জানেন কি, ফেলে দেয়া পাঁচটি কম্পিউটারের বর্জ্য থেকে এক গ্রাম সোনা পাওয়া যায়? তাইতো ইলেক্ট্রিক বর্জ্য রিসাইকেল আজ একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে বছরে প্রায় দশ লাখ টন ইলেকট্রিক বর্জ্য তৈরি হয়৷ যেন সোনার খনি! যেমন কম্পিউটারের সার্কিট বোর্ডে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়৷ জার্মানির রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট ‘আওরুবিস' এর ম্যানেজার আন্দ্রেয়াস নোলটে বলেন, তামার চেয়ে সোনা ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী৷ সেকারণে কম্পিউটারের সার্কিট বোর্ডে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়েছে৷ উচ্চমানসম্পন্ন ও দ্রুত তথ্য প্রেরণ নিশ্চিত করতে এটা করা হয়েছে৷ প্লাগ কানেকটরগুলোর প্রযুক্তিগত মান ভালো হওয়া জরুরি, নইলে সময়ের সঙ্গে অক্সিডেশন হতে পারে৷ সোনা সেই অক্সিডেশন রুখে ডিভাইসের জীবনকাল পর্যন্ত সেরা কানেক্টিভিটির নিশ্চয়তা দেয়৷''
ল্যাপটপ, স্মার্টফোনসহ বেশিরভাগ ইলেক্ট্রিক পণ্য সোনা ছাড়া কাজ করে না৷
পাঁচটি কম্পিউটার থেকে এক গ্রাম সোনা পাওয়া যায়৷ শুনতে কম মনে হলেও আসলে এটা অনেক৷ কারণ এই পরিমাণ সোনা পেতে প্রায় দুই টন আকরিক খনন করতে হয়৷ এতে যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয় তা গাড়ি চালিয়ে পুরো পৃথিবী তিনবার ঘুরে আসার সমান৷
কিন্তু এভাবে বর্জ্য থেকে সোনা আহরণ কি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক? এবং এভাবে কী পরিবেশের ক্ষতি কমানো যায়? তা জানতে চলুন জার্মানির আওরুবিস রিসাইকেল প্ল্যান্ট থেকে ঘুরে আসি৷
বর্জ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রন আর প্লাস্টিক থাকে৷ প্রথমে সেগুলো আলাদা করা হয়৷ এরপর ১,৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ধাতুর মিশ্রন গলানো হয়৷
সোনা ভারী ধাতু হওয়ায় গলিত ধাতুর মিশ্রনে একেবারে নীচের দিকে চলে যায়৷ সেখানে রূপা আর তামাও থাকে৷ পরে হালকা ধাতু থেকে তাদের আলাদা করা হয়৷
গলিত মিশ্রন ঠাণ্ডা করার পর তামার প্লেট তৈরি হয় যেখানে সোনাও থাকে৷ নোলটে বলেন, ‘‘দুটি প্লেটের ওজন প্রায় ৮০০ কেজি৷ এগুলোতে প্রায় এক আউন্স বা ৩১.১ গ্রাম সোনা থাকে৷ যতটা সম্ভব কম ক্ষতি করে সোনা বের করে নেয়া আমাদের লক্ষ্য৷''
সেটা নিশ্চিত করতে অনেক রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার করে আওরুবিস৷ প্লেটগুলোকে বিভিন্ন অ্যাসিডের মধ্যে চুবানো হয়৷ এভাবে প্রথমে তামা, পরে রূপা ও সবশেষে সোনা আলাদা করা হয়৷
অবশ্য সোনা আহরণ প্রক্রিয়ার শেষ অংশটি ঠিক কীভাবে ঘটে তার ছবি তুলতে দেয়নি আওরুবিস৷ কারণ এটা তাদের কমার্শিয়াল সিক্রেট!
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশের উদ্যোগে সেন্ট মার্টিন সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচির ১০ বছর পূর্ণ হলো৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির ১০ বছর
৩৫তম ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ উপলক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কেওক্রাডং বাংলাদেশ৷ কোকা-কোলা বাংলাদেশের সহযোগিতায় এ বছর সেন্ট মার্টিনে এ পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির ১০ বছর পূর্তি হলো৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
পাঁচশ স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণ
১৮ ডিসেম্বর সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র সৈকতে পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে অংশ নেন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
ঢাকা থেকে অংশগ্রহণ
ঢাকা থেকে আগত স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা৷ ঢাকা থেকে যাওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন৷ এছাড়া কক্সবাজারের প্রায় ২০ জন সার্ফার এতে অংশ নেন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
কোস্ট গার্ডদের অংশগ্রহণ
সেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি এবারের কর্মসূচিতে অংশ নেন কোস্ট গার্ডের সদস্যরা৷ স্থানীয়দের বড় সংখ্যাটি আসে সেন্ট মার্টিন বিএন ইসলামিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের তরফ থেকে৷ অংশ নেয় এখানকার চার শতাধিক শিক্ষার্থী৷
এ বছর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্বেচ্ছাসেবকরা ১১৭০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য সৈকত থেকে অপসারণ করেন৷ এবারের সংগ্রহ করা প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল কোমল পানীয় ও খাবার পানির বোতল৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সামাজিক দূরত্ব
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অনুষ্ঠিত এবারের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পালিত হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শেষে সেন্ট মার্টিনের স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সংগঠকদের আহ্বান
সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের নিজেদের তৈরি প্লাস্টিক আবর্জনা মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৈকত পরিচ্ছনতা আন্দোলনের একজন সংগঠক৷ সেন্ট মার্টিনের চেয়ারম্যান নূর আহমদ বলেন, ‘‘প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ এখানে আসেন৷ তাদের ৮০ ভাগই অসচেতন৷ তাদের কীভাবে সচেতন করা যায়-সেটা আমাদের ভাবতে হবে৷’’