ইরানে আশ্রয় নিতে পারেন বাংলাদেশিরা
২৩ জুন ২০১৪রবিবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ‘মাইগ্রেশন ক্রাইসিস অবজারভেশন কমিটি'-র বৈঠক শেষে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী সেখানকার বাংলাদেশিদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘‘ইরানের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের৷ তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, যাতে বিপদে পড়লে বাংলাদেশিরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন৷'' তিনি বলেন, ‘‘ইরান সরকারের সঙ্গে আমাদের এরই মধ্যে কথা হয়েছে৷ তারা ইরাকের বাংলাদেশিদের সেখানে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত৷''
খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ‘‘আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে৷ প্রয়োজন হলে লিবিয়ার মতো ইরাক থেকেও আমরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনবো৷ আর এ জন্য আর্ন্তজাতিক অভিবাসী সংস্থার পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যাবে৷''
প্রবাসী কল্যাণ সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন বলেন, ‘‘বাগদাদ, নাজাফসহ মূল শহরগুলোতে কোনো সমস্যা নেই৷ মসুল ও তিরকিটের পরিস্থিতি খারাপ৷ তবে ইরাকে দু'পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হচ্ছে৷ বাংলাদেশিরা কারও লক্ষ্য নয়৷ কাজেই বাংলাদেশিদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই৷ তবুও আমরা ইরানের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছি৷ পরিস্থিতি খারাপ হলে বাংলাদেশিরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সেখানে যেতে পারবেন৷ তারপর প্রয়োজন হলে আমরা সেখান থেকে তাঁদের ফিরিয়ে আনবো৷''
এদিকে ইরাকের কিরকুক থেকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে যেসব বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিকদের অপহরণ করা হয়েছে, তাঁদের ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য এখনো সরকারের হাতে নেই৷ তবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, মসুল থেকে যে ৫০ জন বাংলাদেশিকে কুর্দিস্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ৩০ জন পালিয়ে গেছেন৷ মন্ত্রীর ধারণা, তাঁরা অন্য কোনো দেশে চলে গেছে৷ তাঁদের আর ইরাকে পাওয়া যাবে না৷
ওদিকে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ থেকে ইরাকে জনশক্তি রপ্তানি আপাতত স্থগিত রয়েছে৷ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে কোনো জনশক্তি পাঠানো হবে না বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে৷
সরকারি হিসেবে বাংলাদেশের ১৪,০০০ নাগরিক এখন ইরাকে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত৷ তাঁরা প্রধানত নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন৷ তবে বাস্তবে সেখানে ৩০,০০০-এর মতো বাংলাদেশি শ্রমিক আছেন৷
গত বছর বাংলাদেশ থেকে ইরাকে ৩০,০০০ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে৷ পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিক পাঠানোরও সব প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে৷