২৮ জুন ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সেখানে প্রার্থী হতে ৮০ জন আবেদন করেছিলেন৷ এর মধ্যে ছয়জনের আবেদন অনুমোদন করেছে গার্ডিয়ান কাউন্সিল৷
অনুমোদন পাওয়া ছয়জনের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মোহাম্মদ বাঘার কালিবাফ৷ ছবি: Vahid Salemi/dpa/AP/picture alliance
বিজ্ঞাপন
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর কারণে দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে৷
অনুমোদন পাওয়া ছয় প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন কট্টরপন্থি বলে বিবেচিত৷ অন্যজন সংস্কারপন্থি৷
চার নারী প্রেসিডেন্ট হতে আবেদন করেছিলেন৷ তবে কারও আবেদন অনুমোদন করা হয়নি৷ ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিদ্রোহের পর থেকে এমনটা হয়ে আসছে৷
সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে৷ ২০১৭ ও ২০২১ সালেও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি৷ ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন আহমেদিনেজাদ৷
সংসদের সাবেক স্পিকার মধ্যপন্থি নেতা আলি লারিজানি ও রেভ্যুলুশনারি গার্ডসের সাবেক কমান্ডার ভাহিদ হাঘানিয়ানের প্রার্থিতাও অনুমোদন পায়নি৷
রাইসির আমলের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ইরানের ৬৩ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসি৷ ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার মেয়াদে দেশ-বিদেশে কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে৷
ছবি: Iran's Presidency/WANA/Handout via REUTERS
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
২০২১ সালের জুন মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অতি রক্ষণশীল এব্রাহিম রাইসি৷ ভোটের আগে হেভিওয়েট রক্ষণশীল ও উদার প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল৷
ছবি: Vahid Salemi/AP Photo/picture alliance
কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের নির্দেশ
দায়িত্ব নেওয়ার একবছরের মধ্যে ‘হিজাব ও সতীত্ব আইনের’ কঠোর বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয় রাইসির সরকার৷ এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় ২২ বছর বয়সি মাশা আমিনি মারা যান৷ কঠোর পোশাক রীতি না মানার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল৷
ছবি: Fatemeh Bahrami/AA/picture alliance
বিক্ষোভ দমন
মাশা আমিনির মৃত্যুর পর নারীদের নেতৃত্বে ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল৷ রাইসির সরকার সেটি কঠোর হাতে দমন করেছিল৷ এতে কয়েকশ মানুষ, যার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক ডজন সদস্যও ছিলেন, প্রাণ হারান বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে৷
ছবি: SalamPix/ABACA/picture alliance
পরমাণু আলোচনা স্থগিত
২০১৫ সালে ছয়টি দেশ ও ইরানের মধ্যে যে পরমাণু চুক্তি সই হয়েছিল ২০১৮ সালে ডনাল্ড ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন এবং তারপর ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল৷ রাইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পরমাণু আলোচনা বিষয়ে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেন৷ ফলে বাইড্রেন প্রশাসন ও ইরানের সরকারের মধ্যে যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছিল, সেটি স্থগিত হয়ে যায়৷
ছবি: Hamid Foroutan/ISNA/AP/picture alliance
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন
চীনের মধ্যস্থতায় প্রায় সাত বছর পর ২০২৩ সালের মার্চে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়৷ ২০১৬ সালে সৌদি আরবে ইরানের প্রখ্যাত শিয়া নেতা নিমর আর-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছিল৷
ছবি: daniel0Z/Zoonar/picture alliance
ইসরায়েলে হামলা
গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে ১৩ এপ্রিল ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালায়৷ সিরিয়ার দামেস্কে তেহরানের কনস্যুলেটে হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে এই হামলা চালিয়েছিল ইরান৷ তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের মিত্রশক্তিরা ইরানের বেশিরভাগ ড্রোন ও মিসাইল আটকে দিয়েছিল৷
ছবি: Mohammad Hamad/picture alliance/Anadolu
6 ছবি1 | 6
২০০৫ ও ২০১৩ সালেও তিনি প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন৷
সংস্কারপন্থি একমাত্র প্রার্থী হলেন মাসুদ পেজেশকিয়ান৷ তিনি তাবরিজ আসনের সাংসদ৷
বাকি চার প্রার্থী হলেন সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক সাইদ জলিল,ফাইন্ডেশন অফ মার্টায়ার্স অ্যান্ড ভেটেরানস অ্যাফেয়ার্সের অতিরক্ষণশীল চেয়ারম্যান আমির-হোসেইন ঘাজিজাদেহ হাশেমি, সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বিচারমন্ত্রী ইসলামি পণ্ডিত মোস্তফা পুরমোহাম্মদি এবং তেহরানের বর্তমান মেয়র আলিরেজা জাকানি৷
গার্ডিয়ানকাউন্সিলকী
১২ জন ইসলামি পণ্ডিত ও বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত গার্ডিয়ান কাউন্সিলের একটি কাজ নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই করা৷
গার্ডিয়ান কাউন্সিলের ১২ জনের মধ্যে ছয়জনকে নির্বাচন করে সংসদ৷ বাকি ছয়জনকে নিয়োগ দেন সুপ্রিম নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনেই৷ ফলে ইরানে চালু থাকা ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করা প্রার্থীদের মধ্য থেকেই একজনকে বেছে নিতে হয় ভোটারদের৷
রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গার্ডিয়ান কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় অতীতে এই কাউন্সিলকে অগণতান্ত্রিক বলে সমালোচনা করা হয়েছে৷