে ধন্য ধন্য
ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি ভবন৷ ভবনজুড়ে লেখা, সংহতি, সহানুভূতি, সহমর্মিতা, ঐক্য এবং স্নেহ৷ এসবই দেশের সব নার্স, ডাক্তার এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য লেখা৷
খুব বড় অক্ষরে ধন্যবাদও জানানো হয়েছে তাদের
ছবি: Reuters/A. Perobelli
চিকিৎসাকর্মীদের ধন্যবাদ
করোন ভাইরাসের কবলে যুক্তরাষ্ট্রও বিপর্যস্ত৷ নিউ ইয়র্কের এক হাসপাতালে সংক্রমিতদের বাঁচানোর জন্য দিনরাত কাজ করছেন ডাক্তার-নার্সরা৷ বিশাল অক্ষরে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এক নিউইয়র্কবাসী৷
ছবি: Reuters/A. Kelly
কৃতজ্ঞ পাব
কদিন আগেও নিউইয়র্কের উইন্টার বিয়ার নামের পাবটির বাইরে লেখা থাকতো মেনু, খোলার সময় আর বন্ধের সময়৷ এখন সেই বোর্ড জুড়ে শুধু ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মীদের ধন্যবাদ জানানোর বার্তা৷
ছবি: Reuters/A. Couldridge
'গুরুত্বপূর্ণ' কর্মীদের ধন্যবাদ
সমাজে ডাক্তার-নার্সদের গুরুত্ব কে না বোঝে৷ তবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মুদি বা ঔষধের দোকানদার, কিংবা নিরাপত্তাকর্মীদের গুরুত্বের কথা স্বাভাবিক সময়ে ক''জনইবা মনে রাখে৷ করোনা সংকটের সময় তাদের গুরুত্ব খুব উপলব্ধি করছে সবাই৷ বৃটেনের ম্যানচেস্টার শহরের এক রাস্তায় তাদের ধন্যবাদ জানানো ব্যানার৷
ছবি: Reuters/P. Noble
নীল 'লন্ডন আই'
বৃটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মীদের প্রতি সমর্থন ও কৃতজ্ঞতা জানাতে নীল রঙে সেজেছে লন্ডন আই৷
ছবি: Reuters/H. McKay
কিশোরীর কৃতজ্ঞতা
বৃটেনের হাই উইকম্ব শহরের এক দেয়ালে লিখেকরোনার বিরুদ্ধে যারা সামনে থেকে লড়ছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে এক কিশোরী৷
ছবি: Reuters/E. Keogh
মুম্বাইয়ের ধন্যবাদ
হাততালি দিয়ে, থালাবাসন বাজিয়ে আর পতাকা নেড়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইরত অগ্রসৈনিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে ভারতের মুম্বাইয়ের এক ভবনের মানুষ৷
ছবি: Reuters/F. Mascarenhas
যারা যত্ন নাও...
প্যারিসের এক বাড়ির ব্যালকনিতে সাদা কাপড়ে লেখা, ‘‘যারা আমাদের যত্ন নাও, তাদের অনেক ধন্যবাদ’’
ছবি: Reuters/B. Tessier
'তোমাদের জন্য হাততালি'
তখন সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জুরিখ হাততালি দিয়ে করোনা-সংকটের সময়ও যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে৷ এক নারীও যোগ দিলেন তাতে৷
ছবি: Reuters/A. Wiegmann
খেলার মাঠেও...
ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামেও এখন ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে ধন্যবাদ জানানোর বার্তা৷