জর্ডানে ইরানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে বলে পেন্টাগনের অভিযোগ। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
বিজ্ঞাপন
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে কীভাবে জবাব দেওয়া হবে তা ঠিক করবেন প্রেসিডেন্ট নিজে। কবে কীভাবে একাজ করা হবে তা সম্পূর্ণ প্রেসিডেন্টের হাতে। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না অ্যামেরিকা। ফলে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে না যুক্তরাষ্ট্র। বরং যে পরিমাণ ক্ষতি ইরানের মদতপুষ্ট গোষ্ঠী করেছে, সেভাবেই তাদের জবাব দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত, রোববারের এই আক্রমণের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, ইরানকে এর জবাব দেওয়া হবে।
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইরান যুদ্ধে যেতে চাইছে, এমনটা তাদের মনে হচ্ছে না। অ্যামেরিকা সরাসরি যুদ্ধে না গেলেও যোগ্য জবাব তেহরানকে দেওয়া হবে। এবং তা অতি দ্রুতই দেওয়া হবে। এদিন সিং একটি নির্দিষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর নামও বলেছেন। তার বক্তব্য, যারা জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের নাম কাতাইব হেজবোল্লাহ। তারা যে আক্রমণ চালিয়েছে, তাতে ইরানের মদত স্পষ্ট। অ্যামেরিকার হাতে নির্দিষ্ট প্রমাণ আছে।
যদিও ইরান এই হামলায় তাদের যোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। জর্ডানও জানিয়েছে, ঘটনাটি তাদের এলাকায় হয়নি। সীমান্তের অন্য ধারে সিরিয়ার ভিতর ঘটেছে। অ্যামেরিকা অবশ্য নির্দিষ্ট করে জানিয়েছে, সীমান্তে জর্ডানের দিকে তাদের যে ঘাঁটি আছে সেখানেই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল।
মৃত সৈনিকের পরিচয়
সোমবার মৃত সৈনিকদের পরিচয়ও প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। অ্যামেরিকার রিসার্ভ ফোর্সের সেনাদের মৃত্যু হয়েছে রোববারের ড্রোন আক্রমণে। তাদের বেস জর্জিয়ায়। এর মধ্যে ২৪ বছরের এক নারী আছে। তার বাবা দেহ চিহ্নিত করেছেন। ওই নারী স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। এদিকে আহতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে বলে এদিন জানিয়েছে পেন্টাগন।