1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানের গণমাধ্যম

২৪ মে ২০১২

আফগানিস্তানের উপর নিজেদের প্রভাব ও কর্তৃত্ব বাড়াতে দেশটির গণমাধ্যমকে বেছে নিয়েছে ইরান৷ বিশেষ করে, ২০১৪ সাল নাগাদ বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে সেদেশ আরো বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ নেবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন৷

ছবি: Montage DW

আফগানিস্তানের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে অর্থ কিংবা সংবাদ উপকরণ দিয়ে সহায়তা করছে ইরান৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আফগান কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তানে এসব সহায়তার নামান্তরে ইরান সেখানে তাদের শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলতে চায়৷ মূলত ঐ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব মোকাবিলা করতেই তাদের এই প্রচেষ্টা৷ আমাদের গণমাধ্যমকে অর্থসহ নানা ধরণের সহায়তা দিয়ে তারা এই উদ্দেশ্য পূরণ করতে চায়৷''

সম্প্রতি আফগান গোয়েন্দা দপ্তর এনডিএস আফগানিস্তানের গণমাধ্যমের উপর ইরানের প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি ফাঁস করে দেয়৷ তারা জানিয়ে দেয় যে, সাপ্তাহিক সংবাদপত্র এনসাফ এবং টেলিভিশন চ্যানেল তামাদোন ও নুর ইরান থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা পাচ্ছে৷ তবে তামাদোন টিভি এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে ‘অপমানজনক' বলে মন্তব্য করেছে৷ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ রাহমাতি বলেছেন, ‘‘যেহেতু আমরা ইসলামের মৌলিক মূল্যবোধের কথা বলি এবং অর্ধনগ্ন নারীদের নাচ দেখাই না, তাই আমাদের বিরুদ্ধে এমন কথা বলা হচ্ছে৷''

অবশ্য, কাবুলে অবস্থিত অ্যামেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা দাউদ মোরাদিয়ান জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের গণমাধ্যম, সামাজিক প্রকল্প এবং ধর্মীয় বিদ্যালয়সমূহের জন্য ইরান প্রতিবছর প্রায় দশ কোটি ডলার খরচ করে৷ তাঁর মতে, ‘‘অ্যামেরিকাকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিতেই ইরান আফগানিস্তানকে ব্যবহার করছে৷ ফলে আফগানিস্তান একটি সুগঠিত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে৷'' তবে ইরানের বিরুদ্ধে ওঠা এমন অভিযোগের ব্যাপারে তেহরানের পক্ষ থেকে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি৷

চলতি সপ্তাহে শিকাগো'য় ন্যাটো নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে, আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ আফগানিস্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেবে ন্যাটো বাহিনী৷ তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার দেশটিকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলবে এবং গৃহযুদ্ধও শুরু হতে পারে৷ এমতাবস্থায়, দেশটির শাসনক্ষমতায় শূন্যতার সুযোগে ইরানসহ বেশ কিছু দেশ নিজেদের প্রভাব খাটানোর সুযোগ পাবে৷

দীর্ঘ এক দশকের দখলদারিত্ব শেষে ১৯৮৯ সালে যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান ছেড়ে যায় এবং কাবুলে মস্কো-সমর্থিত সরকারের পতন ঘটে তখনও সেখানে প্রতিবেশী দেশগুলো আঞ্চলিক প্রভাব বাড়াতে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করেছিল৷ তবে ২০০১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে তালেবান গোষ্ঠীর অপসারণ ঘটলে তেহরান-কাবুলের মধ্যে সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়ে৷

সম্প্রতি আফগানিস্তানে ইরানের স্বার্থ এবং প্রভাবের বিষয়টি বেশি করে আলোচনায় উঠে আসে, যখন আফগানিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ এই চুক্তি অনুসারে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আফগান জাতীয় সেনা বাহিনীর জন্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছাড়াও দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অ্যামেরিকা৷

এই চুক্তিকে ইরান নিজেদের জন্য হুমকি বলে মনে করছে৷ তাই এই চুক্তির সমালোচনা করে ইরানের মদদপুষ্ট আফগানিস্তানের গণমাধ্যমগুলোতে বেশ কিছু লেখা প্রকাশ করা হয়েছে এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠান করা হয়েছে৷ এছাড়া আফগানিস্তানে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত আবু ফাজেল জোহরাওয়ান্দ হুমকি দিয়েছেন যে, এই চুক্তি বাতিল করা না হলে তাদের দেশে আশ্রিত প্রায় দশ লাখ শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হবে৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই (রয়টার্স)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ