মার্কিন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট আক্রমণ ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের। দুই সেনা আহত।
বিজ্ঞাপন
ইরাক এবং সিরিয়ায় মার্কিন সেনাঘাঁটিতে একের পর এক রকেট হামলা। স্বঘোষিত আইএস জঙ্গিদের একটি গোষ্ঠী এ কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে মার্কিন সেনাও।
ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলে আনবার অঞ্চলে মার্কিন সেনার বিশাল বেস রয়েছে। সেখানেই পর পর ১৪টি রকেট ছোড়ে জঙ্গিরা। অ্যামেরিকার দাবি ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরাই এ কাজ করেছে। ঘটনায় দুইজন মার্কিন সেনা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো
ইরাক থেকে তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি৷ আছে হাজারো সৈন্য৷ এই ঘাঁটিগুলো দিয়ে ইরানকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: imago/StockTrek Images
ইরাক
ইরাকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২০০ সৈন্য রয়েছে৷ তবে তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে পেন্টাগন৷ এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এরিমধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারও করা হয়েছে৷ বর্তমানে গ্রিন জোন, বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা, আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে৷ গত নভেম্বরে আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স৷
ছবি: imago/StockTrek Images
কুয়েত
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র কুয়েত৷ দুই দেশের মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহায়তা চুক্তি৷ দেশটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটি৷ যেখানে প্রায় ১৩ হাজার সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/S. Nelson
সিরিয়া
সিরিয়ার কোথায় যুক্তরাষ্ট্রের কত সংখ্যক সৈন্য রয়েছে সে বিষয়টি প্রকাশিত নয়৷ অক্টোবরে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ তার আগ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ২০০০ সৈন্য ছিল, বর্তমানে যা ৮০০ জনে নেমে এসেছে৷ যেসব ঘাঁটি চালু আছে তার একটি সিরিয়ান-জর্ডান সীমান্তে৷ এর কাছেই রয়েছে ইরানীয় আর তাদের সমর্থিত বাহিনী৷
ছবি: -picture alliance/AP Photo/Z. Garbarino
জডার্ন
ইরাক, সিরিয়া, ইসরায়েল, আর সৌদি আরবের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে জডার্নের৷ কৌশলগত দিক থেকে তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান এটি৷ দেশটির মুভাফফাক ছালটি বিমান ঘাঁটি থেকে সিরিয়ায় আইএস বিরোধী হামলা চালানো হয়েছে৷ অবশ্য কিং ফয়সাল বিমান ঘাঁটিতে ২০১৬ সালে তিন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল জডার্নের বিমান বাহিনীর গুলিতে৷
ছবি: AP
সৌদি আরব
সৌদি আরবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের তিন হাজার সেনাসদস্য রয়েছে৷ অক্টোবরে সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলার পর ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের সংঘাতের শঙ্কায় সেখানে আরো সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
বাহরাইন
বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌ ঘাঁটি রয়েছে৷ দ্বীপ রাষ্ট্রটি বরাবরই সৌদি আরবের মিত্র৷ ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমর্থকও তারা৷ বর্তমানে সেখানে সাত হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: AP
ওমান
ওমানের অবস্থান হরমুজ প্রণালীর কাছে আরব উপকূলে, যা জ্বালানি পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ৷ ২০১৯ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রেকে বিমান ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয় ওমান৷ বর্তমানে সেখানে ৬০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/E. Noroozi
সংযুক্ত আরব আমিরাত
হরমুজ প্রণালীর পাশে থাকা আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সাথে ভাল সম্পর্ক বিদ্যমান৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে পাঁচ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে পেন্টাগন৷
ছবি: picture-alliance/AP/K. Jebreili
কাতার
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিটি কাতারের আল উদিদে৷ এর আধুনিকায়নে ২০১৮ সালে ১৮০ কোটি ডলারে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে কাতার৷ বর্তমানে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ হাজার সৈন্য নিযুক্ত রয়েছে৷
ছবি: Reuters/N. Zeitoon
তুরস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য রয়েছে তুরস্কেও৷ দেশটির ইনজিরলিক বিমান ঘাঁটিসহ বেশ কিছু জায়গায় মার্কিন সেনা অবস্থান করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
10 ছবি1 | 10
ইরাকের সেনা জানিয়েছে, একটি ট্রাকে করে রকেট লঞ্চারগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল। ময়দার বস্তার ভিতর সেগুলি রাখা ছিল। শিয়া জঙ্গি গোষ্ঠী আল-মুহান্দি এ কাজ করেছে বলে মনে করছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। এর আগেও তারা ইরাকে মার্কিন সেনার উপর আক্রমণ চালিয়েছে। বস্তুত, এক বছর আগে মুহান্দি নামের এক জঙ্গিকে হত্যা করেছিল অ্যামেরিকা। তার নামেই নতুন এই গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের বক্তব্য। এর আগে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল এই গোষ্ঠীটি। হামলার দায়ও স্বীকার করেছিল।
বাগদাদেও হামলা
বাগদাদেও দুইটি রকেট ছুড়েছে জঙ্গিরা। মার্কিন অ্যান্টি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে সেই রকেট আটকানো গেছে। একটি বিস্ফোরক সহ ড্রোনও বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
গত মাসেই সিরিয়া এবং ইরাকে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে অ্যামেরিকা বিমান হামলা চালিয়েছিল। স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওই হামলা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। তারই প্রতিশোধ হিসেবে এদিন মার্কিন ঘাঁটিতে জঙ্গিরা আক্রমণ চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।