1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইন্টেলিজেন্স পুলিশিং ও যৌথ নিরাপত্তা কৌশল

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৯ মে ২০১৯

এক মাসের ব্যবধানে পুলিশের ওপর দুইবার সন্ত্রাসী হামলার কারণে এবারের ঈদে নিরাপত্তা কৌশলে পরিবর্তন এসেছে৷ বড় মার্কেট ও স্থাপনার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার সমন্বয় হচ্ছে৷

Bangladesch Dhaka - Rapid Action Batallion (RAB)
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Nath

 জোর দেয়া হচ্ছে ইন্টেলিজেন্স পুলিশিংয়ে৷ রোজার মাসের শুরুতেই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের বড় সব শহরে৷ শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার কারণেও এবারের নিরাপত্তা আগের চেয়ে কঠোর৷ বিশেষ করে গুলিস্তানে পুলিশের ওপর হামলার পর সর্বশেষ মালিবাগে পুলিশের গাড়িতে টাইম বোমার বিস্ফোরণ পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে৷ এরইমধ্যে সারা দেশে পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে৷ জঙ্গিদের সাম্প্রতিক যে ‘থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট' তাতে পুলিশই হামলার প্রথম টার্গেটে আছে৷ তাই পুলিশের স্থাপনা, বিশেষ করে থানা ও ফাঁড়ির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার পর বাংলাদেশের চার্চসহ সব ধরনের ধর্মীয় স্থাপনায় নিরাপত্তা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি বড় স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷ এই নিরাপত্তা অব্যাহত আছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে৷ হোলি আর্টিজান হামলার পর কূটনৈতিক পল্লীতে বিশেষ নিরাপত্তা দেয়া হয়৷

রোজার মাসে শপিংমল, মার্কেট, রেল, বাস ও লঞ্চ স্টেশনে যে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, তা বহাল রেখেই ঈদের ২-৩ দিন আগে থেকে নতুন স্তরের নিরাপত্তায় কাজ শুরু হবে বলে পুলিশের কয়েকটি পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে৷ তাঁরা জানিয়েছেন, ওই সময়ে ইন্টেলিজেন্স পুলিশিংয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে৷ দৃশ্যমান এবং সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দারা প্রায় সমান সংখ্যায় তৎপর থাকবেন৷ আর এখন জোর দেয়া হচ্ছে যৌথ নিরাপত্তার ওপর৷ মার্কেট ও স্থাপনার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে র‌্যাব ও পুলিশি নিরাপত্তার সমন্বয় করা হচ্ছে৷

‘আমরা নিরাপত্তা স্ক্যানার ও ডিটেকটর ব্যবাহার করছি’

This browser does not support the audio element.

যমুনা ফিউচার পার্কের নিরাপত্তা বিভাগের জিএম এবং পুলিশের সাবেক ডিআইজি মকবুল হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা নিরাপত্তা স্ক্যানার ও ডিটেকটর ব্যবাহার করছি৷ আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা গ্রুপের ২০০ সদস্য আছে৷ এছাড়া ৩০ জন পুলিশ ও ২০ জন সশস্ত্র আনসার ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন৷ আমাদের পুরো মল সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত৷'' তিনি জানান, পুলিশের সাথে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক হয়৷ তাঁরা কোনো নিরাপত্তা সংকট বা আশঙ্কা দেখলে বা কোনো তথ্য পেলে পুলিশকে দ্রুত জানান৷ ঢাকার আরো কয়েকটি মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাঁরা নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে৷

ঢাকায় এখন পুলিশের টহল বেড়েছে৷ বিশেষ করে বড় বড় মার্কেটের সামনে এই টহল বেশি৷ আর কয়েক দিনের মধ্যে সড়কে আরো চেকপোস্ট বসানো হবে৷ চেকপোস্টের মূল উদ্দেশ্য হবে অনুমোদনহীন যানবাহন আটকানো ও নিরাপত্তা তল্লাশি বাড়ানো৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা এবার নিরাপত্তা কৌশলে প্রয়োজন অনুযায়ী বারবার পরিবর্তন আনছি৷ বড় বড় মার্কেট এবং স্থাপনার যে নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা আছে, তার সঙ্গে আমাদের পুলিশের নিরাপত্তার সমন্বয় করছি৷ তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা আমরা পর্যবেক্ষণ করে পরামর্শও দিচ্ছি, বিশেষ করে এই সময়ে নতুন সিকিউরিটি সদস্য এবং দোকানে নতুন কর্মচারী নিয়োগ না করার জন্য বলেছি৷ আর যারা আছেন, তাদের সব তথ্য আপডেট করা হয়েছে৷''

মার্কেট ও সড়কের নিরাপত্তায় ক্রেতা ও যাত্রীসাধারণ যাতে নির্ভয়ে এবং নির্বিঘ্নে কেনাকাটা এবং চলাচল করতে পারেন তার ওপর গুরত্ব দেয়া হচ্ছে৷ সে কারণে বসুন্ধরা, বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট ও গাউছিয়াসহ বড় বড় মার্কেটে এই সময়ের জন্য পুলিশ দেয়া হয়েছে৷ বড় বড় স্থাপনাকে কেন্দ্র করে টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে৷ সিসি ক্যামেরাগুলো সচল থাকা এবং ফুটেজের সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হয়েছে৷ আর পুলিশ কন্ট্রোল রুমে সিসি কামেরা ‘রাউন্ড দ্য ক্লক' পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে৷ নিরাপত্তার প্রয়োজনে নতুন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়৷

‘নিরাপত্তা কৌশলে প্রয়োজন অনুযায়ী বারবার পরিবর্তন আনছি’

This browser does not support the audio element.

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘ঠিক ঈদের আগে-পরে এবং ঈদের দিনের নিরাপত্তায় আমরা ইন্টেলিজেন্স পুলিশিংয়ের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছি৷ তাই এবার দৃশ্যমান পোশাকে পুলিশ আর সাদা পোশাকে পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের সংখ্যা  প্রায় সমান সমান হবে৷ গোয়েন্দা তথ্যের ওপর কাজ করে তার ভিত্তিতে পুলিশ মুভমেন্টের ওপর জোর দেয়া হয়েছে৷''

এবার পরিস্থিতি বিবেচনা করেই নিরাপত্তায় কৌশলগত পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ আর কৌশল প্রয়োজনে পরিবর্তনও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি৷

সাধারণ বাড়ি-ঘরের  নিরাপত্তায় আগের মতোই নির্দেশনা রয়েছে পুলিশের৷ নগরবাসীকে নিজস্ব নিরাপত্তার ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে৷ প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা চাইতে বলা হয়েছে৷

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা এবার সিসি ক্যামেরায় পুরো শহরের পরিস্থিতি মনিটর করছি৷ রাজধানীর প্রবেশপথগুলো ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আমাদের নিজস্ব সিসি ক্যামেরা সক্রিয় আছে৷ আর কোথায় কোথায় ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সিসি ক্যামেরা আছে তার তালিকাও আছে আমাদের কাছে৷''

জানা গেছে, এবার ঢাকায় পুলিশের বিভাগগুলোর উপ-কমিশনাররা ভাগে ভাগে নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটর করছেন৷ র‌্যাব তাদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছে৷ তারা গোয়েন্দা তথ্যও শেয়ার করছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ