ইরান এবং রাশিয়া মার্কিন ভোটে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করলেন মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন ভোটে হস্তক্ষেপ করছে ইরান এবং রাশিয়া। রীতিমতো প্রেস কনফারেন্স করে এ কথা জানালো অ্যামেরিকার গোয়েন্দা দফতর। তাদের দাবি, মার্কিন ভোটারদের গোপনীয় তথ্য ইরান এবং রাশিয়ার হাতে আছে। সেই তথ্য ব্যবহার করেই ভোটারদের একাংশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জাল ইমেল এবং মেসেজ পাঠিয়ে ভোটারদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
বুধবার আচমকাই সাংবাদিক বৈঠকের ডাক দেন মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান জন রাডক্লিফ। তাঁর বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁরা আশঙ্কা করছিলেন যে ইরান, চীন এবং রাশিয়া অ্যামেরিকার ভোটারদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করছে। এ বিষয়ে আগেও তাঁরা বিবৃতি দিয়েছিলেন। এ দিন গোয়েন্দা প্রধান জানান, রাশিয়া এবং ইরানের হাতে ভোটারদের গোপন তথ্য রয়েছে। ইমেল এবং মেসেজের মাধ্যমে তারা ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন। জাল ইমেল করা হচ্ছে 'প্রাউড বয়েজ'দের নামে। যেখানে বলা হচ্ছে, ট্রাম্পকে ভোট না দিলে আমরা তোমার বাড়ি পৌঁছে যাব। অর্থাৎ, এমন একটা বাতাবরণ তৈরির করা হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্পকে বর্ণবাদী বলে মনে হচ্ছে। এ ভাবেই অ্যামেরিকার ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের ভয় তৈরির চেষ্টা চলছে বলে গোয়েন্দা বিভাগের বক্তব্য।
কার্টুনিস্টদের চোখে মার্কিন নির্বাচন
আবারও ডনাল্ড ট্রাম্প, নাকি জো বাইডেন? কে হবেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট? বিশ্বের প্রখ্যাত কেরিক্যাচার শিল্পীদের ভাবনায় উঠে এসেছে নির্বাচনের বিভিন্ন দিক৷ আপনার কোন ছবি বা বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে?
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
যুদ্ধাবস্থা
জো বাইডেনের রানিংমেট কমলা হ্যারিস বলেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প নোংরা উপায়ে নির্বাচন জিততে চান৷ তাঁর মনোভাবটাই যেন প্রকাশ পেয়েছে জার্মান শিল্পী ইয়েনস ক্রিকের আঁকা ছবিতে৷ ট্রাম্প যে কাউকে পাত্তা দেন না সেটাই ফুটে উঠেছে এই ছবিতে৷
ছবি: Jens Kricke/toonpool.com
ট্রাম্পের জন্য প্রচারণা
ট্রাম্প তার প্রচারণায় বরাবরই নিজেকে সর্বোত্তম হিসেবে উল্লেখ করেন৷ যেমন: ‘‘আমার মতো বর্ণবাদবিরোধী মানুষ খুঁজে পাবে না৷’’ ‘‘আমার মতো কেউ নারীদের সম্মান করে না’’ এবং ‘‘যুক্তরাষ্ট্রে আমার মতো ভালো প্রেসিডেন্ট কখনোই আসবে না৷’’ কিন্তু মার্টিন এর্লের এই ছবিতে ট্রাম্পের ভিন্ন রূপ, তিনি ফটোগ্রাফারের প্রশংসা করছেন৷ কারণ কী? ছবিতে দেখে নিন৷
ছবি: Martin Erl/toonpool.com
টিভি বিতর্ক
এই ছবির মাধ্যমে চেক শিল্পী মারিয়ান কামেনস্কি বিশ্ববাসীর কাছে জানতে চাইছেন, মার্কিন নির্বাচনের বিতর্ক সংস্কৃতি কোথায় দাঁড়িয়েছে? এবারের বিতর্কে রাজনৈতিক বাক-বিতণ্ডার বদলে দুই পক্ষ একে অপরকে অপমান করতে ব্যস্ত ছিল৷
‘ঘুমন্ত জো’ এবং ভাঁড়
ট্রাম্প বাইডেনের উদ্দেশে বিতর্কে বলেছিলেন তিনি একজন ‘ঘুমন্ত বুড়ো মানুষ’ এবং ‘চরমপন্থি বামদের পাপেট’৷ অন্যদিকে বাইডেন ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছিলেন বর্ণবাদী, মিথ্যুক, ভাঁড় এবং অ্যামেরিকার সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট বলে৷ ইটালির শিল্পী ক্রিস্টিলের আঁকা ছবিতে বিতর্কের প্রতিচ্ছ্ববি৷
শিশুর মতো আচরণ
আফ্রিকার মানুষও ট্রাম্পের আচরণকে শিশুতোষ বলে মনে করে৷ বুরকিনা ফাসোর কার্টুনিস্ট ডামিয়েন গ্লেজ তার ছবির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন ট্রাম্প যে-কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চান, ঠিক যেন একটা শিশু৷
ট্রাম্পজিলা
প্রথম জাপানিজ গর্জিলা মুভি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে৷ যে পথ দিয়ে গর্জিলা যেতো তার ধ্বংসচিহ্ন রেখে যেতো৷ জাপানি কার্টুনিস্ট তাকেশি কিশিনো’র ছবিতে ট্রাম্পকে গর্জিলা হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
শত্রুর শত্রু যখন মিত্র
গণতন্ত্রকে ‘কাঁচকলা দেখানো’ রাষ্ট্রনেতাদের ট্রাম্পের ভীষণ পছন্দ৷ যেমন: পুটিন, এর্দোয়ান, কিম জং উন৷ ডাচ কার্টুনিস্ট জেরেড রোয়ার্ডসের কার্টুনে তাই তাদের ‘আলফা মেলস’ হিসেবে দেখানো হয়েছে৷
মেইল-ইন ভোটের পক্ষে না!
মেইলের মাধ্যমে ভোট হলে তা হবে জালিয়াতি, মেইল-ইন ভোটের বিরুদ্ধে এমনটাই বলেছেন ট্রাম্প৷ এমনকি পোস্টাল সার্ভিসের তহবিল কাটছাট করেছেন৷ করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বেশিরাগ ডেমোক্র্যাট এই পদ্ধতিতে ভোট দিতে আগ্রহী৷ মারিয়ান কামেনিস্কির আঁকা কার্টুনে ট্রাম্পের আচরণের বহিঃপ্রকাশ৷
ছবি: Waldemar Mandzel/Toonpool
চিরস্থায়ী রাজত্ব
অ্যামেরিকার সংবিধান অনুযায়ী কেনো কোনো প্রেসিডেন্ট তৃতীয় দফায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প৷ তিনি কি আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকতে চান? জার্মান কার্টুনিস্ট ক্রিস্টিয়ানে ফোলমানের আঁকা ছবিতে সেই সম্ভাবনা ফুটে উঠেছে৷
ছবি: Chrsitiane Pfohlmann/toonpool.com
9 ছবি1 | 9
সূত্র জানাচ্ছে, সম্প্রতি ফ্লোরিডা এবং পেনসিলভেনিয়া থেকে এ ধরনের বেশ কিছু ইমেল এবং মেসেজের তথ্য। পাওয়া গিয়েছে। তারপরেই গোয়েন্দা প্রধান দ্রুত সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। ভোটারদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, এই ধরনের বার্তায় যেন কেউ কান না দেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ইরান এবং রাশিয়ার হাতে তথ্য গেল কী করে? কী ভাবেই বা তারা অপারেট করছে?
নির্বাচনের বেশ কয়েক মাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্বয়ং রাশিয়া, ইরান এবং চীনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন। বলেছিলেন, মার্কিন ভোটে এই দেশগুলির স্পাইরা কাজ করছে। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট। তার পরেই ভোটের মুখে গোয়েন্দা প্রধানের এ হেন সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ক্রমশ কমছে দেখেই এ ধরনের ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু এই সমস্ত বলে ট্রাম্পের ভোট বাড়ানো যাবে না বলেই ডেমোক্র্যাটদের দাবি।