হলিউডি ছবির মতো পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলের জেল ভেঙেছেন। তাদের খুঁজতে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে ইসরায়েলের প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েলের গিলবোয়া জেল বিশ্বের হাই সিকিওরিটি জেলগুলির অন্যতম। গত কয়েক দশকে বহু ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারীকে এই জেলে বন্দি করা হয়েছে। সেই জেল ভেঙে পালিয়েছেন পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দি। রীতিমতো সুড়ঙ্গ কেটে তারা জেল থেকে পালিয়েছেন। ইসরায়েলের পুলিশ, সেনা এবং গোয়েন্দারা ওই বন্দির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের খবর মেলেনি। অনেকেই মনে করছেন তারা ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে আশ্রয় নিয়েছেন।
পশ্চিম তীরে বসতি উচ্ছেদ ও লেবাননে বিমান হামলা
বৃহস্পতিবার দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনের কাছে ফিলিস্তিনিদের বসতি গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল৷ এসময় সেখানে সংঘাতের ঘটনা ঘটে৷ এদিকে একই দিনে লেবানন থেকে ছোঁড়া রকেটের জবাবে সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল৷ বিস্তারিত ছবিঘরে৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
গুড়িয়ে দেয়া ভবন
ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরে হেবরনের কাছে অবস্থিত ফিলিস্তিনিদের বসতি ভারি যন্ত্র দিয়ে গুড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
পুলিশি অবস্থান
এসময় নিরাপত্তার জন্য সেখানে মোতায়েন করা হয় সীমান্ত পুলিশের সদস্যদের৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
আটক
এক পর্যায়ে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়৷ ছবিতে ইসরায়েলের বাহিনীর হাতে আটক এক ফিলিস্তিনিকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
অসহায়ত্ব
বসতি উচ্ছেদ ও তার জের ধরে চলছিল সংঘাত৷ ছবিতে ফিলিস্তিনের এক নারীকে ইসরায়েলে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতিতে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
সাউন্ড গ্রেনেড
সংঘাত চলাকালে ফিলিস্তিনিদের দিকে ইসরায়েলের সীমান্ত পুলিশের এক সদস্যকে সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়তে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
টিয়ার গ্যাস
বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
সতর্ক অবস্থান
সংঘাত চলাকালে ফিলিস্তিনিদের দিকে অস্ত্র তাক করে সতর্ক অবস্থানে ইসরায়েলের দুই পুলিশ সদস্য৷
ছবি: Mussa Issa Qawasma/REUTERS
লেবানন থেকে রকেট
বুধবার প্রতিবেশি লেবানন থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে৷ দুইটি রকেটই উন্মুক্ত স্থানে পড়ে৷ হামলার দায় স্বীকার করেনি কোন পক্ষ৷ তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে রকেট ছোঁড়া হয়েছিল ইরান সমর্থিত হেজবুল্লাহ গেরিলাদের নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ লেবানন থেকে৷
ছবি: Karamallah Daher/REUTERS
ইসরায়েলের জবাব
এই ঘটনার পর প্রথমে ভূমি থেকে লেবাননে গোলা ছোঁড়ে ইসরায়েল৷ এরপর ‘রকেট হামলার স্থান ও সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা’ চালানো হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী৷ ছবিতে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর গাড়ি বহর দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aziz Taher/REUTERS
লেবাননের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় কোন হতাহত হয়নি বলে দাবি করেছে হেজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত আল-মানার টেলিভিশন৷ লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এই হামলাকে তার দেশের প্রতি ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব হিসেবে অভিহিত করেছেন৷ তিনি একে লেবাননের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতি সরাসরি হুমকি এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের রেজ্যুলেশনের বরখেলাপ বলেও টুইটে উল্লেখ করেন৷
ছবি: Aziz Taher/REUTERS
10 ছবি1 | 10
সোমবারই ওই ফিলিস্তিনি বন্দিদের জেল ভাঙার খবর সামনে আসে। স্বয়ং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ওই ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেছেন। ঘটনাটিকে অনভিপ্রেত বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রতি মুহূর্তের আপডেট তাকে দেওয়া হচ্ছে।
বন্দিদের খোঁজে কুকুরও নামানো হয়েছে। ওয়েস্ট ব্যআঙ্কের উপর সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ঘুরছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাদের খবর পাওয়া যায়নি।
গিলবোয়া জেল ইসরায়েলের কুখ্যাত জেলগুলির অন্যতম। ওই জেল ভাঙা যায়, এমন কল্পনাই কেউ করতে পারেন না বলে স্থানীয় মানুষের দাবি। সেই নিরাপত্তা ভেঙে পালিয়েছেন পাঁচ বন্দি। জেল সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, একটি সিঙ্কের তলা থেকে সুড়ঙ্গ কাটা হয়েছিল। যা জোড়া হয়েছিল জেলের বাইরের গর্তের সঙ্গে। ভিতরে এবং বাইরে দীর্ঘদিন ধরে ওই সুড়ঙ্গ কাটার কাজ হয়েছে বলে জেল কর্তৃপক্ষের দাবি। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি টেরই পাননি। জেলের বাইরে সেই সুড়ঙ্গপথের ছবি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে।
যারা পালিয়েছেন, তাদের প্রত্যেককেই সন্ত্রাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যারা পালিয়েছsন, তাদের বয়স ২৬ থেকে ৪৯ এর মধ্যে। এর মধ্যে একজন আল-আকসা ব্রিগেডের সদস্য ।
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে একাধিক মুসলিম সংগঠন পলাতক বন্দিদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর মুখপাত্র দাউদ সেহাব বলেছেন, ''অসাধারণ সাহসের পরিচয় দিয়েছেন ওই পাঁচ বন্দি। ইসরায়েলের গর্ব চূর্ণ হলো। তাদের জেলও যে ভাঙা যায়, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।''
হামাসও ওই বন্দিদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেছে, এর ফলে স্বাধীনতার আন্দোলন আরো শক্তিশালী হবে।