সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় উসকানি রোধে সোমবার একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে ইন্দোনেশিয়া৷ কেউ যদি কারো ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হেনে কথা বলে তাহলে কোনো ব্যক্তি এর মাধ্যমে ওই ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারবে৷
বিজ্ঞাপন
ইন্দোনেশিয়ায় কোনো রাষ্ট্রধর্ম নেই৷ ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, ক্যাথলিকসহ ৬টি ধর্ম এবং আদিবাসীদের নিজস্ব ধর্ম প্রচলিত আছে সেখানে, যদিও দেশটির ৯০ শতাংশ মানুষই ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশটিতে সাম্প্রদায়িক তৎপরতা বেড়ে চলেছে৷ সংখ্যালঘু নির্যাতনের নানা ঘটনা ঘটছে৷ বেশ কয়েকটি মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে৷
অ্যাপটির নাম দেয়া হয়েছে ‘স্মার্ট প্যাকেম’৷ সেখানে আহমাদিয়া, গাফাতারসহ বেশ কয়েকটি ইসলামি কট্টরপন্থি দলের নামের তালিকা রয়েছে৷ দেশটির সর্বোচ্চ ইসলামি কাউন্সিল তাদের বিপথগামী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে৷ অ্যাপের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি এই দলগুলোর মধ্যে কোন কোনটি ক্ষতিকর এবং কেন ক্ষতিকর তা চিহ্নিত করতে পারবেন৷
তবে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মানবাধিকার সংস্থার একজন কমিশনার আমিরউদ্দীন আল রাহাব মনে করেন, ‘‘এর ফলে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে৷ যখন প্রতিবেশীরা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে, তখন জটিল সমস্যা দেখা দেবে৷’’
এই ফ্রি অ্যাপটি গুগল ইনকর্পোরেশনের গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে৷
চলতি বছর লম্বক দ্বীপে কয়েকটি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের কিছু ব্যক্তি৷ ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় অনেক মানুষ৷
এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
গতবছরের জুলাই মাসের ছবিঘরটি দেখুন...
হিজাবী নারীদের মেটাল ব্যান্ড
বিশ্বের কিছু মুসলিম দেশে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক, আবার অনেক দেশে হিজাব নিষিদ্ধ৷ এবার সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার এক মেটাল ব্যান্ড দল৷ তিন নারী সদস্যের এই দলের সবাই হিজাব পরাসহ সব ইসলামি অনুশাসন মেনে চলেন৷
ছবি: Reuters/Str
দলের নাম চিৎকার
ব্যান্ডের নাম ‘ভয়েস অফ বাচেপ্রট’৷ ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভার গারুত শহরে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই ব্যান্ড৷ শহরের আদিবাসীদের ভাষা সানডানিজ৷ এ ভাষায় ভয়েস অফ বাচেপ্রট অর্থ চিৎকার৷ দেশটির ১৫ ভাগ মানুষ কথা বলেন এই ভাষায়৷
ছবি: Reuters/Str
দলের সদস্য কারা?
তিন নারী সদস্যের এই ব্যান্ডের দলনেতা ফির্দা কুর্নিয়া৷ গিটার যেমন ভালো বাজাতে পারেন, গানের গলাও তেমনি অসাধারণ৷ বাকি দুই সদস্য ইউয়িস সিতি আইসাহ এবং ভিডি রহমাওয়াতি৷ আইসাহ বাজান ড্রামস, ভিডি রহমাওয়াতি বেস৷ ছেলেদের কোনো দলের চেয়ে তাঁরা কোনো অংশে কম না৷
ছবি: Reuters/Str
কেন মেটাল ব্যান্ড?
এখন ব্যান্ডের ম্যানেজার, একসময় স্কুলের মিউজিক শিক্ষক এরজা সাতিয়া৷ তার মিউজিক কালেকশন দেখেই অনুপ্রাণিত হন কুর্নিয়ারা৷ প্রথমবার মেটাল গান শুনেই এর প্রেমে পড়েন কুর্নিয়া৷ তাদের মনে মধ্যে জেগে ওঠে বিদ্রোহের মনোভাব৷
ছবি: Reuters/Str
উঠতি বয়সিদের রোল মডেল
স্কুলে পড়ার সময়ই তিন সদস্য মিলে গড়ে তুলেন এই ব্যান্ড৷ ফলে টিনএজারদের মধ্যে এরই মধ্যে ব্যান্ডটি কুড়িয়েছে ব্যাপক প্রশংসা৷ জাভা তো বটেই, রাজধানী জাকার্তাতেও ছড়িয়ে পড়েছে ভয়েস অফ বাচেপ্রটের সুনাম৷ দেশটির জাতীয় টেলিভিশনেও পারফর্ম করেছে এই মেটাল ব্যান্ড৷
ছবি: Reuters/Str
বিতর্ক, হুমকি
মুসলিমপ্রধান দেশের অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল পশ্চিম জাভায় লড়াইটাও কম করতে হচ্ছে না ভয়েস অফ বাচেপ্রটকে৷ ব্যান্ডের ম্যানেজার এরজা সাতিয়া ফোন কলে বেশ কয়েকবার হত্যার হুমকিও পেয়েছেন৷ ধর্মীয় নেতারা বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে ব্যান্ডের কনসার্ট বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছেন৷ একবার এক কনসার্টে শব্দ বন্ধ করে বিদ্যুতের তার কেটে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে৷
ছবি: Reuters/Str
ভবিষ্যত পরিকল্পনা
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়েস অফ বাচেপ্রটের ভক্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে অনেক আগেই৷ বিখ্যাত সব মেটাল ব্যান্ডের গান ছাড়াও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয় নিয়ে নিজেদের লেখা গানও আছে ব্যান্ডের৷ তাঁদের স্বপ্ন, স্কুল ছাড়ার আগেই নিজেদের গান নিয়ে একটি অ্যালবাম বের করা৷ দেশের বাইরে, যুক্তরাজ্য অথবা যুক্তরাষ্ট্রে পারফর্ম করা৷ অথবা, হয়ত কোনো এক আরব দেশে?