ইন্দোনেশিয়ায় নিখোঁজ হওয়া বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ৷ বিমানটির খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দেশটির বিভিন্ন সংস্থা৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার সুকর্নো-হাত্তা বিমানবন্দর থেকে পশ্চিম কালিমান্তান প্রদেশের রাজধানী পন্টিয়ানাক এর উদ্দেশ্যে প্লেনটি যাত্রা করে৷ বোয়িং ৭৩৭-৫০০ মডেলের বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ সেসময় এটি ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় ছিল৷ শ্রিভিজয়া এয়ার এর ফ্লাইটটিতে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে৷ ফ্লাইটটিতে মোট ৬২জন আরোহী ছিলেন৷
বিমানটির ভাগ্যে কী ঘটেছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
তবে দেশটির জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্যামব্যাং সুরইও আজি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বিমানটি সম্ভবত ভূপাতিত হয়েছে৷ তিনি বলেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যেসব স্থানে বিমানটি পড়তে পারে সেসব জায়গায় তাদের দল অনুসন্ধান চালাচ্ছে৷
ইন্দোনেশিয়র পরিবহণমন্ত্রী বুডি কারইয়া সুমাডি জানান, জাকার্তার উত্তরে লাংকাং দ্বীপ ও লাকি দ্বীপের মধ্যবর্তী এলাকায় অনুসন্ধান কাজ চলছে৷ চারটি যুদ্ধ জাহাজসহ বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী জাহাজ অনুসন্ধান চালাচ্ছে৷
এর আগে বিমান নিখোঁজ হওয়ার সংবাদটি নিশ্চিত করে সরকারের মুখপাত্র আদিতা ইরাবতি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে তদন্ত চলছে৷ সরকারের অনুসন্ধান কমিটি, উদ্ধারকারী সংস্থা ও জাতীয় যোগাযোগ নিরাপত্তা কমিটি সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে৷
এয়ারলাইন থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ৫৬ জন যাত্রী, দুইজন পাইলট ও চারজন ক্রু সদস্য ছিলেন৷
সুকর্নো-হাত্তা বিমানবন্দর এর মুখপাত্র হাইরুল আনোয়ার বলেছেন, ল্যানক্যাং দ্বীপের কাছকাছি পৌঁছানোর পর প্লেনটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ এদিকে সমুদ্র থেকে কিছু ভগ্নাংশ উদ্ধারের ছবি প্রচার করা হয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমে৷ সিএনএন ইন্দোনেশিয়াকে সেখানকার একজন নিরাপত্তাকর্মী কিছু তার ও ধাতব বস্তু খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন৷
যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি টহল নৌকা সম্ভাব্য ‘দুর্ঘটনাস্থল’ থেকে মানব দেহের কিছু অংশ খুঁজে পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম কম্পাস৷
এফএস/আরআর (ডিপিএ, রয়টার্স)
যেসব বিমান দুর্ঘটনায় যাত্রীরা সবাই বেঁচে ছিলেন
অধিকাংশ সময়ই বিমান দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় প্রাণ৷ কদাচিৎ হলেও এমন কিছু বিমান দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে যেখানে বেঁচে ছিলেন সবাই৷ ছবিঘরে থাকছে এমন কিছু বিমান দুর্ঘটনার চিত্র, যেখানে সব যাত্রীই পেয়েছেন সৌভাগ্যের ছোঁয়া৷
ছবি: dpa - Report
ডুরাংগো সৌভাগ্য
এরোমেক্সিকো ফ্লাইট ২৪১৩৷ উত্তর মেক্সিকোর ডুরাংগো শহর থেকে ১০১ জন যাত্রী নিয়ে মেক্সিকো সিটির উদ্দেশ্যে গত ৩১ জুলাই আকাশে উড়ে বিমানটি৷ উড্ডয়নের কিছু সময় পরেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়৷ সৌভাগ্যজনক যে এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে ৮০ জনের মতো যাত্রী আহত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/Xinhua
হাডসন মিরাকল
এটি ১৫ জানুয়ারী ২০০৯ সালের ঘটনা৷ প্রায় ১৫০-এর অধিক যাত্রী নিয়ে নর্থ কেরলিনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ইউএস এয়ারওয়েজ এর বিমানটি৷ যাত্রা পথে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে, বিমান চালক ক্যাপ্টেন সুলি সুলেনবার্গার দেখালেন এক অপূর্ব দক্ষতা৷ কোনো বিমানবন্দরে নয়, তিনি বিমানটি অবতরণ করলেন নিউ ইয়র্ক শহরের হাডসন নদীর বরফ-শীতল পানিতে৷ বেঁচে যান যাত্রীরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Day
টরেন্টো মিরাকল
প্রায় ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে এয়ার ফ্রান্স এয়ারবাস এ৩৪০ আগস্ট ২, ২০০৫ সালে টরেন্টোর পিয়ার্সন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করার সময় তীব্র ঝড়ের মুখে পড়ে বিধ্বস্ত হয়৷ভাগ্যক্রমে উদ্ধারকর্মীরা যাত্রীদের সকলকেই কোনো প্রাণহানির ঘটনা ছাড়া উদ্ধার করতে সক্ষম হয়৷ এ ঘটনায় ১২ জন যাত্রী আহত হয়৷
ছবি: dpa - Report
ডেনভারে শুভক্ষণ
কন্টিনেন্টাল এয়ারলাইনস এর বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি ডিসেম্বর ২০, ২০০৮ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রী সহ উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল৷ কিন্ত বিপরীত দিক থেকে আসা তীব্র বাতাসের বেগে বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে বিমানটি৷ তবে যাত্রীদের সবাই নিরাপদে বেরিয়ে আসেন৷
ছবি: Getty Images/D. Zalubowski
প্রশান্ত মহাসাগরে জরুরি অবতরণ
১৯৫৬ সালের ঘটনা৷ বোয়িং ৩৭৭ স্ট্রাটক্রুইজার ২৪ জন যাত্রী ও সাতজন ক্রু’সহ হনলুলু থেকে সান ফ্রান্সিসকো যাওয়ার পথে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বৈমানিক বিমানটিকে প্রশান্ত মহাসাগরে জরুরি অবতরণ করেন৷ অবতরণটি যেমন ছিল সফল, আরোহীদের সবাইও ছিলেন নিরাপদ৷