1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টারনেটে নকল

৪ মার্চ ২০১২

ইন্টারনেটে বে-আইনি ডাউনলোড ও নকল পণ্যের সমস্যার মোকাবিলায় এক আন্তর্জাতিক কাঠামো গড়ে তোলার যে উদ্যোগ চলছে, ইউরোপে তা নানা জটিলতার মুখে পড়েছে৷

Eine Demonstrantin trägt am Samstag (25.02.2012) nahe des Roten Rathauses in Berlin einen Mundschutz mit der Aufschrift "ACTA". In mehreren deutschen und europäischen Städten wurde mit Demonstrationen, Kundgebungen und Aktionen gegen das ACTA-Abkommen (zu deutsch: Anti-Produktpiraterie-Handelsabkommen) protestiert. Foto: Florian Schuh dpa/lbn
Berlin Kundgebung gegen ACTA und IPREDছবি: picture-alliance/dpa

পণ্য ও পরিষেবার নকল

নকল পণ্যের পাশাপাশি আজকাল ইন্টারনেটেও নকলের ছড়াছড়ি৷ সংগীত ও চলচ্চিত্রের ফাইল বে-আইনিভাবে চালাচালি করা হচ্ছে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের মাধ্যমে৷ এর ফলে অনেক কোম্পানির কোটি কোটি ডলার লোকসান হচ্ছে, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির বিশাল ক্ষতি হচ্ছে৷ বিচ্ছিন্নভাবে এই সমস্যার মোকাবিলার অনেক চেষ্টা চালানো হয়েছে৷ এবার একাধিক দেশ মিলে এই মর্মে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার পোশাকি নাম ‘আক্টা' বা অ্যান্টি কাউন্টারফিটিং ট্রেড এগ্রিমেন্ট'৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা, জাপান, মেক্সিকো, মরক্কো, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও সুইজারল্যান্ড এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ চুক্তির অনুমোদন পর্ব শেষ হলেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডাব্লিউটিও'র যে কোনো সদস্য এই কাঠামোয় যোগ দিতে পারবে৷

আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি মহৎ উদ্যোগ৷ তবে বলাই বাহুল্য শিল্পোন্নত দেশগুলি এর ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে৷ তারাই নকল ও বে-আইনি পণ্য বা পরিষেবার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ ইউরোপীয় কমিশনের সূত্র অনুযায়ী প্রতি বছর ইউরোপে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা প্রায় ৮০০ কোটি ইউরো৷ এই সমস্যার মোকাবিলা করা প্রয়োজন – এবিষয়ে সব পক্ষ মোটামুটি একমত হলেও খুঁটিনাটি বিষয়গুলি নিয়ে চরম বিতর্ক দেখা দিয়েছে৷ সমালোচকদের মতে, এই চুক্তির বেশ কয়েকটি ধারা পছন্দমতো ব্যাখ্যা করা যাবে৷ বিশেষ করে ইউরোপের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন৷ তাদের আশঙ্কা, ইন্টারনেট কোম্পানিগুলি গ্রাহকদের উপর নজরদারি আরও বাড়িয়ে দেবে৷ তাছাড়া সামান্যতম বিচ্যুতি ঘটলেই মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে স্বত্বাধিকারীরা৷

মিউনিখে আক্টা বিরোধী সমাবেশছবি: dapd

বাস্তবায়নের পথে বাধা

বহু বছর ধরে আলাপ-আলোচনার পর চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে৷ তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশের অনুমোদন না পেলে সেটি কার্যকর হবে না৷ শুধু তাই নয়, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট'কেও এই চুক্তি অনুমোদন করতে হবে৷ কিছু মহলে প্রাথমিক উচ্ছ্বাসের পর বিশেষ করে সরকারি স্তরে বিস্ময়কর নীরবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ অপ্রিয় সিদ্ধান্তের দায় তারা যেন ব্রাসেলস'এর দিকে ঠেলে দিতে ব্যস্ত৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে জার্মানির সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সাংসদ ব্যার্ন্ট লাঙে এপ্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘এরা অনেক বছর ধরে এমন এক চুক্তির দাবি জানিয়ে এসেছে এবং গোটা প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে৷ কয়েকটি দেশ এই চুক্তির পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে সক্রিয় থেকেছে৷ সুশিল সমাজ যেই না সঠিক কারণে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে, বিভিন্ন দেশের সরকার তখন পিছিয়ে এসে বলছে, এবার ইউরোপীয় স্তরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক৷''

বুধবার সন্ধ্যায় ইইউ বাণিজ্য কমিশনর কারেল দে গ্যুশ্ট ইউরোপীয় পার্লামেন্ট'এর এক কমিটির সামনে বলেন, এই ‘আক্টা' চুক্তি কোনোমতেই আমাদের স্বাধীনতা খর্ব তো করছেই না, উল্টে আমাদের রীতিনীতিরই সুরক্ষা করছে৷ ‘বিগ ব্রাদার' হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা এই চুক্তির লক্ষ্য নয়৷ মেধাস্বত্ব রক্ষা করতে ইন্টারনেটে বে-আইনি ভাবে অডিও ও ভিডিও ফাইল ডাউনলোড বন্ধ করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ তিনি আরও জানান, যে ইউরোপীয় আইনেও কোনো পরিবর্তন আনা হচ্ছে না৷ এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সেন্সর করারও কোনো চেষ্টা চালানো হবে না৷

ইন্টারনেটে কেনাকাটাছবি: fotolia/by-studio

খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সংশয়

কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে অবশ্য তেমন কাজ হচ্ছে না৷ তারা এই চুক্তির ফলে নানা রকম বিপদের আশঙ্কা করছেন৷ যেমন তদন্তের ফলে ভুল ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে তারা মনে করছেন৷ তাছাড়া এই চুক্তির মূল সমস্যা হলো, যারা বে-আইনি ভাবে কোনো ফাইল ডাউনলোড করছে, তাদের শায়েস্তা করতেই যেন এত কড়াকড়ি৷ যারা সেই ফাইল ইন্টারনেটে রাখছে, তাদের বিরুদ্ধেই মূল পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন সমালোচকরা৷

এই চুক্তির আরেকটি ত্রুটির প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন অনেকে৷ সব দেশ এই কাঠামোয় সামিল না হওয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে এমন এক চুক্তির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সবুজ দলের সাংসদ ইয়ান ফিলিপ আলব্রেশট মনে করেন, ‘‘নকল পণ্যের সমস্যার মোকাবিলায় এক আন্তর্জাতিক চুক্তি তৈরি করলে সব দেশকেই তাতে সামিল করতে হবে৷ বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশগুলিকে বাইরে রাখলে চলবে না৷ কারণ সেই সব দেশেই এই ধরণের আইন লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে৷ উন্নত প্রযুক্তি বা ওষুধের শস্তা সংস্করণ পেতে হলে এটা জরুরি৷''

এই অবস্থায় ‘আক্টা' আইন ইউরোপে কবে, কীভাবে কার্যকর হবে, তা বলা কঠিন৷ কিছু আইনি জটিলতা কাটাতে আদালতের হস্তক্ষেপেরও প্রয়োজন হচ্ছে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বেঁকে বসলে গোটা বিষয়টি আপাতত বাতিল হয়ে যাবে৷ আবার নতুন করে প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হবে৷

প্রতিবেদন: রাল্ফ বোসেন / সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ