স্বামী হত্যার অভিযোগে ইরানে ২২ বছরের এক মেয়ের মৃত্যুদণ্ড যে-কোনো সময় কার্যকর করা হতে পারে৷ তবে অ্যামনেস্টির অভিযোগ, মামলাটি নিরপেক্ষ ছিল না৷ তাই মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের আবেদন জানিয়েছে সংস্থাটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hamed
বিজ্ঞাপন
জয়নাব সেকানভান্দ লোকরান নামের তরুণীটির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর স্বামীকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি বলছে, সেই সময় লোকরানের বয়স ১৮ বছরের কম ছিল৷ কিন্তু মামলার রায় ঘোষণার সময় সেটি বিবেচনায় নেয়া হয়নি৷
এছাড়া অ্যামনেস্টির দাবি, গ্রেপ্তার হওয়ার পর লোকরান প্রথমে স্বামী হত্যার অভিযোগ স্বীকার করলেও পরে যখন মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ে তাঁকে (লোকরানকে) একজন সরকারি আইনজীবী দেয়া হয় তখন তিনি তা অস্বীকার করেন৷ সেই সময় তিনি দাবি করেন, তাঁর স্বামীর ভাই এই হত্যা করেছে, যিনি (স্বামীর ভাই) লোকরানকে কয়েকবার ধর্ষণ করেছেন৷ লোকরান বলেন, তাঁর স্বামীর ভাই তাঁকে প্রস্তাব দেন যে, তিনি (লোকরান) যদি স্বামী হত্যার অভিযোগ নিজের কাঁধে তুলে নেন তাহলে তাঁকে (লোকরান) ক্ষমা করে দেয়া হবে৷ উল্লেখ্য, ইসলামি আইন অনুযায়ী, নিহতের আত্মীয়স্বজন হত্যাকারীকে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে ক্ষমা করে দিতে পারেন৷
অ্যামনেস্টির অভিযোগ, মামলার রায় দেয়ার সময় আদালত লোকরানের প্রথম স্বীকারোক্তিটি (যেটি তিনি কোনো আইনজীবীর সামনে দেননি) আমলে নিয়েছে৷ পরবর্তীতে আইনজীবীর সামনে যে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেটি আদালত বিবেচনায় নেননি৷
চলতি বছরের শুরুতে লোকরানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু লোকরান গর্ভবতী থাকায় (২০১৫ সালে তিনি কারাগারের এক সঙ্গীকে বিয়ে করেছিলেন) সেটি তখন স্থগিত করে বাচ্চা প্রসবের পর কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ গত মাসের ৩০ তারিখে লোকরান সন্তান প্রসব করেন৷ কিন্তু তার দুদিন আগেই সেই সন্তান মারা যায় বলে জানান চিকিৎসক৷ কারাগারের এক বন্ধুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় লোকরান যে শোক পেয়েছিলেন তাতেই বাচ্চার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷
এখন সন্তান প্রসব হয়ে যাওয়ায় যে-কোনো সময় লোকরানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে অ্যামনেস্টি৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভয়ংকর কিছু উপায়
গিলোটিনে মাথা কাটা, হাতির পায়ে পিষ্ট করা- প্রাচীনকালে এ ধরনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পদ্ধতি অনেককে আতঙ্কিত করে৷ কিন্তু এরচেয়েও নৃশংস কিছু পদ্ধতি রয়েছে, যার কথা হয়ত আপনাদের জানা নেই৷ সেগুলো দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: fotolia
শরীরকে দ্বিখণ্ডিত করা
বহু বছর আগে ইংল্যান্ডে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো৷ অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে সাজা দেয়ার স্থানে নিয়ে যাওয়া হতো৷ তারপর দুই পা’র মাঝ বরাবর কেটে ফেলা হতো৷
ছবি: picture-alliance/Godong/C. Leblanc
শূলে চড়ানো
রোমান সাম্রাজ্যে এ পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল৷ যীশু খ্রীস্টকেও এভাবেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল৷ কাঠের তক্তার সঙ্গে হাত ও পায়ে পেরেক ঠুকে সেই তক্তা দাঁড় করিয়ে দেয়া হতো৷ এভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত ব্যক্তিটি৷
ছবি: Reuters/J. Costa
কলম্বিয়ার টাই
কলম্বিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে প্রথমে অপরাধীর মাথা কেটে ফেলা হতো৷ তারপর জিভ টেনে বের করে মাথাটা গাছে বেঁধে রাখা হতো৷
ষাঁড়ের পেটে
সিসিলিতে অ্যাক্রাগাসের শাসনামলে এই ভয়াবহ পদ্ধতির প্রচলন শুরু হয়৷ লোহার ষাঁড় বানানো হতো৷ অপরাধীকে ঐ ষাঁড়ের পেটে ঢুকিয়ে এর নীচে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হতো৷ ষাঁড়ের মুখ দিয়ে বের হতো অপরাধীর আর্তনাদ৷ মনে হতো ষাঁড়টিই চিৎকার করছে৷
ছবি: picture alliance/Blickwinkel/W. G. Allgoewer
সেপুকু
জাপানী যোদ্ধা সামুরাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন৷ নিজের হাতেই অপরাধীর অন্ত্র বের করে আনতেন, আর যখন অপরাধী ছটফট করতো, তখন সামুরাইয়ের কোনো সহযোগী তরবারি দিয়ে অপরাধীর শিরচ্ছেদ করে দিতো৷
ছবি: Museum Kunstpalast, Düsseldorf, Graphische Sammlung
লিং চি
চীনে বিংশ শতাব্দিতে এসে এই পদ্ধতি বাতিল করা হয়৷ এ ধরণের মৃত্যুদণ্ডে অপরাধীর প্রতিটি অঙ্গ একে একে ছিন্ন করা হতো৷ আর চেষ্টা করা হতো, যাতে সে দীর্ঘ সময় এ অবস্থায় জীবিত থাকে৷
ছবি: Fotolia/D. Presti
জীবন্ত পুড়িয়ে মারা
১৯৩৭ সালে জাপানের সৈন্যরা বন্দি চীনাদের এই শান্তি দিয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/U. Ifansasti
স্প্যানিশ থাবা
প্রাচীন কালে স্পেনে লোহা দিয়ে বিড়ালের থাবার মতো ধারালো হাতিয়ার বানানো হতো৷ আর অপরাধীর চামড়া ঐ হাতিয়ার দিয়ে খুবলে নেয়া হতো৷ চামড়ায় সংক্রমণের কারণে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু ছিল অবধারিত৷
ছবি: fotolia
ক্যাথরিন হুইল
অপরাধীকে চাকার সঙ্গে বেঁধে দেয়া হতো৷ আর জল্লাদ ঐ চাকা ঘুরাতে থাকত, পাশাপাশি লাঠি দিয়ে প্রহার করতো৷ ফলে হাড্ডি ভেঙে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হতো৷