ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন নাগরিকদের ইরাকে যেতেও নিষেধ।
বিজ্ঞাপন
রোববার অ্যামেরিকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরাক থেকে সমস্ত কূটনীতিকদের দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কেবলমাত্র আপতকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা ইরাকে থাকবেন বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো একটি নির্দেশিকা জারি করেছে দেশের নাগরিকদের জন্য। তাতে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কোনো নাগরিক যেন ইরাক-সহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে যাওয়ার চেষ্টা না করেন।
ইরাকে ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রতিনিধিদের উপর আক্রমণ হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সে কারণেই সেখান থেকে কূটনীতিক এবং কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অ্যামেরিকা জানিয়েছে, গোটা মধ্যপ্রাচ্য ঘিরেই অ্যামেরিকার নাগরিকদের উপর হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইরাকে একাধিক গোষ্ঠী অ্যামেরিকার নাগরিকদের উপর আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছে বলে দাবি।
হামাসের হামলা ঠেকাতে হিমসিম খাচ্ছে ইসরায়েল
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের হামলায় রীতিমতো চমকে গেছে ইসরায়েল৷ ক্ষয়ক্ষতির ধাক্কা ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে আগের ধারণাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে৷
ছবি: Jack Guez/AFP/Getty Images
সংগীত উৎসবে হামলা
গাজার কাছেই সুপারনোভা মিউজিক ফেস্টিভালে হামলা করে হামাস৷ শনিবার হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের সীমান্ত ভেদ করে ঢুকে পড়ে৷ তাদের জন্য এই উৎসবটি ছিল সহজ টার্গেট৷ কমপক্ষে ২৬০ জন মারা গেছেন সেখানে৷ অনেককে বন্দি করা হয়েছে৷ পরে ইসরায়েলি সেনারা জায়গাটি সুরক্ষিত করে৷
ছবি: Jack Guez/AFP/Getty Images
হামাসকে হটানো
ইসরায়েলি সেনারা নিয়মিত ফিলিস্তিনি এলাকায় অভিযান চালায়৷ এসব অভিযানে প্রতিপক্ষের যোদ্ধারা এবং সাধারণ মানুষ মারা যান৷ খুব কমই তাদের একই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে৷ কর্তৃপক্ষকে তাই নিজেদের শহরগুলোকে সুরক্ষিত করার ব্যাপারে তেমন প্রস্তুত মনে হয়নি৷ ইসরায়েলি সেনা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Images
ইসরায়েলি কবর
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধে সাধারণত ফিলিস্তিনে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হয়৷ গেল সপ্তাহান্তে হামাসের হামলা সেই সংখ্যাকে বদলে দেয়৷ মৃতদের মধ্যে ইসরায়েলি সাধারণ মানুষই বেশি ছিলেন৷ ২০০০ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময়ও একই পরিস্থিতি ছিল৷ ইহুদিদের যেহেতু খুব দ্রুত কবর দেবার নিয়ম, তাই ঘটনার পরপরই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়৷
ছবি: Maya Alleruzzo/AP/picture alliance
রক্তদান
ইসরায়েলি ইহুদিদের একটা অংশ ধর্মীয় কর্মে যুক্ত৷ তাদের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া বাধ্যতামূলক নয়৷ তাদের অনেকেই হাসপাতালগুলোতে রক্ত দিতে চলে এসেছেন৷ হাসপাতালগুলোতে কয়েক হাজার আহত ইসরায়েলি ভর্তি হয়েছেন৷
ছবি: Ronen Zvulun/REUTERS
সুদূরপ্রসারী প্রভাব
হামাস ও ইসরায়েলের এই যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী প্রভাব যে শুধু ভূরাজনৈতিকভাবে পড়ে তা নয়, ইসরায়েলে অনেক দূর দেশ থেকে মানুষ আসেন কাজ করতে৷ এদের মধ্যে রয়েছেন থাইল্যান্ডের অনেক মানুষ৷ তাদের অনেককে হামাস যোদ্ধারা মেরে ফেলেছে, বা তুলে নিয়ে গেছে৷ কারো কারো কোন খোঁজই নেই৷
ছবি: Thomas Suen/REUTERS
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর অগ্রাধিকার
ইসরায়েলিরা একটা ট্রমার মধ্য দিয়ে গেলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কেমন করে কোন সতর্কবার্তা ছাড়াই হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ করে৷ তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি বাহিনী দেশের মানুষকে রক্ষা করার চেয়ে ফিলিস্তিনি এলাকা ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক বিতর্কিতভাবে দখল ও সেখানে সেটেলার ইসরায়েলিদের সেবায় লেগে আছে৷
ছবি: HAZEM BADER/AFP
যুদ্ধের প্রস্তুতি
ইসরায়েলের সেনাদের জন্য এখন শোকপালনের সময় নেই৷ তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন৷ ২০০৫-এ যেই গাজা উপত্যকা ছেড়ে এসেছেন, সেখানে আবার ঢোকার প্রস্তুতি নিয়েছেন৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রী গাজার মানুষদের এলাকা ছেড়ে যাবার আহ্বান করেছেন, যেটি আসলে তাদের জন্য অসম্ভব, কারণ সব সীমান্ত ইসরায়েল বন্ধ করে রেখেছে৷
ছবি: Jack Guez/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
ইরান নিয়েও সতর্কতা
অ্যামেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সম্প্রতি জানিয়েছেন, ইসরায়েল-গাজা সংঘাতকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে ইরান।
লেবাননে হোজবোল্লাহ গোষ্ঠীকে ইরান সমর্থন করে বলে অ্যামেরিকার দাবি। সেই হেজবোল্লাহ হামাসের সমর্থনে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে।ইসরায়েলের সঙ্গে তারাও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। ইরানের মদতেই এই ঘটনা ঘটছে বলে অ্যামেরিকার দাবি।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদেরও ইরান মদত দেয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি তারাও অ্যামেরিকার যুদ্ধ জাহাজে একাধিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও প্রতিটি মিসাইলই অ্যামেরিকা ধ্বংস করেছে।
রোববার ব্লিংকেন বলেছেন, ''ইরান সমর্থিত বিভিন্ন গোষ্ঠী অ্যামেরিকার প্রতিনিধিদের উপর আক্রমণের চেষ্টা চালাতে শুরু করেছে। তাদের চেষ্টা যাতে বিফল হয়, তার সমস্ত ব্যবস্থা আমরা করছি।'' বস্তুত, ব্লিংকেন 'ইরানের প্রক্সি' শব্দটি ব্যবহার করেছেন তার বক্তব্যে। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করার সমস্ত দায়িত্ব সরকার পালন করবে। এবং সে কারণেই ওই গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পরেই ওই অঞ্চলে বিরাট সেনা মোতায়েন করেছে অ্যামেরিকা। দুইটি বিমানবহনকারী যুদ্ধ জাহাজ ওই অঞ্চলের সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, ওই এলাকায় প্রায় দুই হাজার মেরিন ফোর্সও মজুত করা হয়েছে। ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে অ্যামেরিকা সরাসরি যুক্ত হয়নি। কিন্তু ওই অঞ্চলে সেনা পাঠিয়ে অ্যামেরিকা সমস্তরকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।