ইরাকে পর পর দুটি আত্মঘাতী হামলা
২ অক্টোবর ২০০৮ইরাকের সুন্নি মুসলিমরা বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করলেও, দেশের শিয়া মুসলমানরা তা পালন করেছেন বৃহস্পতিবার৷ আর এদিনই রাজধানী বাগদাদের শিয়া অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত দুটি মসজিদে ঘটে ঐ বোমা বিস্ফোরণ৷ নিরাপত্তা রক্ষীরা জানায়, যে নিউ বাগদাদের জাদিদা মসজিদের বাইরে প্রথম বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে৷ জানা গেছে, যে একটি বিস্ফোরক ভর্তি বেল্ট বেধে নিয়ে পায়ে হেঁটেই মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে আত্মঘাতী হামলাকারী৷ এতে কমপক্ষে ৫ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হন৷
পরের হামলাটি ঘটে পার্শ্ববর্তী জেলার জাফরানিয়া এলাকায়৷ সেখানে একটি গাড়িবোমা নিয়ে চালানো হয় এই দ্বিতীয় হামলা৷ যাতে কমপক্ষে ৮ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হন৷ পুলিশ কর্মকর্তা কাসেম আতাহ অবশ্য জানিয়েছেন, যে অবিলম্বেই সেখানে উদ্ধার তত্পরতা শুরু হয়েছে এবং আহতদের চিকিত্সার ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷ তবে আহতদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে৷
এদিকে, রমজান মাস শেষে মুসলমানদের এই পবিত্র দিনে, বাগদাদ থেকে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দিয়ালা প্রদেশের বাকুবা শহরে, এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন ৬ জন ইরাকী৷ পুলিশ জানায়, বন্দুকধারীটি একটি মিনিবাসকে নিশানা করে গুলি চালিয়েছিল৷ প্রসঙ্গত, ইরাকের সবচেয়ে বিপদজ্জনক প্রদেশ বলে প্রসিদ্ধ ঐ দিয়ালা প্রদেশে নিরাপত্তা রক্ষিদের সতর্ক প্রহরা সত্ত্বেও, সেখানে আখছারই ঘটে চলেছে এ-ধরনের হামলার ঘটনা৷
ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনা ছাউনি থেকে বলা হয়েছে, যে গতকাল, অর্থাত্ বুধবারও রাজধানীর উত্তরে সুন্নি-অধ্যুষিত বালাদ অঞ্চলে অপর একটি গাড়িবোমা হামলা ঘটে৷ যাতে প্রায় ১৫ জন আহত হন৷ তারা আরো জানায়, যে বালাদে অবস্থিত সৈয়দ মোহাম্মদ মসজিদ প্রাঙ্গনের অদূরে, একটি গাড়ি পার্ক করার জায়গায় হামলাটি হয়৷
গত মার্চ-এপ্রিল মাস থেকেই জঙ্গীহামলার ঘটনা বেড়ে গেছে ইরাকে৷ তারমধ্যে শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ৪৪০ জন ইরাকী৷ পুলিশ সূত্রের খবর - এদের মধ্যে ৩৫৯ জন বেসামরিক ব্যক্তি, ২৬ জন ইরাকী সেনা এবং ৫৫ পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন৷ ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনা কর্মকর্তাদের মতে গত কয়েক বছরে ইরাকে জঙ্গী হামলার পরিমাণ অপেক্ষাকৃতভাবে হ্রাস পেলেও, গত কয়েক সপ্তাহে তা বৃদ্ধি পেয়েছে৷
অবশ্য, রাজধানী বাগদাদে নিযুক্ত মার্কিন সেনা-কম্যান্ডার মেজর জেনারেল জেফরী হামন্ড বলেছেন, যে গত তিন বছরে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ২১ দিনই ছিল ইরাকে সবচেয়ে শান্ত একটি সময়৷ তিনি বলেন, যে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর এ-সময়ে হামলার ঘটনা তুলনামূলকভাবে অনেক কম৷ ২০০৭ এবং ২০০৬ সালের ৬০০ এবং ৮০০-টি হামলার জায়গায়, এবছরের হামলার সংখ্যা মাত্র ৬০-টি৷ দৈনিক হিসেবে যা অন্য দুই বছরের অনুপাতে প্রায় ৪.২ শতাংশ কম৷