মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে মেয়েদের হিজাববিরোধী বিক্ষোভ চলমান রয়েছে৷ দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই বিক্ষোভ ইরানের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে৷
বিজ্ঞাপন
মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে বিক্ষোভে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে৷ রোববার নরওয়ে ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস জানায়, বিক্ষোভে সরকারি বাহিনীর হাতে অন্তত ৯২জন নিহত হয়েছেন৷
সরকারের নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে বিক্ষোভকারীদের এভাবে নিহত হওয়ার ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য বলে বিবৃতিতে জানায় সংস্থাটি৷
পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ চলছে৷
‘সঠিকভাবে হিজাব না পরা'কে কেন্দ্র করে ইরানের কুর্দিপ্রধান শহর সাকেজ থেকে মাহসা আমিনিকে আটক করা হয়৷ পুলিশি হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হলে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷
আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবোক৷
আমিনির মৃত্যু: ইরানে দশম দিনের মতো বিক্ষোভ
01:50
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, তার দেশে চলমান বিক্ষোভের পেছনে পশ্চিমের দেশগুলোর হাত রয়েছে৷ দেশটিতে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে, এমন খবর পাওয়া গেছে৷
এদিকে দেশটির দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের জাহেদান শহরে গত এক সপ্তাহ ধরা চলা বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৪১জন নিহত হয়েছে বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাটির৷
সংস্থাটির দাবি, সেখানকার একজন পুলিশ কর্মকর্তা এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷
তবে সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশের এই বিক্ষোভ মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি৷
সিস্তান-বালুচিস্তানে নিহতের সংখ্যা এবং মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ড মিলিয়ে গত ১৫ দিনে সারা দেশে ১৩৩জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা বালুচ অ্যাকটিভিস্ট ক্যাম্পেইন৷
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে তা সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানায় ইরান হিউম্যান রাইটস৷
আরআর/এফএস (এএফপি)
মাহসা হত্যার প্রতিবাদ এশিয়ায় ইউরোপে দক্ষিণ অ্যামেরিকায়
চুল হিজাবে ঠিকভাবে ঢাকা হয়নি বলে তুলে নেয়া হয় তাকে, ফিরে আসে মৃতদেহ- মাহসা আমিনির এমন মৃত্যু মেনে নেয়নি ইরানের অনেক মানুষ৷ এশিয়া হয়ে ইউরোপ, দক্ষিণ অ্যামেরিকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷ দেখুন ছবিঘরে...
তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে নিজের চুল কেটে হাতে নিয়ে মাহসা হত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এক নারী৷
ছবি: Francisco Seco/ASSOCIATED PRESS/picture alliance
ইটালির মিলান শহরে
মিলানের বিক্ষোভ মিছিলে এক বিক্ষোভকারীর চুল কাটার দৃশ্য৷
ছবি: Ervin Shulku/ZUMAPRESS.com/picture alliance
জার্মানিতে বিক্ষোভ মিছিল
যে চুল ঠিকভাবে না ঢাকার কথিত ‘অপরাধে’ ইরানের নীতি পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিল মাহসাকে, এক অর্থে যে চুলের জন্য প্রাণ দিতে হলো ২২ বছর বয়সি এক তরুণীকে, সেই চুল কেটে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকে৷ জার্মানির রাজধানী বার্লিনের বিক্ষোভ মিছিলেও নিজের চুল কেটে তা দেখিয়ে দেখিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন এক নারী৷
ছবি: Christian Mang/REUTERS
পতাকায় প্রতিবাদের চুল
ভারতের রাজধানী দিল্লির ছবি৷ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী অবশ্য মাহসা আমিনি হত্যার প্রতিবাদে নিজের চুল কাটেননি, তবে পতাকায় এঁকে দিয়েছেন কালো চুল৷
ছবি: Anushree Fadnavis/REUTERS
সাইপ্রাসের এক বিক্ষুব্ধ তরুণ
সাইপ্রাসের রাজধানী নিকোশিয়াতেও হয়েছে খুব বড় এক বিক্ষোভ মিছিল৷ সেই মিছিলে এক তরুণ এভাবে নিজের চুল কেটে মাহসা হত্যার প্রতিবাদ ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানান৷
ছবি: Yiannis Kourtoglou/REUTERS
চিলির নারীদের বিক্ষোভ
ওপরে চিলির রাজধানী মাহসা আমিনি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল৷ সেখানে মানুষের স্বাধীন জীবন যাপনের অধিকারের স্বীকৃতিও দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা, তাই তাদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘লিবার্তাদ’৷
ছবি: Ailen Diaz/REUTERS
সিরিয়ায় হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ
সিরিয়ার কুর্দি অধ্যুষিত শহর কামিশলির বিক্ষোভ মিছিলে হিজাব পোড়াচ্ছেন এক নারী৷ মাহসা আমিনিও কুর্দি পরিবারের সন্তান৷
ছবি: Orhan Qereman/REUTERS
সুইডেনে বিক্ষোভ
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের এক বিক্ষোভ মিছিলের ছবি৷ এক তরুণী নিজের চুল কেটে ধিক্কার জানাচ্ছেন ইরানের নীতি পুলিশদের৷
ছবি: Fredrik Persson/REUTERS
গ্রিসে ইরানী তরুণী
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সেও অনেক মানুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন৷ ছবির এই তরুণী গ্রিসে এসেছেন ইরান থেকে৷ তার নাম এলি ফজলুল্লাহ৷