ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ডের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সে দেশের গণমাধ্যম৷ হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে ইসরায়েল৷
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান৷ সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তেহরানের প্রতিশোধের হুমকির মধ্যে এই ঘটনা ঘটলো৷ ইরানের ড্রোন ও মিসাইল ছোঁড়ার তথ্য জানিয়েছে দুই পক্ষই৷
ইসরায়েলের আকাশে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ হোয়াইট হাউস ইসরায়েলের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে৷
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে ইরানের ড্রোন দেশটির আকাশ সীমায় এসে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে৷ দেশটির চ্যানেল ১২ টেলিভিশন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ১০০ ড্রোন ও মিসাইল ছুঁড়েছে ইরান৷ এর মধ্যে সিরিয়া অথবা জর্ডানের উপরে বেশ কয়েকটিকে গুলি করে নামানো হয়েছে বলে দাবি করেছে চ্যানেলটি৷
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের হামলার জন্য প্রস্তুত৷ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সমর্থন তার দেশের উপর রয়েছে বলে জানান তিনি৷
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির রেভোল্যুশনারি গার্ডের সামরিক ইউনিটের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে ড্রোন ও মিসাইল ছোঁড়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে৷
এফএস/ এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)
ইরানের ‘অ্যাক্সিস অফ রেজিস্টেন্স’ কী?
৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করলে আশেপাশের কয়েকটি দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করে৷ এসব গোষ্ঠী ইরানের সহায়তাপুষ্ট বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ৷
ছবি: Hussein Malla/AP/picture alliance
‘অ্যাক্সিস অফ রেজিস্টেন্স’
এটি কয়েকটি ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠীর একটি নেটওয়ার্ক, যেটি দিয়ে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে তার শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে৷ ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের পর এই নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে৷ গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এই নেটওয়ার্কের কয়েকটি গোষ্ঠী ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা শুরু করেছে৷
ছবি: Morteza Nikoubazl/NurPhoto/picture alliance
ইসলামিক রেজিস্টেন্স ইন ইরাক
কয়েকটি সশস্ত্র কট্টরপন্থি শিয়া মুসলিম গোষ্ঠীর জোট এটি৷ ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর এই জোট সিরিয়া ও ইরাকে থাকা মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে দেড়শোর বেশি হামলা চালিয়েছে৷ ২৮ জানুয়ারি জর্ডান-সিরিয়া সীমান্তে অবস্থিত মার্কিন এক ঘাঁটিতে হামলার জন্য ইসলামিক রেজিস্টেন্স ইন ইরাককে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হন৷
ছবি: Planet Labs PBC/AP/dpa/picture alliance
ইরান সংশ্লিষ্টতা
গত কয়েকমাসে মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা করা ইরাকি সশস্ত্র শিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে আছে কাতাইব হেজবোল্লাহ ও নুজাবা গ্রুপ৷ ইরানের এলিট রেভুলুশনারি গার্ডসের সঙ্গে এরা ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত৷ তাদের কাছে ড্রোন, রকেট ও ব্যালিস্টিক মিসাইল আছে৷ এসব গ্রুপকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: dpa/picture alliance
হুতি
রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে হুতি৷ ৩১ অক্টোবর সানা থেকে ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও মিসাইল ছুড়ে যুদ্ধে প্রবেশ করে তারা৷ এরপর নভেম্বরে লোহিত সাগর দিয়ে যাওয়া ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা ইসরায়েলের বন্দরের দিকে যাওয়া জাহাজে হামলা শুরু করে হুতিরা৷ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস হুতিদের মিসাইল ও ড্রোন হামলার পরিকল্পনায় সহায়তা করছে ইরানের রেভুলুশনারি গার্ড৷ ইরান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে৷
ছবি: Houthi Military Media/REUTERS
হেজবোল্লাহ
৮ অক্টোবর থেকে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে প্রায় প্রতিদিন হামলা করছে লেবাননের হেজবোল্লাহ গ্রুপ৷ ১৯৮২ সালে ইরানের রেভুলুশনারি গার্ড হেজবোল্লাহ প্রতিষ্ঠা করে৷ এরপর থেকে এটি ঐ অঞ্চলে তেহরান সমর্থিত অন্যান্য গোষ্ঠীর জন্য মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে৷ লেবানন রাষ্ট্রের চেয়েও হেজবোল্লাহ শক্তিশালী বলে মনে করা হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র হেজবোল্লাহকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে৷