ইসরায়েলের কাছ থেকে চারশ কোটি ইউরো দিয়ে অ্যারো-৩ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কিনছে জার্মানি। অনুমোদন করলো পার্লামেন্ট।
বিজ্ঞাপন
দূরপাল্লার অ্যারো-৩ সিস্টেম ব্যালেস্টিক মিসাইলকেও ধ্বংস করে দিতে পারে, সেটাও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরে। বার্লিনের হাতে এই ডিফেন্স সিস্টেম এলে শুধু যে জার্মানি উপকৃত হবে তাই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলিও লাভবান হবে। তারাও সুরক্ষা পাবে।
বুধবার জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের বাজেট কমিটি প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলকে যে অর্থ দিতে হবে তা অনুমোদন করেছে। প্রাথমিকভাবে জার্মানি ৫৬ কোটি ইউরো দেবে এই ডিফেন্স সিস্টেম কেনার জন্য। কমিটির এক সদস্যকে উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে জার্মানির একটি সংবাদপত্র।
বহুবছর ধরে জার্মানি তার সামরিক বাহিনীর জন্য যথেষ্ট খরচ করেনি। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন দেখিয়ে দিয়েছে, ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় কতটা খামতি আছে। বিশেষ করে মিসাইল ও ড্রোন হামলা হলে উপযুক্ত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অনেক দেশের কাছেই নেই।
জার্মানিতে অস্ত্র কোথায় যায়, কোথা থেকে আসে
সেনাবাহিনীর অস্ত্রাগার থেকে খোয়া গেছে বিপুল পরিমাণ গুলি ও বিস্ফেরক৷ অন্যদিকে গত তিন বছরে প্রচুর অবৈধ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ৷কোথায় গেল গুলি, বিস্ফোরক; পুলিশের উদ্ধার করা অস্ত্রের উৎসই বা কী?
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Seidel
সেনাবাহিনীর গুলি ও বিস্ফোরক চুরি!
জার্মানির সেনাবাহিনীর কমান্ডো ইউনিট কেএসকে-র অস্ত্রাগার থেকে ৬০ হাজার রাউন্ড গুলি এবং অন্তত ৬২ কিলোগ্রাম ওজনের বিস্ফোরক লাপাত্তা! গত মাসে খোদ জার্মান সেনাবাহিনীই জানিয়েছে এই তথ্য৷
ছবি: picture-alliance/Chromorange/bilderbox
কোথায়, কার কাছে গেল?
এত বিপুল পরিমাণ গুলি ও বিস্ফোরক কোথায়, কার হাতে গেল এই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে জার্মানিতে৷ সম্প্রতি কেএসকে-র সঙ্গে চরম ডানপন্থিদের সম্পৃক্ততার খবর জার্মানিতে বেশ সাড়া জাগায়৷এ কারণে কেএসকে-র কিছু সেনাকে বরখাস্ত করেছে জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Gollnow
চরম ডানপন্থিদের উত্থান
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে চরম ডানপন্থিদের সক্রিয়তা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে৷ গত জুলাই মাসে এক প্রতিবেদনে জার্মানির অভ্যন্তরীন গোয়েন্দা সংস্থা বিএফভিও-ও এমন তথ্যই তুলে ধরেছে৷ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে জার্মানিতে ৩২ হাজার ৮০ জন সক্রিয় চরম ডানপন্থিকে চিহ্নিত করে বিএফভি৷ ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ছিল ২৪ হাজার ১০০৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Pfeiffer
চরম ডানপন্থিদের হামলা
গত বছর হানাউ এবং হালেতে হামলা চালায় চরম ডানপন্থি বন্দুকধারী৷
সে বছর বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ ভাল্টার ল্যুবক৷ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আটক দুই চরম ডানপন্থির বিচার সম্প্রতি ফ্রাঙ্কফুর্টে শুরু হয়েছে৷
ছবি: AFP/J. McDougall
বাজেয়াপ্ত অস্ত্রের বিষয়ে অনেক তথ্য অজানা
এদিকে ২০১৭ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে জার্মানির বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধ অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ৷ অস্ত্রগুলোর বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন জার্মানির বাম দলের সাংসদ মার্টিনা রেনার৷ অস্ত্রগুলো কোনো চরম ডানপন্থিদের কাছে পাওয়া গিয়েছিল কিনা, সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা তা জানতে কয়টি তদন্ত হয়েছে - এমন ২০টি প্রশ্নের ১৪টিরই জবাব পাননি৷ সংসদে জানানো হয়েছে, এসব বিষয়ে সরকার এখনো অন্ধকারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Seidel
5 ছবি1 | 5
ইউক্রেন যুদ্ধের পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস একশ কোটি ইউরোর একটা তহবিল গঠন করেন। সেখান থেকেই অ্যারো-৩ মিসাইল ব্যবস্থার প্রাথমিক খরচ জোগানো হবে।
বার্লিন চায়, অ্যারো-৩ কেনা নিয়ে সরাসরি ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে। কিন্তু পরে যদি কোনো কারণে এই চুক্তি বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে জার্মানি আর অগ্রিম অর্থ ফেরত পাবে না বলে সংবাদপত্র জানিয়েছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে এই বছরের শেষে চুক্তি হবে। আর বার্লিনের আশা, ২০২৫ সালের শেষদিকে তারা অ্যারো-৩ সিস্টেম হাতে পেয়ে যাবে। অগ্রিম অর্থ নিয়ে ইসরায়েল উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করবে।
বুধবারই সাংবাদিক সম্মেলনে শলৎস বলেছেন, জার্মানি একটা বড় প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করছে, যা শুধু একা জার্মানির সঙ্গে যুক্ত নয়। শলৎসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই ক্ষেত্রে অগ্রিম অর্থ দেয়া কি ঝুঁকিপূর্ণ নয়? শলৎসের জবাব, ''আমরা ছোট ছোট পদক্ষেপ নিয়ে এগোচ্ছি। আমি মনে করি, সবকিছু মসৃনভাবে চলবে।''