1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেটে আসক্তি কমাতে জার্মানিতে চলছে ভাবনা-চিন্তা

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১১

নেশা মানেই শুধু মদ বা মাদক নয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করলেও এমন নেশা হয়ে যেতে পারে, যা থেকে নিস্তার পাওয়া কঠিন৷ তবে এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে৷

Chinese youngsters online at fast food restaurant, Beijing, China, photo 2002/7/24
ইন্টারনেটে বুঁদ কিছু তরুণ-তরুণীছবি: AP

জার্মানিতে নাকি প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ ইন্টারনেটের নেশায় বুঁদ হয়ে আছেন৷ অর্থাৎ লটারির নেশা যাদের রয়েছে, তাদের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি এই সংখ্যা৷ তবে ইন্টারনেটের নেশায় কে ঠিক কতটা আসক্ত রয়েছে, তার মধ্যে হেরফের রয়েছে৷ তাছাড়া নির্ভরযোগ্য তথ্য-পরিসংখ্যান না থাকায় এক্ষেত্রে গবেষণাও এখনো পরিণত অবস্থায় পৌঁছয় নি৷ তবে জার্মানির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে মোটেই হাল্কাভাবে দেখছে না৷ তাই আধুনিক যুগের এই শক্তিশালী মাধ্যমের প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তারাও তথ্য সংগ্রহ করতে আসরে নেমেছে৷ যেসব মানুষ ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তাদের আপাতত টেলিফোনে কিছু প্রশ্ন করা হচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা ভেবেচিন্তে প্রশ্নগুলি স্থির করছেন৷

তাদেরই একজন হান্স-ইয়ুর্গেন রুম্ফ৷ তিনি জানালেন, ‘‘যেমন আমরা জানার চেষ্টা করি, স্কুলে বা পেশার ক্ষেত্রে সামাজিক কার্যকলাপ খুব কম কি না৷ এটা অত্যন্ত জরুরি একটা বিষয়, কারণ এই ধরণের মানুষের ক্ষেত্রে আসক্তি মারাত্মক আকার ধারণ করে৷ তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়৷ আমরা শুধু জানি যে এই গোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেটে আসক্তির আশঙ্কা বেশি৷ তবে সেই আসক্তির মাত্রা সম্পর্কে আমাদের এখনো স্পষ্ট ধারণা নেই৷''

আসক্তি সংক্রান্ত গবেষকরা এই ধরণের মানুষের একটা চিত্র স্থির করেছেন৷ যে কোনো সময় এদের দেখলেই মনে হয় এরা বড় ক্লান্ত৷ পোশাক-আশাক সম্পর্কে তারা উদাসীন, শরীরের যত্ন নেওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যায় না৷ এদের ঘরে চারিদিকে পিৎসা'র খালি বাক্স পড়ে থাকে৷ আশেপাশে কী হচ্ছে, তা নিয়ে এদের মাথাব্যথা নেই৷ কিছু বললে উল্টে চটে যেতে পারে৷ যারা মদের নেশায় চুর হয়ে থাকে, তাদের কাছ থেকে মদের বোতল কেড়ে নেওয়া যায়৷ কিন্তু ইন্টারনেটে আসক্ত মানুষের ক্ষেত্রে তা করা যায় না৷

ইন্টারনেট নিয়ে মগ্ন শিশুরাওছবি: Fotolia/somenski

রুম্ফ এবিষয়ে বললেন, ‘‘আমার মনে হয় ইন্টারনেট এমন এক মাধ্যম, যা পেশাগত কারণেও আমাদের প্রয়োজন হয়৷ ইন্টারনেট'কে এমন সব কাজে লাগানো হয়, যা মোটেই আসক্তির কারণ হতে পারে না৷ অ্যালকোহলের দাম বাড়িয়ে আসক্ত মানুষের নাগালের বাইরে রাখা যায় বটে, কিন্তু ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে এই কৌশল চলতে পারে না৷''

জার্মান সরকারের মাদকাশক্তি মোকাবিলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানালেন, সরকারের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিভিন্ন সুফল ও কুফল তুলে ধরা হয়েছে৷ অর্থাৎ যারা নিজের অজান্তেই ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তে পারে, তাদের আগেভাগেই সতর্ক করে দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার৷ তাছাড়া আসক্ত মানুষদের জন্য বিশেষ চিকিৎসারও ব্যবস্থা রয়েছে৷ তাদের পুরোপুরি ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখা হয় না, বরং ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ চাপানো হয়৷ যেমন তাদের গেমস খেলতে দেওয়া হয় না বা বিশেষ কিছু কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখা হয়, যা তাদের আটকে রাখতে পারে৷

জার্মানিতে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় আশ্চর্যজনক ফলাফল পাওয়া গেছে৷ যেমন প্রায় ১৫,০০০ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে সমবয়সী ছেলেদের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি আসক্তি লক্ষ্য করা গেছে৷

সমস্যাটা জার্মানির একার নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও এবিষয়ে নানারকম ভাবনা-চিন্তা চলছে৷ গবেষকরা বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসাগত দিক থেকে এমন এক কাঠামো সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন, যার আওতায় এই সমস্যার মোকাবিলা করা যায়৷ রাতারাতি কোনো সাফল্যের আশা না করলেও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে এক্ষেত্রে উন্নতির আশা করছেন হান্স-ইয়ুর্গেন রুম্ফ৷ তিনি বললেন, ‘‘আমরা নেদারল্যান্ডস'এর গবেষকদের সঙ্গে মিলে মূল্যায়ন করেছি৷ সবাই এক্ষেত্রে একটি সাধারণ মানদণ্ড সৃষ্টি করতে আগ্রহী৷ তবে এটা সময়ের প্রশ্ন৷ আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে সমস্যা সনাক্ত করতে পারি৷''

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ