ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সমকামীদের একটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ১৪১ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ সে দেশে সমকামীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রচারণার অংশ হিসেবে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
রবিবার রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের কয়েকজন সমকামী পতিতাবৃত্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করেছে পুলিশ৷ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ক্লাবটির মালিকসহ দশ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে৷ বাকি ১৩১ জনকে সম্ভাব্য সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মুখপাত্র আর্গো ইউভোনো৷
সমকামিতা বৈধ এমন কয়েকটি মুসলিম-প্রধান দেশ
বিশ্বের বেশ কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হলেও, তারা বৈষম্যের শিকার হন৷ ছবিঘরে থাকছে এমনই আটটি দেশের কথা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তুরস্ক
১৮৫৮ সালে অটোমান সাম্রাজ্য সমকামিতাকে বৈধতা দেয়৷ এরপর তুরস্ক স্বাধীন হলে সেই আইন বলবৎ রাখে৷ তবে সে দেশের সংবিধানে সমকামীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা না থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে যেমন তেমনি সামাজিকভাবেও সমকামীদের এখনও বৈষম্যের শিকার হতে হয়৷
ছবি: picture-alliance/abaca/H. O. Sandal
মালি
পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির সংবিধানে সমকামী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়নি৷ তবে দেশটির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ সমকামিতা পছন্দ করে না৷ তাই বৈধ হলেও মালির সমকামীরা বেশ ভালোই বৈষম্যের শিকার হন৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Saget
জর্ডান
১৯৫১ সালে দেশটিতে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়া হয়৷ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশের তুলনায় সেখানকার সমকামীরা বেশ ভালোই আছে৷ সরকারও আইন করে সমকামীদের ‘অনার কিলিং’-এর হাত থেকে রক্ষা করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
ইন্দোনেশিয়া
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস এই দেশটিতে৷ সেখানকার আইনে সমকামিতাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়নি৷ ২০০৩ সালে একবার সেরকম উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Rudianto
আলবেনিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে সমকামিতা বৈধ৷ এমনকি আইন করে সমকামীদের বৈষম্যের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷
ছবি: SWR/DW
বাহরাইন
১৯৭৬ সালে সেখানে সমকামিতাকে আইনগত বৈধতা দেয়৷ তবে দেশটিতে এখনও প্রকাশ্যে ছেলেরা মেয়েদের, কিংবা মেয়েরা ছেলেদের পোশাক পরতে পারে না৷
ছবি: Getty Images
ফিলিস্তিন (পশ্চিম তীর)
পশ্চিম তীরের জর্ডান অংশে ১৯৫১ সাল থেকে সমকামিতা বৈধ৷ তবে গাজাতে নয়৷ মজার ব্যাপার হচ্ছে, গাজায় যে আইনের কারণে সমকামিতা নিষিদ্ধ সেটা বলবৎ হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে৷
ছবি: Shadi Hatem
ইরাক
দেশটি সমকামিতাকে বৈধতা দিলেও বিষয়টি এখনও সেখানে ‘ট্যাবু’ হয়েই আছে৷
ছবি: Getty Images/Afp/Safin Hamed
8 ছবি1 | 8
গোপনে এক তদন্ত পরিচালনার পর আটলান্টিস সাওনা অ্যান্ড জিম কমপ্লেক্সে রবিবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ৷ সেই সময় ক্লাবটিতে ‘ওয়াইল্ড ওয়ান’ নামের এক ইভেন্ট পরিচালনার প্রস্তুতি চলছিল৷ সেখানে স্ট্রিপটিজের মতো বিষয়াদিও ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷
মানবাধিকার কর্মীরা অবশ্য ক্লাবটিতে পুলিশের অভিযানের নিন্দা জানিয়েছেন৷ তাঙ্গেল পায়েসট্রি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘অভিযানের যেসব ছবি প্রকাশ পেয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ বিষয়টি তত্ত্বাবধানের ক্ষেত্রে কোনো সতর্কতাই অবলম্বন করেনি৷ আমি পুলিশের অভিযানের তীব্র নিন্দা জানাই৷ এটা ন্যয়সঙ্গত হয়নি, বরং এটি সমকামীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে৷’’
প্রসঙ্গত, গ্রেপ্তারকৃতদের শুধুমাত্র যৌনসঙ্গমের দায়ে শাস্তি দেয়া জাকার্তার কর্মকর্তাদের পক্ষে সম্ভব নয়৷ ফলে তাদের সে দেশের কঠোর পর্নোগ্রাফিবিরোধী আইনের আওতায় শাস্তি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ সেক্ষেত্রে একেকজনের পনের বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷ পর্নোগ্রাফিবিরোধী আইনে কেউ শুধুমাত্র পর্ন ডাউনলোড করলেও চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা দেড় লাখ মার্কিন ডলার অবধি অর্থদণ্ডের সুযোগ রয়েছে৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...
যেসব দেশে সমকামী বিয়ে বৈধ
এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৩টি দেশে সমকামী বিয়ে বৈধ করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ১৪টি দেশ ইউরোপের৷ তালিকায় এশিয়ার কোনো দেশ নেই৷
ছবি: Reuters/C. Tilley
নেদারল্যান্ডস
২০০১ সালে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নেদারল্যান্ডসে সমকামী বিয়ে বৈধ ঘোষণা করা হয়৷ ছবিতে সমকামী দম্পতিকে বিয়ের পর কেক কাটতে দেখা যাচ্ছে৷ ২০১১ সালে দেশটিতে সমকামী বিয়ে বৈধ হওয়ার ১০ বছর পূর্তিতে তাঁরা বিয়ে করেন৷
ছবি: Evert Elzinga/AFP/Getty Images
ইংল্যান্ড
২০১৩ সালের জুলাইতে সমকামী বিয়ে বৈধ করে আইন পাস হয়৷ এরপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে এলটন জন তাঁর সঙ্গীকে বিয়ে করেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Pitarakis
ফ্রান্স
দেখছেন দেশটির প্রথম সমকামী জুটির বিয়ের ছবি৷ ২০১৩ সালের মে মাসে ফ্রান্সে এই বিয়ের বৈধতা দেয়া হয়৷
ছবি: Reuters
লুক্সেমবুর্গ
২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেয়া হয়৷ এর চার মাস পর সঙ্গীকে বিয়ে করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাভিয়ের বেটেল (ডানে)৷
ছবি: Reuters/F. Lenoir
আয়ারল্যান্ড
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে আয়ারল্যান্ডে ২০১৫ সালের মে মাসে গণভোটের মাধ্যমে সমকামী বিয়ে বৈধ করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Crawley
ইউরোপের অন্যান্য দেশ
২০০৩ সালে বেলজিয়াম, ২০০৫ সালে স্পেন, ২০০৯ সালে নরওয়ে, একই বছর সুইডেন, ২০১০ সালে পর্তুগাল, একই সময়ে আইসল্যান্ড, ২০১২ সালে ডেনমার্ক, ২০১৪ সালে ফিনল্যান্ড এবং ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গ্রিসে সমকামী বিয়ের বৈধতা দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/T. Blackwood
দক্ষিণ আফ্রিকা
আফ্রিকার প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৬ সালে থেকে সমকামী বিয়ে বৈধ৷ একই সময় থেকেই তাঁরা সন্তানেরও অভিভাবক হওয়ার অনুমতি পায়৷
ছবি: dapd
আর্জেন্টিনা
ল্যাটিন অ্যামেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে ২০১০ সালে এরকম বিয়ের বৈধতা দেয় আর্জেন্টিনা৷ এরপর ঐ মহাদেশের ব্রাজিল, উরুগুয়ে ও কলম্বিয়ায় সমকামী বিয়ে বৈধ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্রাজিল
ল্যাটিন অ্যামেরিকার তৃতীয় দেশ হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে ব্রাজিলে সমকামী বিয়ে বৈধ৷ ছবিটি ঐ বছরের ৮ ডিসেম্বর তোলা৷ সেদিন প্রায় ১৩০ সমকামী জুটি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন৷ এক অনুষ্ঠানে এতজন সমকামীর বিয়ে করার ওটিই ছিল তখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদাহরণ৷
ছবি: Getty Images
যুক্তরাষ্ট্র
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ২০১৫ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে সমকামী বিয়ে বৈধ ঘোষণা করে৷ উত্তর অ্যামেরিকার ক্যানাডা ও মেক্সিকোর পাঁচটি রাজ্যেও এখন এই বিয়ে বৈধ৷
ছবি: Reuters/C. Tilley
নিউজিল্যান্ড
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের একমাত্র দেশ যেখানে ২০১৩ সালের এপ্রিলে সমকামী বিয়ে বৈধ করা হয়৷ ছবিতে নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউন থেকে অকল্যান্ডগামী একটি ফ্লাইটে এমন একটি বিয়ে পড়ানোর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷