ব্রাজিলের ফুটবল
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২হবে নাই বা কেন৷ একে তো ফুটবল বললেই বিশ্বের অর্ধেক মানুষ ব্রাজিলের কথা ভাবে, আবার ব্রাজিল বললে ভাবে ফুটবলের কথা৷ পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের হোতা৷ ওদিকে আবার ব্রাজিলে আট কোটির বেশি মানুষের ইন্টারনেট যোগাযোগ আছে৷ এদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ নিয়মিত সোশাল নেটওয়ার্কগুলি ব্যবহার করে থাকে৷ ইন্টারনেটে এক একটা ফুটবল টিমের ফ্যানের সংখ্যা আড়াই কোটি পর্যন্ত৷
কাজেই ফার্স্ট ডিভিশন ক্লাবগুলোর ইন্টারনেট সাইট, ফেসবুক পেজ, টুইটার অ্যাকাউন্ট, এ'সব তো আছেই৷ অনেকে আবার অনলাইন টেলিভিশনও দেখিয়ে থাকে অথবা স্মার্টফোনের জন্য অ্যাপ্লিকেশন বার করেছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন প্রযুক্তির ফলে ফ্যানদের সঙ্গে ক্লাবের সম্পর্ক আর শুধু শনিবারের খেলার মাঠে সীমাবদ্ধ নয়৷ ফ্যানরা এখন রোজই, সর্বক্ষণই তাদের ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত৷
ব্যাপারটা কতদূর যেতে পারে, তার প্রমাণ সাঁও পাওলোর প্রখ্যাত করিন্থিয়ান্স ক্লাবের ইন্টারনেটে সৃষ্ট ‘‘করিন্থিয়ান পিপলস রিপাবলিক'' বা করিন্থিয়ান গণপ্রজাতন্ত্র৷ প্রায় দু'লাখ ফ্যান এই কাল্পনিক প্রজাতন্ত্রের নাগরিক৷ সেই প্রজাতন্ত্রের আবার নিজস্ব মুদ্রা, দূতাবাস, আইডি কার্ড, সব কিছু আছে৷
রথ দেখা আর কলা বেচার মতো করিন্থিয়ান্স ক্লাব ওয়েবে তাদের উপস্থিতি যেমন দেখাচ্ছে, তেমনই তাদের মার্চেন্ডাইজ বা পণ্যও বেচে চলেছে৷ করিন্থিয়ান্সদের অনলাইন শপ যে পরিমাণ পণ্য বেচে, তা নাকি ১৫টা ফ্যানশপের পক্ষে করা সম্ভব নয়৷ এছাড়া ফ্যানদের অনলাইন মেম্বারশিপের ফি আছে, আছে ক্লাবের সাইটে বিজ্ঞাপন থেকে আয়, ক্লাবের ওয়েব-টিভি'তে বিজ্ঞাপন থেকে আয়, যা সব মিলিয়ে মাসে চার লাখ ইউরো হলেও আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷
করিন্থিয়ান্সদের ফ্যানদের ফেসবুক পেজ থেকে বোঝা যায় তাদের কেনাকাটার আর বেড়ানোর বাতিক৷ কাজেই তাদের ফুটবল ক্লাব একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে সহযোগিতায় এখন পর্যটন ব্যবসায়ে ঢুকে পড়েছে৷ এই ধরুন করিন্থিয়ান্স দল যাচ্ছে জাপানে ম্যাচ খেলতে, ওদিকে করিন্থিয়ান্স ক্লাব তার ফ্যানদের জাপান যাবার টিকিট বেচছে৷
ফ্যানদের কাছে কোনো প্লেয়ার বিশেষভাবে জনপ্রিয় হলে, বিজ্ঞাপনের বাজারে তার দাম বেড়ে যায় এবং ক্লাবও তা থেকে লাভবান হয়৷ সবই ভালো কথা, শুধু ফুটবলের গল্প শোনাতে গিয়ে সেটাই যেন একেবারে ধামাচাপা পড়ে গেল!
এসি / এসবি (এএফপি)