ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে যে বৃহস্পতিবার একটি মার্কিন ড্রোন ইরানের আকাশে ঢুকে পড়লে তাকে ভূপাতিত করা হয়৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের হোরমোজগান এলাকায় এই মার্কিন ড্রোনটিকে ইরানের রেভোলিউশানারি গার্ড বাহিনী ভূপতিত করেছে বলে জানিয়েছে আইআরএনএ৷
ভূপতিত ড্রোনটি ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক' সিরিজের বলে জানিয়েছে রেভোলিউশানারি গার্ডের সংবাদমাধ্যম ‘সেপা নিউজ‘৷ পরে, এই তথ্য ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা আইআরএনএ-ও ‘সেপা নিউজ‘-এর বরাত দিয়ে প্রকাশ করে৷
ইরানের পক্ষে এই দাবি ওঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই মার্কিন নৌসেনার ক্যাপ্টেন বিল আরবান জানান যে সেদিন কোনো মার্কিন ড্রোন বা বিমান ইরানের আকাশে প্রবেশ করেনি৷
কিন্তু এর আগে, গত সপ্তাহে এমনই আরেকটি মার্কিন ড্রোন ইরানে ভূপতিত করার ঘটনাকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে৷
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
চাপান-উতোরেমার্কিন-ইরানসম্পর্ক
ওয়াশিংটনের পক্ষে ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ানো হয়েছে সামরিক উপস্থিতি৷ এর সাথে, মার্কিন-বন্ধু দেশগুলির প্রতি ইরানের বৈরি আচরণ ও অন্যান্য কারণের ফলে টালমাটাল ওয়াশিংটন-তেহরান সম্পর্ক৷ এর প্রভাব পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক রাজনীতিতেও৷
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালীতে জাপানি ও নরওয়েজিয়ান ট্যাঙ্কার হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে ইরান কর্তৃপক্ষ৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের অন্যান্য মিত্র দেশগুলির মতো জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও এই ট্যাঙ্কার হামলার ঘটনায় দায়ী করেছেন ইরানকেই৷
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই অবস্থার প্রভাব পড়তে পারে ইরান-মার্কিন পরমাণু চুক্তির ওপরেও৷