২০১১ সালের ডিসেম্বরে ইরাক ছেড়ে যায় মার্কিন সেনারা৷ এরপর সিরিয়ায় শুরু হয় সরকার বিরোধী আন্দোলন৷ আপাতদৃষ্টিতে ঘটনা দুটো হলেও মিল একটা পাওয়া যাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
সেটা এরকম – ইরাক থেকে মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর দেশটির শিয়া সরকারের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন শুরু করে সুন্নি সংশ্লিষ্ট আল-কায়েদা ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো, বিশেষ করে ‘ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড দ্য লিভ্যান্ট' আইএসআইএল৷ এরই মধ্যে ইরাকের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াতে শিয়া সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার হলে, আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো সেখানেও নাক গলাতে শুরু করে৷ এর মাধ্যমে তারা ইরাক বা সিরিয়ার যে-কোনো একটি দেশে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে৷
ইতিমধ্যে সিরিয়া-ইরাক সীমান্তের ফালুজা শহর ও রামাদির একাংশের দখল নিয়ে নিয়েছে আইএসআইএল জঙ্গি গোষ্ঠী৷ এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দু-দুবার কথা বলেছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকির সঙ্গে৷ তিনি আলোচনার পাশাপাশি সামরিক উপায় প্রয়োগ করে ফালুজা ও রামাদি থেকে জঙ্গি উৎখাত করতে ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ একই বিষয়ে ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি-ও৷
ইরাক যুদ্ধের দশ বছর পর
দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক দখল করেছিল৷ এর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে?
ছবি: DW/K. Zurutuza
সমস্যা আছেই
যুদ্ধ শেষে পুনর্গঠন কাজে বিভিন্ন দেশ থেকে ইরাকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাঠানো হলেও সাধারণ মানুষের জীবনের উন্নতি হয় নি৷ এখনো পানি, বিদ্যুত সহ মৌলিক চাহিদার তীব্র সংকট রয়েছে সেখানে৷ রয়েছে দারিদ্র্য ও বেকারত্বের উচ্চহার৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
ইরাকি শরণার্থী
যুদ্ধের কারণে ইরাকের যেসব জনগণ পালিয়ে সিরিয়া চলে গিয়েছিল, তারা এখন ফিরতে শুরু করেছে৷ তবে জাতিসংঘের হিসেবে, এখনো প্রায় ১২ লক্ষ ইরাকি গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
অসংখ্য চেকপয়েন্ট
প্রতি পাঁচ ইরাকির একজনের বাস রাজধানী বাগদাদে৷ প্রতিদিন তাঁদের অসংখ্য চেকপয়েন্ট পার হতে হয়৷ জনগণের নিরাপত্তার জন্যই এগুলো বসানো হয়েছে৷ তবে এখনো কমেনি সহিংসতা৷ মঙ্গলবারও গাড়ি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৫৪ জন নিহত হয়েছে৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
বাড়ছে নিহতের সংখ্যা
২০১২ সালে ৪,৫৬৮ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছে৷ তার আগের বছর সংখ্যাটা ছিল ৪,১৪৪৷ ‘ইরাক বডি কাউন্ট’ নামের একটি সংস্থা নিয়মিত মৃত্যুর হিসেব রেখে যাচ্ছে৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
নারী শিক্ষার দুরবস্থা
সত্তরের দশকে ইরাকের মেয়েদের সবাই শিক্ষিত ছিল৷ এখন সেই হার ৪০’এ নেমে এসেছে৷ এছাড়া বেড়েছে শিশুদের বিয়ে দেয়ার ঘটনা৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
তেজস্ক্রিয়তার শিকার
হিরোশিমা, নাগাসাকি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়৷ তার চেয়েও বেশি সংখ্যক ইরাকি তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্যান্সার, লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে৷ এছাড়া বাড়ছে শিশু মৃত্যুর হার৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
ইরাকের আরব বসন্ত?
হাজার হাজার সুন্নি বিক্ষোভকারী গত ডিসেম্বর থেকে সুন্নি অধ্যুষিত ইরাকে নিয়মিত আন্দোলন করে আসছে৷ যার শুরু ২০১১ সালে আরব বিশ্বে ঘটে যাওয়া আরব বসন্তের সময়৷ উল্লেখ্য, ইরাকে বর্তমানে ক্ষমতায় শিয়াদেরই প্রাধান্য৷
ছবি: DW/K. Zurutuza
7 ছবি1 | 7
অ্যামেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ বৈরুটের পলিটিকাল স্টাডিস বিভাগের অধ্যাপক আহমাদ মৌসালি বলেন, ‘‘২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যদের ইরাক ছেড়ে যাওয়ার পর শূন্যতা তৈরি হওয়া এবং একই সময়ে সিরিয়াতে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ায় আল-কায়েদা ঐ দুটি দেশে যুদ্ধ শুরুর সম্ভাব্যতা খুঁজে পায় এবং সেখানে একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা দেখতে পায়৷''