ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ''আমাদের ধৈর্যচ্যুতি হচ্ছে।''
ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বললেন ট্রাম্প।ছবি: Kevin Lamarque/REUTERS
বিজ্ঞাপন
ষষ্ঠ দিনে পা রাখল ইসরায়েল- ইরান সংঘাত। বুধবারও দুই দেশ একে অপরের উপর হামলা করেছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে বুধবার সকালেই তাদের উপর মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। তেল-আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েল তেহরানের কাছে তেল শোধনাগারে আক্রমণ করেছে।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে 'নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ' করতে বলেছেন।
ট্রাম্প যা বলেছেন
মঙ্গলবার ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যমে হুঁশিয়ারি দেন, 'ধৈর্য কমছে যুক্তরাষ্ট্রের।' ট্রুথ সোশালে তিনি লেখেন, "ইরানের সর্বোচ্চ নেতা (আয়াতোল্লা খামেনেই) কোথায় গা ঢাকা দিয়েছেন তা আমরা নির্দিষ্ট ভাবে জানি। তিনি আমাদের সহজ টার্গেট। তবে তিনি সেখানে নিরাপদ। তাকে আমরা অন্ততপক্ষে এখনই মারছি না। কিন্তু আমরা চাই না, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বেসামরিক মানুষ মারা যান বা অ্যামেরিকার সেনার ক্ষতি হোক। আমাদের ধৈর্য কমছে।" এই ঠিক তিন মিনিটের মধ্যেই তিনি লেখেন, 'নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ'।
ক্যানাডায় জি-৭ থেকে দেশে ফিরে ট্রাম্প বলেছেন, ‘'সাময়িক সংঘর্ষবিরতি নয়, এর শেষ দেখতে চাই!''
ইসরায়েলের হামলায় তেহরান ও তেহরানবাসী যে অবস্থায়
ইসরায়েলের হামলার কারণে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে- এমন আশঙ্কা বাড়ছে৷ছবিঘরে থাকছে ইরানের রাজধানী তেহরান ও তেহরানবাসীদের কথা...
ছবি: Middle East Images/AFP via Getty Images
পালটাপালটি হামলা
গত শুক্রবার ইরানে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ইরানও তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বেশ কিছু শহরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ পালাটাপালটি এই হামলায় দুই দেশেই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে৷
ছবি: Ircs/ZUMA Press Wire/IMAGO
বাসিন্দাদের তেহারন ছাড়তে বললেন ডনাল্ড ট্রাম্প
ক্যানাডায় অনুষ্ঠানরত জি ৭ সম্মেলনের সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ইরান-ইসারায়েল সংঘাতের পঞ্চম দিনে তিনি বাসিন্দাদের দ্রুত তেহরান ছাড়ার কথ বলেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, তেহরানে ইসরায়েলের হামলা তীব্রতর হতে পারে৷
ছবি: Kevin Lamarque/REUTERS
তেহরান ছাড়ার তোড়জোড়
সংঘাত শুরুর পর থেকেই তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন বাসিন্দারা৷ এ কারণে প্রায় এক কোটি জনসংখ্যার শহরটির রাস্তাঘাটে দেখে দেয় তীব্র যানজট৷ ছবিটি ১৬ জুন তোলা৷
ছবি: Atta Kenare/AFP
‘আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই’
দুই দেশের সংঘাতের ফলে মৃত্যু ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ৷ রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের হামলা তীব্রতর হওয়ায় বাসিন্দারা শহর ত্যাগে মরিয়া৷ তবে অনেকেই নিরাপদ স্থানে যেতে পারছেন না৷ তেহরানের বাসিন্দা শাহরিয়ার টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই৷ কোথায় যাবো? বাড়ি ছেড়ে আমরা কতক্ষণ থাকবো?’’
ছবি: IMAGO/Kyodo News
মসজিদ, স্কুল, সাবওয়েতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ
আপৎকালীন সময়ের জন্য ইরান সরকার ‘আন্ডারগ্রাউন্ড মিসাইল সাইট’ তৈরি করলেও বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দেশটিতে বোমা হামলার সময়ের জন্য কোনো বিশেষায়িত আশ্রয়কেন্দ্র নেই৷ এর ফলে জরুরি প্রয়োজনে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই তেহরানবাসীর৷ জরুরি পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদেরকে মসজিদ, সাবওয়ে এবং স্কুলে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইরান সরকার৷
ছবি: ATTA KENARE/AFP
‘নেই সাইরেনের শব্দ’
হামলার আগে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সংকেত হিসেবে সাইরেন বাজানোরও কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানালেন তেহরানের আরেক বাসিন্দা গোলাম রেজা মোহাম্মদি৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘কোনো সাইরেন বাজেনি, আশ্রয়স্থল নেই৷ এখন পরিস্থিত আরো খারাপ৷এটিএম থেকে টাকাও তুলতে পারছি না৷’’
ছবি: Middle East Images/Imago
খবর নেওয়ার চেষ্টা
হামলা, পালটা হামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে উদগ্রীব অনেকেই৷ তেহরানের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেনের দুই যাত্রী স্মার্টফোনে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করছেন৷ ছবিটি ১৪ জুন তোলা৷
ছবি: Morteza Nikoubazl/NurPhoto/picture alliance
সুনসান নীরবতা
সংঘাত শুরু হওয়ার পর নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাসিন্দারা৷ রাস্তাঘাট অনেকটাই জনশূন্য৷ বন্ধ দোকানপাটও৷ ১৬ জুন তোলা এই ছবিতে রাজধানী তেহরানের গ্র্যান্ড বাজারের উপর দিয়ে এক ব্যক্তিকে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Atta Kenare/AFP
জ্বালানির জন্য লম্বা লাইন
ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মজুত করতে ছুটাছুটি শুরু করেন সাধারণ মানুষ৷ যানবাহনের তেলের জন্য রাজধানীর পেট্রোল পাম্পগুলোতে ছিল এমন লম্বা লাইন৷
ছবি: Atta Kenare/AFP
সরকারকে সমর্থন
ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষিতে সরকারের সমর্থনে রাস্তায় নেমে আসেন অনেকে৷ সরকারের সমর্থনে তেহরানের রেভোল্যুশন স্কয়ারে এভাবেই ভিড় করেন হাজারো মানুষ৷ ছবিটি ১৪ জুন তোলা৷
হোয়াইট হাউস থেকে আরো জানানো হয়, মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাম্প ন্যাশানাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সঙ্গে ৯০ মিনিটের বৈঠক করেন। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা অবশ্য এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অন্তত তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা তাদের বলেছেন, অ্যামেরিকা মধ্যেপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরান-ইসরায়েলের সংঘাত প্রশ্নে এখনো অবধি কেবলমাত্র রক্ষণাত্মক ভূমিকা নিয়েছে। ইসরায়েলের দিকে আসা মিসাইল নিষ্ক্রিয় করার কাজ করেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল তেহরান থেকে মানুষদের অন্যত্র সরে যেতে বলেছে। ইরানের সামরিক এলাকায় আক্রমণও করার জন্যই খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইরানের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, তেহরান এবং তার পশ্চিমে কারজ শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।