ইরানের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
অস্ট্রেলিয়ায় মাহসা আমিনি হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা এক বিক্ষোভকারীর ওপর ইরান নজরদারি করছে- এমন অভিযোগ তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ক্লেয়ার ও'নীল৷
বিজ্ঞাপন
অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরে কারো যৌক্তিক প্রতিবাদে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তা বরদাশত করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
সম্প্রতি ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে সময় অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করা মাহসা আমিনি হত্যার বিচার দাবিতেবিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো অস্ট্রেলিয়াতেও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়৷ ঠিকভাবে হিজাব না পরার দায়ে আটক করে নিয়ে নির্যাতন করার ফলে মাহসার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে ইরানসহ বিশ্বের অনেক দেশেই উঠেছে মাহসা হত্যার বিচারের দাবি৷ ইরান ও অস্ট্রেলিয়ার ওই নাগরিকও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে তুলেছেন সেই দাবি৷
ক্লেয়ার ও'নীল-এর অভিযোগ, মাহসা আমিনি হত্যার বিচার চাওয়া ওই ব্যক্তির পিছু নিয়েছে ইরানের গোয়েন্দা বিভাগ৷ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ)-তে দেয়া ভাষণে অস্ট্রেলিয়ার হোম অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘বিদেশি কোনো সরকারের সমালোচনা কেউ করতেই পারেন, অস্ট্রেলিয়ায় এটা পুরোপুরি আইনসঙ্গত৷ সম্প্রতি ইরানে যা ঘটেছে তার প্রতিবাদে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে নেমেছে- তা-ও আইনসঙ্গত৷'' তারপর তিনি ইরানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘‘ এ দেশে বিদেশি কোনো সরকারের উদ্যোগে শান্তিপূর্ণ কোনো বিক্ষোভকে বাধাগ্রস্ত করার করার চেষ্টা হলে, সহিংসতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না৷''
ক্লেয়ার ও'নীল দাবি করেন, ইরান শুধু দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী ওই অ্যাক্টিভিস্টের ওপরই নজরদারি করছে না, তার এবং তার মতো অনেক বিক্ষোভকারীর পরিবারের সদস্যদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করছে৷ এ সময় অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাও এসবের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে জানিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের মাটিতে কোনো অস্ট্রেলীয় বা বিদেশির ওপর কোনো বিদেশি সরকার নজর রাখবে, তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে আর আমরা বসে থাকবো, তা হতে পারে না৷''
ইরানে বিক্ষোভের সমর্থনে বিভিন্ন দেশে দেয়ালচিত্র, বিক্ষোভ
ইরানে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভের সমর্থনে বিশ্বের অনেক দেশের গ্রাফিতি আর্টিস্টরা গ্রাফিতি আঁকছেন৷
ছবি: Francois Mori/AP/picture alliance
মেক্সিকোর ইরান দূতাবাসে
মেক্সিকোর ইরান দূতাবাসের দেয়ালে এক নারী স্প্রে-পেইন্ট দিয়ে ইরানবিরোধী বার্তা লিখছেন৷ চুল হিজাবে ঠিকভাবে ঢাকা হয়নি বলে তুলে নেয়া হয়েছিল ২২ বছর বয়সি কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিকে৷ এর তিনদিন পর তার মৃত্যুর কথা জানানো হয়৷ এরপর থেকে ইরানে বিক্ষোভ চলছে৷ বিভিন্ন দেশের গ্রাফিতি আর্টিস্টরা এই বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন৷
ছবি: Gerardo Vieyra/NurPhoto/picture alliance
ফ্রাঙ্কফুর্টে বিক্ষোভ
মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ থেকে ইরানে ইসলামি শাসনের পতনের দাবি উঠছে৷ ইরানে অনেক নারী নীতি পুলিশের নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েছেন৷ ছবিতে ইরানের বিক্ষোভের সমর্থনে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture alliance/dpa
মিলানে সিম্পসনের সংহতি
ইরান ও অন্যান্য দেশের অনেক নারী চুলের বাঁধন কেটে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন৷ ছবিতে অ্যানিমেটেড সিটকম ‘দ্য সিম্পসন্স’ এর এক চরিত্রকে ঠিক তাই করতে দেখা যাচ্ছে৷ ইটালির মিলানে যে দেয়ালে এই ছবিটি আঁকা হয়েছে সেটি ইরানি কনসুলেটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত৷
ছবি: Andrea Fasani/ANSA/EPA-EFE
প্যারিসের অনারারি নাগরিক হবেন মাহসা আমিনি
ছবিতে প্যারিসে মাহসা আমিনির ম্যুরাল দেখা যাচ্ছে৷ প্যারিস কর্তৃপক্ষ আমিনিকে অনারারি নাগরিক করারও পরিকল্পনা করছে৷ প্যারিসের একটি এলাকার নামও তার নামে করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র৷
ছবি: Francois Mori/AP/picture alliance
‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের এই দেয়ালে আমিনির ছবির পাশে কুর্দি ভাষায় ‘জিন, জিয়ান, আজাদি’ লেখা হয়েছে৷ এর অর্থ হচ্ছে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’৷
ছবি: Boris Roessler/dpa/picture alliance
পোল্যান্ডে সংহতি মিছিল
পোল্যান্ডের ক্রাকোফে সংহতি মিছিল হয়েছে৷ ছবিটি সেখানকার৷
ছবি: Beata Zawrzel/NurPhoto/picture alliance
ডোমিনো ইফেক্ট
বিক্ষোভ এখন শুধু নারীদের জন্য কঠোর ড্রেস কোডের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নেই৷ ইরানে ইসলামি শাসনের বৈধতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন৷ ‘মোল্লাদের হটাও’, ‘একনায়কের মৃত্যু হোক’ এমন স্লোগানও দেয়া হচ্ছে৷ ছবিতে তেহরানের দেয়ালে আঁকা একটি ম্যুরাল দেখা যাচ্ছে৷ শেষ প্রান্তে দেশটির ধর্মীয় নেতা খামেনেইকে দেখা যাচ্ছে৷