1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণমাধ্যমের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ

বেহজাদ কেশমিরিপুর/ শাহরাম আহাদি/আরবি২৩ মে ২০১৩

ইরানের সরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা তেহরানে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চারটি দৈনিক ও একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় এবং ১৫ সাংবাদিককে আটক করে৷ তাদের বিরুদ্ধে বিদেশি গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে৷

Journalisten Bildbeschreibung: Laut Reporter ohne Grenzen, ist Iran das grösste Gefängnis für Journalisten. Stichwörter: Iran, Frauen, Journalisten, Menschenrechte, Polizei, politische Gefangene Quelle: Shabestan.ir Lizenz: Frei Zugestellt von Mahmood Salehi
Journalisten im Iranছবি: Shabestan.ir

এই ঘটনার পর গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়৷ এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণেই এই ধরনের তত্পরতা নিতে হয়েছে, যা নাকি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে৷ ইরানের লেখকরা এই রকম অভিযোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷

এছাড়া দেশটিতে গত কয়েক বছরে সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত এক ডজন পত্রিকা এবং সাময়িকী নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ বিরোধীপক্ষ মনে করে, ২০১৩ সালের জুন মাসে সেখানে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইদানীং গণমাধ্যমের উপর এইভাবে কড়া হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগের অভিযোগ

গত মার্চ মাসে ইরানের গোয়েন্দাবিভাগীয় মন্ত্রী হায়দার মসলেহি জানান যে, দেশটির প্রায় ৬০০ সাংবাদিকের একটি দল বিদেশের সাথে যোগযোগ রাখছে৷ তাঁদের মধ্যে ১৫০ জন ইরানের ভেতরে কর্মরত৷ বাকিরা দেশের বাইরে থেকে যোগাযোগ রাখছে৷

এ প্রসঙ্গে ইরানের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এমন কিছু গণমাধ্যমকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যে গুলির ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ রয়েছে৷ এর মধ্যে রয়েছে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে এবং রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল (আরএফআই)৷

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টাররাও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারী নেটওয়ার্ক-এর সাথে যুক্ত৷ তারা সবাই মিলে ইসলাম এবং ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পবিত্র ব্যবস্থা'র' বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে৷

দেশটির এমন অভিযোগের প্রতিক্রিয়াও দ্রুত পাওয়া গিয়েছে৷ ডয়চে ভেলের সাথে সাক্ষাৎকারে প্যারিসে অবস্থিত রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স -এর আন্তর্জাতিক সচিবালয়ে ইরানি মুখপাত্র রেজা মইনি বলেন, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং অন্য কারো দ্বারা এটি নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না৷ মইনি আরও বলেন, ‘‘একটি রাষ্ট্র গোটা বিশ্বের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরির অভিযোগ তুলতে পারে না৷''

বই প্রকাশনার উপরও কড়া নিয়ন্ত্রণ

বিরোধীদের দাবি, ইরানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বরাবরই গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণের বেড়াজালে আবদ্ধ রাখছে এবং কারণ হিসাবে ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছে৷ এমনকি প্রকাশনা সংস্থাগুলোও এর শিকার৷

ইরানে কোনো বই প্রকাশ করতে হলে সংস্কৃতি ও ইসলামি নীতিমালা বিষয়ক বা সংক্ষেপে এরশাদ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র পেতে হবে৷ প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে, যে একজন লেখককে এই ছাড়পত্রের জন্য কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয় কিংবা অনুমোদিত বই প্রকাশের পর হঠাৎ আবার সেগুলোকে গুটিয়ে নিতে হয়৷

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের প্রথম সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এব্রাহিম ইয়াজদি৷ তিনি গত বছর এরশাদ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে তাঁর দুটি বই ইন্টারনেটে প্রকাশ করেন, কারণ তিনি বই দুটি প্রকাশের জন্য ছাড়পত্র পাননি৷ বই দুটির একটিতে তিনি ১৯৭৯ সালের বিপ্লব পরবর্তী সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী মেহদি বাজারগান সম্পর্কে লিখেছেন আর অপরটি ইরানে গত শতাব্দীর ৪০ এবং ৫০ এর দশকের ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কে লেখা৷

কড়া নিয়ন্ত্রণের শিকার শিশুতোষ বইগুলোও

ইরানে শুধু যে, রাজনৈতিক বই-পত্রের উপর কড়া নজরদারি করা হচ্ছে তা নয়, বরং নিয়ন্ত্রণের শিকার হচ্ছে শিশুদের বইগুলোও৷ শিশুতোষ বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা শাবাভিজ এর পরিচালক ফারিদে খালাতবারি ইতোমধ্যে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন৷ তিনি জানান, ফেরেশতাদের নিয়ে লেখা চার খণ্ডের একটি শিশুতোষ বইয়ের দুটি খণ্ড সেন্সরের শিকার হয়েছে৷ কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে ঐ দুই খণ্ডে ফেরেশতাদের ‘সঠিকভাবে' ফুটিয়ে তোলা হয়নি'৷

ইরানের সরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা তেহরানে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে চারটি দৈনিক ও একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় এবং ১৫ সাংবাদিককে আটক করেছবি: IRNA

বই-পত্র প্রকাশনায় এই ধরণের কড়া নিয়ন্ত্রণের ফলে সমাজে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে৷ আক্ষেপ করে বলেন, বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রোশাঙ্গারান-এর পরিচালক শাহলা লাহিদজি৷ তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে মূলত নারী বিষয়ক বই-পত্র প্রকাশ করা হয় বলে জানান লাহিদজি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘সংস্কৃতি বিষয়ক প্রকাশনাই প্রমাণ করে যে, সমাজের মস্তিষ্ক সক্রিয় রয়েছে৷ আর এই সব প্রকাশনা স্থবির হয়ে পড়লে মস্তিষ্ক অচল হয়ে পড়বে এবং সমাজও ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ