1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইলিশ গেছে ভারতে, দাম বেড়েছে বাংলাদেশে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হয়েছে। আর তাতেই বাংলাদেশের বাজারে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন সামনের মাসে  ইলিশ ধরা বন্ধ হবে। ফলে দাম বাড়ায় দ্বিগুণ প্রভাব পড়ছে। ইলিশচলে যাচ্ছে  সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ।

BG Pink Lady Food Photographer of the Year 2020 | Azim Khan Ronnie
ছবি: Azim Khan Ronnie

কোলকাতার বাজারে বৃহস্পতিবারই উঠেছে বাংলাদেশের ইলিশ। বুধবার রাতেই বেনাপোল দিয়ে ইলিশের চালান ভারতে যায়। হাওড়াসহ পাইকারি বাজার হয়ে সেই ইলিশ এখন কোলকাতার বাজারে। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত এই ইলিশ রপ্তানি চলবে। পূজা উপলক্ষে মোট দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হবে।

ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে। ৫২ জন রপ্তানিকারক এই রপ্তানির অনুমতি পেয়েছেন। প্রত্যেক রপ্তানিকারক ৪০ টন করে রপ্তানি করতে পারবেন। বেনাপোলের ইলিশ রপ্তানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট বিশ্বাস ট্রেডার্সের মালিক নুরুল আমিন বিশ্বাস জানান, "বুধবার রাত থেকে রপ্তানি শুরু হয়েছে। প্রথম চালানে ৭৮ টনের বেশি ইলিশ পাঠানো হয়েছে ভারতে। আজকেও (বৃহস্পতিবার) প্রায় একই পরিমাণ রপ্তানি হবে।” তারা ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি করতে পারবেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি কেজি ইলিশ তারা ১০ ডলারে রপ্তানি করছেন। তবে তিনি জানান, ইলিশ রপ্তানিকারকেরা ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যৌথভাবে ব্যবসা করেন। বাজারে যে দামে শেষ পর্যন্ত বিক্রি হবে তার ওপর তারা লাভ ভাগাভাগি করে নেবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রধানত হাওড়া, শিয়ালদা ও পাটিয়াপুকুর পাইকারি বাজারে ইলিশ যায়। সেখান থেকে কোলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন খুচরা বাজারে ইলিশ বিক্রি হয়।

এদিকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শুরু হওয়ার আগেই রপ্তানি হবে এই খবরেই বাংলাদেশে ইলিশের দাম বাড়া শুরু করে। আর রপ্তানি শুরুর পর দাম বাড়া অব্যাহত আছে।

গিয়াস উদ্দিন খান বিপ্লব

This browser does not support the audio element.

চাঁদপুরের ইলিশ ব্যবসায়ী খান এন্টারপ্রাইজের গিয়াস উদ্দিন খান বিপ্লব বলেন," প্রধানত তিন কারণে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির চাপ, জো না থাকায় মাছ কিছুটা কম ধরা পড়ছে আর ৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। আর  প্রতিবছর ভারতে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানি হলেও এবার হচ্ছে দুই হাজার টনের বেশি । ফলে চাপ বেশি পড়ছে।”

তিনি জানান," কিছুদিন আগেও এক কেজি ওজনের একটি মিঠা পানির পদ্মার ইলিশ বিক্রি হতো এক হাজার ১০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২৫০ টাকায়। গত বছর এই ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকায়। এর থেকে ছোট আকারে ৫০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হত সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা।”

তার মতে, অনলাইনে বেচাকেনার সুযোগ বাড়ার কারণেও ইলিশের দাম বাড়ছে। অনেক তরুণ উদ্যোক্তা এখন চাঁদপুরের ইলিশ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করায় চাহিদা বেড়েছে।

একই ধরনের তথ্য পাওয়া যায় দেশের অন্যান্য এলাকার ইলিশের আড়তে যোগাযোগ করে। দক্ষিণের বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার মৎস আড়তদার সমিতির সভাপতি এনামুল হোসেন বলেন," ইলিশের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ এখন আর বড় ইলিশ কিনে খেতে পারছেন না। তারা জাটকা সাইজের ছোট ইলিশ খেয়েই তৃপ্ত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ভারতে বড় আকারের ইলিশ রপ্তানি শুরু হওয়ায় দাম অনেক বেড়ে গেছে।”

তিনি জানান," পাইকারি এখন প্রতি মণ এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৪২ হাজার টাকা। আগে যা ছিলো ৩২ হাজার টাকা। প্রতি মনে ১০ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। আর ছোট আকারের ইলিশ প্রতি মণ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। আগে ছিলো ১৮ হাজার টাকা। সবচেয়ে বড় ইলিশ এখন প্রতি মন ৫৫ হাজার টাকা যা আগে বিক্রি হতো ৪২ হাজার টাকা।”

তিনি বলেন, রপ্তানির খবর পাওয়ার পর থেকেই ইলিশের দাম বাড়তে শুরু করে প্রতিদিনই বাড়ছে। এবছর ইলিশ কম বলা হলেও আগের বছরের তুলনায় কম নয়।

এদিকে ঢাকার কারওয়ান বাজারেও ইলিশের দাম বাড়তি। খুচরা বাজারে বড় আবারের ইলিশের সরবরাহ কমে গেছে বলে জানান ইলিশ ব্যবসায়ী জামাল হোসেন। তিনি মনে করেন, সরবরাহ দুই-একদিনে আরো কমে যাবে। তিনি জানান, গত দুই দিনে হঠাৎ করেই ইলিশের দাম কেজিতে গড়ে ২০০ টাকা বেড়ে গেছে।

২০১২ সালে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে আবার রপ্তানি শুরু হয়। তখন থেকে প্রতি বছর ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানি হতো। কিন্তু এবার রপ্তানি করা হচ্ছে চারগুণেরও বেশি। গত বছর বাংলাদেশে  পাঁচ লাখ  ৫০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরন করা হয়। বাংলাদেশে মোট মৎস উৎপাদনে ইলিশের পরিমান ১২.৫ ভাগ।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ