ইসরায়েলি পেগাসাস দিয়ে ভারতে আড়িপাতা কেলেঙ্কারি
১৯ জুলাই ২০২১বাদ যাননি কেউই। কেন্দ্রীয় দুই মন্ত্রী, তিনজন প্রধান বিরোধী নেতা-নেত্রী, একজন সাংবাধানিক পদাধিকারী, ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক, বহু ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, নিরাপত্তা সংস্থার বর্তমান ও সাবেক প্রধান, সমাজকর্মী, আমলা, আইনজীবীর ফোন ইসরায়েলি সফটওয়ার পেগাসাস দিয়ে আড়িপাতা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ১৭টি দেশের সংবাদমাধ্যম মিলে 'পেগাসাস প্রজেক্ট' নামে একটি তদন্ত করছিল। সেই তদন্ত থেকেই ভারতের এতজনের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছে।
এই রিপোর্টের কথা সামনে আসার পরই হইচই শুরু হয়েছে। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। কারণ, ইসরায়েলি সংস্থা জানিয়েছে, তারা পেগাসাস সফটওয়ার কেবলমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছেই বিক্রি করেছে। কিন্তু মোদী সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে দেশে আইন আছে, নিয়ম আছে। সেই নিয়ম মেনে জাতীয় স্বার্থে কিছু ফোনে আড়িপাতা হয়। তবে তার জন্য আগে থেকে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া হয়। সরকার দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় দায়বদ্ধ বলেও জানানো হয়েছে।
২০১৯ সালে হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছিল, চারটি মহাদেশের এক হাজার ৪০০ জনের মোবাইল পেগাসাসের মাধ্যমে হ্যাক করা হয়েছে। তার মধ্যে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, প্রফুল্ল প্যাটেল, ভীমা-কোরেগাঁও মামলার সঙ্গে যুক্ত একাধিক সমাজকর্মী, আইনজীবী ও সাংবাদিক। তখন হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, ভারতে ২০ জনের ফোনে আড়িপাতা হয়েছিল। সেসময় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছিলেন, সরকার আড়িপাতার কোনো নির্দেশ দেয়নি।
পেগাসাস স্পাইওয়্যার কী
ইসরায়েলের সংস্থা এনএসও এই সফটওয়্যার তৈরি করেছে, যা দিয়ে মোবাইলে আড়িপাতা যায়। ফোনের কথাবার্তা, হোয়াটসঅ্যাপের চ্যাট, ছবি, কী তথ্য আছে সবই জানা যায়। মোবাইল যিনি ব্যবহার করছেন তিনি কিছুই জানতে পারেন না। সাধারণত ফোনে একটি ওয়েবসাইটের লিংক পাঠানো হয়। সেই লিংকে ক্লিক করলেই পেগাসাস ডাউনলোড হয়ে যায়। হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস বা ভিডিও কল করেও পেগাসাস যে কোনো ফোনে ইনস্টল করা যায়।
এরপর কী
কাদের ফোনে আড়িপাতা হচ্ছিল, সেই নাম আর দিন কয়েকের মধ্যেই সামনে আসতে পারে। সংসদের বর্ষা অধিবেশন সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। সেখানে বিরোধীরা ফোনে আড়িপাতার বিষয়টি তুলবেন বলে ঠিক করেছেন। তারা সরকারকে এই নিয়ে কোণঠাসা করতে চান। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, সরকারের জবাবও তৈরি।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)